ছেলের বিয়ে দিতে চান বৈশাখেই। কিন্তু শিয়রে পুরভোট থাকায় প্রার্থী বাবার ব্যস্ততা তুঙ্গে। তাই ছেলের জন্য উপযুক্ত পাত্রী চেয়ে শেষমেশ ফেসবুকেই কার্যত ‘বিজ্ঞাপন’ দিয়ে ফেললেন কোচবিহারের জেলা বিজেপি সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে। আশাই, এতেই মিলবে ছেলের জীবনসঙ্গীর সন্ধান!
২১ মার্চ ছেলের ছবি আপলোড করে ফেসবুকে ওই স্ট্যাটাস দেন নিখিলবাবু। চেন্নাইয়ে কর্মরতত ইঞ্জিনিয়ার ছেলের পরিচয় দিয়ে লেখেন, “আমরা ওর জীবনসঙ্গী খুঁজছি।” যোগাযোগের জন্য নিজের মোবাইল নম্বরও দেন তিনি। উপযুক্ত পূত্রবধূর খোঁজ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী কোচবিহার পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী নিখিলবাবু। তাঁর কথায়, “ছেলে অনেক দূরে একা রান্নাবান্না করে খাচ্ছে বলে ওঁর মা এ বার বছরের প্রথম মাস শুভ ধরে নিয়ে বৈশাখেই বিয়ের বায়না ধরেছেন। বাবা হিসেবেও উপযুক্ত পাত্রীর সন্ধান পেলে আমিও দেরি না করে বৈশাখেই ছেলের বিয়ে দিতে চাইছি। তাছাড়া ওই সময়টা ছুটি পেতে ওর সুবিধে হবে। কিন্তু প্রচারের ব্যস্ততার মধ্যে ওই ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়ার তেমন সময় হচ্ছে না। তাই ফেসবুকে ওই পোস্ট দিয়েছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই হবু বৌমার খোঁজ পাবই।”
গত দু’দিনে ইতিমধ্যে ৩০টি ‘লাইক’ পড়েছে ওই পোস্টে। কমেন্টে একজন লিখেছেন, সবাই মিলে খোঁজ লাগাও। অন্য একজন আবার লিখেছেন, খোঁজ থাকলে জানাব। পোস্টটি লাইক করেছেন ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সহকারি সম্পাদক দীপ্তিমান সেনগুপ্তও। তিনি বললেন, “সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলি ক্রমেই সামাজিক ও পারিবারিক কাজের অঙ্গ হয়ে উঠছে। নিখিলবাবু পূত্রবধূর সন্ধান চেয়ে ওই পোস্ট দিয়ে সেই রাস্তাতেই হাঁটলেন।”
ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তথা দিনহাটা পুরসভায় ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী উদয়ন গুহও প্রায় নিয়মিত বিভিন্ন বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। উদয়নবাবুর বলছেন, “এটা একেবারে ব্যক্তিগত ব্যাপার। এমন পোস্ট দেখিনি। তবে নিঃসন্দেহে এতে খানিকটা অভিনবত্ব তো রয়েইছে।” কোচবিহার পুরসভার আরেক প্রার্থী সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা অবশ্য কিছুটা ভিন্নসুরে বলেন, “মোদী হচ্ছেন দেশের কর্পোরেট জগতের প্রধান। তাঁর দলের লোকেরা তো প্রযুক্তিকে এভাবেই কাজে লাগাবেন।”
ভোটের ময়দানের অনেক প্রতিপক্ষ অবশ্য নিখিলবাবুর পাশেই দাঁড়িয়েছেন। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ নিজেও নিয়মিত ফেসবুক ব্যবহার করেন। তিনি বলেন, “সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে যে কেউ নিজের ইচ্ছের কথা জানাতেই পারেন। তবে ওই পোস্ট যাঁরা লাইক বা কমেন্ট করবেন তাঁদের নিমন্ত্রণ করতে হবে। বৌভাতের সময় উনি যেন ভুলে না যান সেটা নিশ্চিত করা দরকার!” একই সুরে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি হেমচন্দ্র বর্মনের মন্তব্য, “ওটা পুরোপুরি নিখিলবাবুর পারিবারিক ব্যাপার। আমাদের নিমন্ত্রণ পেলেই হল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy