Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Mihir Goswami

TMC and BJP: বিজেপি-র মিহিরের বাড়িতে তৃণমূল নেতা, দিনহাটা উপনির্বাচনের আগে সাক্ষাৎ ঘিরে জল্পনা

মিহিরের ‘অবারিত দ্বার’ নিয়েই জল্পনা দানা বেঁধেছে। নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়কের উত্তর, ‘‘উনি (গিরীন্দ্রনাথ) কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য তোলেননি।’’

মিহির গোস্বামীর বাড়িতে গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ।

মিহির গোস্বামীর বাড়িতে গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২১ ২০:২৫
Share: Save:

আচমকা নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীর বাড়িতে তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ। দিনহাটায় উপনির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর। তার আগে বুধবার বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে তৃণমূল নেতার সাক্ষাৎ ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে। তৃণমূলে থাকাকালীন গিরীন্দ্রের সতীর্থ ছিলেন মিহির। দু’জনেরই দাবি, এই সাক্ষাৎ ‘সৌজন্যমূলক’।

বুধবার বিকালে কোচবিহার শহরের তেঁতুলতলা এলাকায় মিহিরের বাড়িতে যান গিরীন্দ্রনাথ। তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি আদতে মাথাভাঙার বাসিন্দা। তবে প্রতি দিনই তিনি যান কোচবিহার শহরের পাটাকুড়ায় অবস্থিত তৃণমূলের দলীয় দফতরে। মিহিরের দাবি, বুধবার তিনি কলকাতা থেকে ফিরেছেন। এই সময়েই তাঁকে ফোন করে সাক্ষাৎ করার সময় চেয়ে নেন গিরীন্দ্রনাথ। মিহির কলকাতা থেকে ফেরার কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাঁর বাড়িতে উপস্থিত হন গিরীন্দ্রনাথ। তাঁদের মধ্যে দীর্ঘ ক্ষণ রুদ্ধদ্বার আলোচনাও চলে।

দিনহাটায় উপনির্বাচনের দিন ক্ষণ ঘোষণা হয়েছে। এর মধ্যেই তৃণমূল এবং বিজেপি রাজ্যের দুই যুযুধান শিবিরের দুই নেতার হঠাৎ সাক্ষাৎ নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। ঠিক যে জল্পনা শুরু হয়েছে বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যাওয়া সব্যসাচী দত্তের সাম্প্রতিক মন্তব্য নিয়ে। লখিমপুর খেরিতে কৃষক মৃত্যু নিয়ে বুধবার সব্যসাচী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘কার গাড়ি সেটা বড় কথা নয়, যে ঘটনা ভাইরাল হয়েছে টিভিতে তা খুব দুঃখজনক এবং মর্মান্তিক ঘটনা। যে বা যারা এটা করে থাকুক তাদের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি এবং তাদের একটাই শাস্তি হওয়া উচিত ফাঁসি।’’ সব্যসাচী বর্তমানে বিজেপি-র রাজ্য সম্পাদক পদে। আবার খড়দহ উপনির্বাচনের জন্য তৈরি কমিটিতে ইনচার্জ হিসাবেও দায়িত্বে তিনি। সেই সব্যসাচীর এ হেন মন্তব্যের পিছনে নতুন সমীকরণ দেখছেন অনেকেই। এই আবহে মিহির এবং গিরীন্দ্রের সাক্ষাৎ নিয়েও একই রকম ভাবে জল্পনা শুরু হয়েছে। যদিও সেই জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে মিহিরের মন্তব্য, ‘‘গিরীন্দ্রনাথ বর্মণের সঙ্গে আমার বহু দিনের সম্পর্ক। বহু বছর উনি আমার সহকর্মী ছিলেন। রাজনীতির ঊর্ধ্বে সামাজিকতা। উনি হঠাৎ করে ফোন করে বললেন, ‘আজ মাতৃপক্ষের সূচনা। আমি আপনার ওখানে যেতে চাই। শুভেচ্ছা জানাতে চাই।’ আমিও বললাম, ‘আমার অবারিত দ্বার। তুমি যখন ইচ্ছা আসতে পার।’ গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ এসেছেন। আমি আপ্লুত।’’

মিহিরের এই ‘অবারিত দ্বার’ নিয়েই জল্পনা দানা বেঁধেছে। যদিও নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়কের উত্তর, ‘‘উনি (গিরীন্দ্রনাথ) কোনও রাজনৈতিক বক্তব্য তোলেননি। সেই বক্তব্য তোলার জায়গাও নেই। দু’জনের মধ্যে শুভেচ্ছা বিনিময় হয়েছে।’’ তিনি আরও বলছেন, ‘‘আফগানিস্তান দেখার পর, সনাতনী ধর্মে বিশ্বাসী মানুষ যাঁরা তাঁরা অন্য কিছু ভাববেন না। পশ্চিমবঙ্গে তোষণের রাজনীতিতে বাংলার সর্বনাশ হবে। নরেন্দ্র মোদীই দেশের সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের রক্ষা করবেন। অন্য কোনও প্রশ্ন আসেই না।’’

দিনহাটা উপনির্বাচনের আগে এই পর্বের এক চরিত্র মিহির। অপর চরিত্র গিরীন্দ্রনাথ বলছেন, ‘‘আজ দেবীপক্ষের সূচনা। মিহিরদা আমার শ্রদ্ধেয়। ছোট ভাই হিসাবে ওঁর পরামর্শ নিতে এসেছি। এটা আমার পাথেয় হবে। তবে দলবদল নিয়ে আলোচনা হয়নি। এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। মিহিরদা বড় মাপের নেতা ছিলেন।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘ওঁকে (মিহির) দলে টানতে হলে উঁচু স্তরের নেতৃত্বকে কথা বলতে হবে। সেটা আমার দ্বারা হবে না।’’

এই সাক্ষাৎ-পর্ব নিয়ে বিজেপি-র জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা রায় বলেন, ‘‘মিহির গোস্বামীর সঙ্গে গিরীন্দ্রনাথ বর্মনের দীর্ঘ দিনের সম্পর্ক। এটা সৌজন্য সাক্ষাৎ। আমরা আলাদা আলাদা রাজনৈতিক দলের মতাদর্শে বিশ্বাস করতে পারি। কিন্তু আমরা ভারতের সংস্কৃতি ভুলে যাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mihir Goswami TMC BJP Dinhata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE