বন্যাদুর্গতদের সঙ্গে কথা বলছেন রাজু বিস্তা। —নিজস্ব চিত্র
তিস্তা নদীর গ্রাসে কালিম্পং জেলার তিস্তাবাজারের ডেওগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা। শনিবার সকালে এলাকা পরিদর্শনে যান দার্জিলিঙের সদ্য নির্বাচিত সাংসদ রাজু বিস্তা। এলাকা পরিদর্শনের পাশাপাশি দুর্গতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সমগ্র এলাকা ঘুরে দেখেন রাজু। খোঁজ খবর নেন তাঁদের সুবিধা-অসুবিধা পাওয়া, না পাওয়া নিয়ে। এলাকাবাসীরাও সাংসদকে পেয়ে তাঁদের ক্ষোভবিক্ষোভের কথা উগরে দেন।
বন্যায় বিপর্যস্ত মানুষের সঙ্গে কথা বলে রাজ্য প্রশাসনের উদ্দেশে তোপ দাগেন রাজু। তিনি বলেন, “এই সমস্ত এলাকায় রাজ্যের সরকার সত্যিই কি কোনও কাজ করেছে? নিজেকে বড্ড অসহায় লাগছে। ভারতের অন্য প্রান্তে যদি এর থেকেও ছোট কোনও ঘটনা ঘটে, তা হলে সমস্ত সরকারি সুযোগসুবিধা পৌঁছে যায়।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “অক্টোবরের পর প্রায় আট মাস পার হয়ে গিয়েছে। তার পরও এখানে কিছুই পৌঁছয়নি। এর থেকে বড় দুর্ভাগ্য কিছু হয় না। এক জন সাংসদের পক্ষ থেকে যা যা করণীয়, তার সবই আমি করব। কিন্তু রাজ্য সরকার তিস্তা সংলগ্ন এলাকা থেকে নিরুদ্দেশ।”
রাজুকে অবশ্য একহাত নিয়েছে অনীত থাপার প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা পরিচালিত গোর্খা টেরিটোরিয়্যাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)। জিটিএ-র মুখপাত্র এসপি শর্মা রাজুকে কটাক্ষ করে বলেন, “টানা ছ’মাস ধরে জিটিএ দুর্গতদের ত্রাণ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের অন্যত্র স্থানান্তরিত করে গিয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে কমিউনিটি হল চালু করে দৈনন্দিন সমস্ত পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সাংসদ মহাশয় রাজু বিস্তা পাঁচ বছর ধরে সাংসদ থেকে কী করেছেন, সেটাই বড় প্রশ্ন।” কাজের খতিয়ান তুলে ধরে তাঁর সংযোজন, “বন্যাদুর্গতদের পুনর্বাসনের জন্য জমি নির্ধারণ করা হয়েছে৷ কিন্তু সেগুলি হস্তান্তর করা একটু জটিল প্রক্রিয়া। বিভিন্ন দফতরের অনুমতির বিষয় রয়েছে এখানে। যে কারণে একটু দেরি হচ্ছে। শুধুমাত্র জমি নয়, সেখানে বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের তরফে দুর্গতদের আর্থিক ক্ষতিপূরণও দেওয়া হচ্ছে।”
এখনও উদ্বেগজনক উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি। বিপদসীমার কাছ দিয়ে বয়ে চলেছে তিস্তা। শুক্রবার রাতেও উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, তিস্তায় জলস্তর যে ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে উদ্বেগ বাড়ছে। তিস্তার জলস্তর বিপদসীমার একেবারে কাছে রয়েছে। ফলে কালিম্পং জেলার তিস্তাবাজার-সহ তিস্তার নিম্ন অববাহিকা থেকে স্থানীয়দের সুরক্ষিত স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জলস্তর নিয়ন্ত্রণে রাখতে শনিবার সকালে গজলডোবার তিস্তা ব্যারেজ থেকে প্রায় ১১০০ কিউসেক জল ছাড়া রয়েছে। ব্যারেজে ছ’টি লকগেট খোলা রাখা হয়েছে বলেও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy