Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Cooch Behar

আদালতের নির্দেশে উৎফুল্ল তৃণমূল শিবির

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমার বুড়িরহাটে নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, মাঝ রাস্তায় কালো পতাকা হাতে দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূল কর্মীরা।

বৃহস্পতিবার তৃণমূল কার্যালয়ে বসে সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনছেন কর্মী-সমর্থকেরা। দিনহাটায়। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার তৃণমূল কার্যালয়ে বসে সুপ্রিম কোর্টের রায় শুনছেন কর্মী-সমর্থকেরা। দিনহাটায়। নিজস্ব চিত্র

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৩৫
Share: Save:

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ জানতেই চনমনে হয়ে উঠেছে কোচবিহারের তৃণমূল শিবির। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে ‘হামলার’ ঘটনায় কলকাতা হাই কোর্টের সিবিআই-তদন্তের নির্দেশ শীর্ষ আদালতে খারিজ হয়েছে জেনে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বৃহস্পতিবার দাবি করেছেন, ‘‘অসত্য নিয়ে বেশি দূর এগোনো যায় না।’’ পক্ষান্তরে, বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘আমরা চাই, ওই ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীরা যাতে ছাড়া না পায়।’’ এ দিন বহু চেষ্টা করেও নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমার বুড়িরহাটে নিশীথ প্রামাণিকের কনভয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, মাঝ রাস্তায় কালো পতাকা হাতে দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। তাঁদের ব্যারিকেড করেছিল পুলিশ। নিশীথের গাড়ি সেখানে পৌঁছতে বাধে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ। অভিযোগ, দুই শিবিরই একে অন্যকে তাক করে ঢিল ছোড়ে। ঢিলের ঘায়ে সাংসদের গাড়ির কাচ ভাঙে। নিশীথের দাবি, তাঁর গাড়িতে গুলির দাগ রয়েছে। গুলি চালিয়ে তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টা করেছে ‘তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা’। পক্ষান্তরে, তৃণমূলের অভিযোগ, তাদের একটি কার্যালয় এবং কয়েকটি মোটরবাইক ভাঙচুর করেছে ‘বিজেপির লোকেরা’, হামলাও তারাই চালিয়েছে। বোমা ছোড়ার অভিযোগ করে দু’পক্ষ। নিশীথের গাড়িতে গুলির দাগ ঘটনাস্থলে ছিল না। পরে ওই দাগ দেখানো হয়েছে।

ওই ঘটনায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে। তাতে বিজেপির ৪৮ জন নেতা-কর্মীর নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। বাকিরা হাইকোর্ট থেকে রক্ষাকবচ পেয়েছেন। পাশাপাশি, নিশীথের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআইএসএফ একটি মামলা করে। তাতে ৩২ জন তৃণমূল নেতা-কর্মীরা নাম রয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।

বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায় অবশ্য দাবি করেছেন, পুলিশ বিজেপি কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতার করেছে। অথচ, তৃণমূলের বিরুদ্ধে তেমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। সুপ্রিম কোর্টের রায় জেনে তিনি বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশকে আমরা সম্মান করি। ওই ঘটনায় প্রকৃত যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি আমাদের থাকবে।’’ পক্ষান্তরে, দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানাই। আমরা প্রথম থেকে বলে আসছিলাম, মিথ্যাচার হচ্ছে। যারা আক্রমণ করেছিল, যারা সে দিন পার্টি অফিস ভাঙচুর করেছিল, তারাই সিবিআইয়ের কাছে যাচ্ছে সুবিচারের আশায়। প্রমাণ হল, মিথ্যে একটি জায়গায় যেতে পারে, উচ্চতম জায়গায় মিথ্যের জায়গা নেই।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় দাবি করেন, সিবিআই নিরপেক্ষ নয়। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট নিশ্চিত ভাবেই উপলব্ধি করেছে রাজ্য পুলিশই ওই ঘটনার তদন্তে যোগ্য। রাজ্য পুলিশই যথাযথ তদন্ত করে আসল রহস্য উন্মোচন করবে। নিজেদের দোষ ঢাকতেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির তদন্ত চাইছিল বিজেপি। বিজেপির মুখোশ এ বার খুলে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE