Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
North Bengal Torism

উত্তরের পর্যটনের উন্নতি: আরও ভাবনা জরুরি

পাহাড়, তরাই, ডুয়ার্সের পর্যটনে পর্যটকদের আরও স্বস্তি ও সুবিধার পরিকাঠামো নিয়ে ভাবুন প্রশাসনের কর্তা ও ব্যবসায়ীরা। উত্তর-পূর্বের প্রবেশদ্বার শিলিগুড়ি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

দেবব্রত মিত্র
শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৩৬
Share: Save:

উত্তরবঙ্গে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, বন ও বন্যপ্রাণী মিলিয়ে পর্যটকদের আকর্ষণের জায়গা অনেকটা। তাই পর্যটনের পরিসর বাড়ানোর সম্ভাবনাও অসীম। কিন্তু এখনও পর্যটন তেমন ভাবে বাড়ছে না নানা কারণে। সার্বিক ভাবে পর্যটনের পরিকাঠামোর দিকে, বিশেষত উচ্চ মানের রেস্তরাঁ, ভাল হোটেল গড়ার দিকে নজর দিতে হবে, যাতে পর্যটকেরা এসে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে পারেন। বিদেশে ইকো-টুরিজ়মের রমরমা। কিন্তু এখনও সে সম্ভাবনা আমরা উত্তরবঙ্গে ভাল করে তৈরি করতে পারলাম না। ফলে, বিদেশি পর্যটক টানার ক্ষেত্রে এখনও পিছিয়ে রয়েছি আমরা।

পাহাড়, তরাই, ডুয়ার্সের পর্যটনে পর্যটকদের আরও স্বস্তি ও সুবিধার পরিকাঠামো নিয়ে ভাবুন প্রশাসনের কর্তা ও ব্যবসায়ীরা। উত্তর-পূর্বের প্রবেশদ্বার শিলিগুড়ি। কিন্তু শিলিগুড়ি শহরে গত অন্তত দু’দশক থেকে রাস্তাঘাট বাড়েনি। যানজট তুলনায় বেড়েছে। পর্যটকদের কাছে এই সমস্যা কি ভাল বার্তা দেয়? বাগডোগরা বিমানবন্দর আধুনিকীকরণ হয়েছে। কিন্তু সেখানে কি সারারাত বিমান ওঠানামা করার সুযোগ রয়েছে? এগুলি নিয়ে ভাবা দরকার।

এখন পর্যটনের পূর্ণ মরসুম। কিন্তু দেখতে পাচ্ছি, কয়েকটি ট্রেন ছাড়া, বেশির ভাগ ট্রেনই দেরিতে চলছে। যাত্রীদের সময় ধরে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। সে ভাবেই প্যাকেজ তৈরি হয়। তা মার খেয়ে গেলে সার্বিক ক্ষতি সকলের। পাহাড়ের অন্যতম আকর্ষণ টয় ট্রেন নিয়মিত হয় লাইনচ্যুত হচ্ছে বা ইঞ্জিন খারাপ হচ্ছে। ট্রেনের দেরির কারণে যাত্রী দুর্ভোগ কী ভাবে কমানো যায়, টয় ট্রেনকে আরও নিরাপদ করে কী ভাবে আরও আকর্ষণীয় করা যায় তা নিয়ে ভাবা দরকার।

উত্তরবঙ্গে বেড়াতে এসে বেশির ভাগ পর্যটকই নিউ জলপাইগুড়িতে আসেন। হঠাৎ ট্রেন দেরি হলে তাঁদের স্টেশনেই সুলভে থেকে যাওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা কি তৈরি হয়েছে? স্টেশন থেকে বেরিয়ে কোনও গন্তব্যে যেতে গেলে শুরু হয়ে যায় সরকার নির্ধারিত দরের চেয়ে গাড়িচালকদের বেশি টাকা চাওয়া। তা নিয়ে দরকষাকষি। উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগমের ডুয়ার্স, পাহাড় বেড়াতে যাওয়ার জন্য নতুন ধাঁচের বাস চালু করা যেতে পারে। যেগুলি একটু ঝকঝকে, পরিচ্ছন্ন, আরামদায়ক হতে পারে এবং যেগুলি সময় অনুসারে চলতে পারে। বাইরে থেকে আসা যাত্রীরা এই সমস্ত স্বাচ্ছন্দ্যই বেড়াতে এসে খোঁজেন। তার পরেও থাকে দুর্ঘটনা-পরিস্থিতি। মনে রাখা দরকার, শিলিগুড়ি এবং সিকিম একই পর্যটন বৃত্তে। সিকিমে বিপর্যয় হলে, একই সঙ্গে শিলিগুড়িতেও কন্ট্রোল রুম এবং জরুরি পরিষেবা কেন্দ্র খোলা উচিত, যাতে পর্যটক বা তাঁদের আত্মীয়-স্বজনেরা সহায়তা পান। দুর্ঘটনা পরিস্থিতিতে পর্যটকদের জন্য বিদেশের সব জায়গায় এমন আপৎকালীন ব্যবস্থাপনা যথেষ্ট জোরদার। এখানেও পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষের মধ্যে সমন্বয় জরুরি। এতে উত্তরবঙ্গে পর্যটন এবং তাকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থান দুই-ই বাড়বে।

(উপাচার্য, দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tourist Spot Kanchenjunga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE