চুরির অভিযোগ ঘিরে ‘রহস্য’ জলপাইগুড়িতে। রবিবার সকালে মোহিতনগরে পাশাপাশি দু’টি হাই স্কুলে চুরির অভিযোগ উঠেছে। দরজার তালা ভাঙা টের পেয়ে দুই স্কুলের কর্তৃপক্ষ ভেতরে ঢুকে দেখেন, প্রধান শিক্ষকের ঘরের সব আলমারি তছনছ করা। আলমারির তালা ভেঙে এলোমেলো করা হয়েছে সব নথি। অথচ টেবিলে ল্যাপটপ থেকে প্রিন্টার-সহ দামী দামী জিনিস চুরি হয়নি। অভিযোগ, দু’টি স্কুল মিলিয়ে ভাঙা হয়েছে ২১টি আলমারি। একটি স্কুলের ড্রয়ারে থাকা নগদ কিছু টাকা খোয়া গিয়েছে বলে দাবি। আলমারি ভেঙে নথি লণ্ডভণ্ড করা হয়েছে।
কিন্তু চুরি গেল কী? রবিবার রাত পর্যন্ত দুই স্কুল কর্তৃপক্ষই দাবি করেছেন, সব গুরুত্বপূর্ণ নথিই রয়েছে। একটি স্কুলের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় দুই দুষ্কৃতীকেও দেখা গিয়েছে। তাদের পোশাক ধোপদুরস্ত। সব মিলিয়ে চুরি ঘিরে স্কুল কর্তৃপক্ষের মনে তৈরি হয়েছে ধন্দ। যদিও পুলিশের দাবি, বিষয়টিতে কোনও রহস্য নেই। টাকার জন্যই চুরি করতে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। টাকা রাখা আছে ভেবেই একের পর এক আলমারি ভাঙা হয়েছে। মোহিতনগর হাইস্কুলে নৈশপ্রহরীও ছিলেন। দুষ্কৃতীরা স্কুলে ঢুকল কী ভাবে, নৈশপ্রহরী টের পাননি বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।
জলপাইগুড়ির শহরতলির মোহিতনগর কলোনি তারাপ্রসাদ উচ্চ বিদ্যালয় এবং মোহিতনগর কলোনি তারাপ্রসাদ বালিকা বিদ্যালয়ে চুরির অভিযোগ। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের প্রশ্ন, কোনও জরুরি নথি হাতানোর উদ্দেশ্যেই কী চুরি হয়েছে? এসএসসি-র ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল হওয়ার পরে রাজ্য জুড়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নানা বিতর্ক চলছে। প্রধান শিক্ষকের ঘরের যে সব আলমারি তছনছ করা হয়েছে, সেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নানা তথ্যের নথি থাকে। স্কুলের প্রশাসনিক কাজেরও ফাইল থাকে।
মোহিতনগর তারাপ্রসাদ কলোনি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা কোয়েলী রায় বর্মণ বলেন, ‘‘কোন নথি খোয়া গেল সেটাই তো বুঝতে পারছি না। পরপর ১২টি আলমারি ভাঙা হয়েছে। সব মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। খুবই বিস্ময়কর ঘটনা। ল্যাপটপ নেয়নি। পুলিশকে সব জানিয়েছি।” মোহিতনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় দে সরকার জানিয়েছেন, তাঁদের স্কুলের দশটি আলমারি ভাঙা হয়েছে।
জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি সঞ্জয় দত্ত বলেন,
“সিসি ক্যামেরায় ছবি পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত হচ্ছে। নৈশপ্রহরী ছিলেন। তা-ও দেখা হচ্ছে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)