Advertisement
E-Paper

মন্ত্রীর দফতর থেকে ত্রাণ পাঠাল তৃণমূলই, বিতর্ক শিলিগুড়িতে

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের দফতর থেকে ধস-বিধ্বস্ত মিরিকে ত্রাণ পাঠাল দার্জিলিং জেলা তৃণমূল। মঙ্গলবার সকালে ঘটেছে এমনই ঘটনা। এদিন দফতরের সামনে থেকে দলীয় পতাকা নেড়ে ত্রাণের গাড়িটি রওনা করান মন্ত্রী। কিন্তু দলীয় কার্যালয় থেকে না পাঠিয়ে সরকারি অফিস ব্যবহার করে ত্রাণ পাঠানোয় প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরে ও বাইরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৫ ০২:২৮
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনে মিরিক যাওয়ার জন্য তৈরি বিতর্কিত ত্রাণ। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সামনে মিরিক যাওয়ার জন্য তৈরি বিতর্কিত ত্রাণ। মঙ্গলবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের দফতর থেকে ধস-বিধ্বস্ত মিরিকে ত্রাণ পাঠাল দার্জিলিং জেলা তৃণমূল। মঙ্গলবার সকালে ঘটেছে এমনই ঘটনা। এদিন দফতরের সামনে থেকে দলীয় পতাকা নেড়ে ত্রাণের গাড়িটি রওনা করান মন্ত্রী।

কিন্তু দলীয় কার্যালয় থেকে না পাঠিয়ে সরকারি অফিস ব্যবহার করে ত্রাণ পাঠানোয় প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরে ও বাইরে। জেলায় দলের শীর্ষ নেতাদের একাংশই এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন সব ক’টি প্রধান রাজনৈতিক দলই। বিরোধীদের মত, দলীয় ত্রাণ পাঠানো উচিত ছিল দলের কার্যালয় থেকেই।

মন্ত্রী অবশ্য যুক্তি দিয়েছেন, দলীয় কার্যালয়ে জায়গার অভাব থাকাতেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের গ্যারেজ গুদাম হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে আমাদের জেলা কার্যালয়ে জায়গা নেই। এখানে জায়গার অভাব নেই। তাই বিভিন্ন সংগঠনের দেওয়া ত্রাণ এখানে রাখা হয়েছিল। এ ছাড়া সরকারি ভাবে এর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।’’ তবে ত্রাণ পাঠানোর সময়ে সেখানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর সরকার নিযুক্ত ব্যক্তিগত সচিবও। ফলে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।

এ দিন জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে মিরিক যান পাহাড় ও সমতলের কয়েকজন তৃণমূল নেতা। শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে সে কারণে উপস্থিত থাকার জন্য সংবাদমাধ্যমকে ‘মেসেজ’ পাঠান মন্ত্রীর ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। সেখানেও তৃণমূলের পক্ষ থেকে ত্রাণ পাঠানোর কোনও কথা লেখা ছিল না। এতেই ক্ষুব্ধ দলের জেলার অন্যতম শীর্ষ নেতাদের একাংশ। এমনই এক নেতা বলেন, ‘‘দলীয় কর্মসূচি দলের কার্যালয়ে করাটাই বাঞ্ছনীয়। এ ভাবে দুটোকে মিলিয়ে ফেললে জনসাধারণের মধ্যে ভুল বার্তা যেতে পারে।’’ আরও কয়েকজন নেতাও একই অভিযোগ করেন।

দার্জিলিং জেলা সিপিএমের সম্পাদক জীবেশ সরকার অভিযোগ করেন, ‘‘ত্রাণ নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। কিন্তু সরকার ও দলকে বারবার যেভাবে গুলিয়ে ফেলছে তৃণমূল, সেটা ঠিক নয়।’’ উদাহরণ দিয়ে তিনি জানান, ‘‘বুধবার সিপিএমের পক্ষ থেকেও ত্রাণ পাঠানো হবে। তা বলে তা পুরসভা থেকে তা পাঠানো কী যুক্তিযুক্ত হবে?’’

ক্ষুব্ধ দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শঙ্কর মালাকারও। তিনি দাবি করেন, ‘‘তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব বারবার অধিকার লঙ্ঘন করছে। এর আগেও দলীয় নেত্রী বারবার প্রশাসনিক দফতর থেকে দলবদল করিয়েছেন। স্থানীয় মন্ত্রী যে তাঁকেই অনুসরণ করবেন এতে আশ্চর্যের কিছু নেই।’’ বিজেপি জেলা সভাপতি রথীন বসু অভিযোগ করেন, ‘‘সরকারে আসার পর থেকেই প্রশাসনিক সুবিধা কাজে লাগিয়ে তৃণমূল দলীয় কাজ করছে। এটা নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। শীঘ্রই মানুষ এর জবাব দেবেন।’’

সব মিলিয়ে অস্বস্তিতে দল। এদিন শিলিগুড়ি সুপারি ব্যবসায়ী সমিতি, হকার্স কর্নার ব্যবসায়ী সমিতি ও রেলগেট ব্যবসায়ী সমিতির সাহায্যে কিছু ত্রাণ সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান তৃণমূল জেলা সভাপতি। বাকিটা দলের বিভিন্ন নেতারা ব্যক্তিগত আয় থেকে সংগ্রহ করেছেন। চাল, ডাল, লবণ, তেল, ত্রিপল সহ আরও কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। পরে আরও কিছু ত্রাণ পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে।

siliguri trinamool TMC gautam deb CPM darjeeling
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy