বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা। ইংরেজবাজার শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা রথবাড়িতে তখন বেশ কিছু দোকানপাট বন্ধ হতে শুরু করেছে। রথবাড়ির গাজল-চাঁচল বাসস্ট্যান্ডটি আলো-আঁধারি হয়ে আছে। বেশ কয়েকটি অটো, টোটো, ম্যাজিক গাড়ি রথবাড়ি মোড়ে দাঁড়িয়ে। কোনওটা যাবে পুরাতন মালদহ শহরে, কোনওটা সাহাপুরে। আবার বামনগোলাগামী ম্যাজিকও রয়েছে। হন্তদন্ত হয়ে মহিলারাই বেশির ভাগ তখন বাড়ি ফেরার জন্য সেই টোটো বা অটো ধরতে আসছেন। তরুণী থেকে শুরু করে মাঝবয়সী মহিলাই বেশি। কেউ শহরে শপিংমলের কর্মী বা কেউ নার্সিংহোমে কাজ করেন, কেউ আবার হোটেলে রান্না ও বাসন ধোয়ার কাজও করেন। তবে টোটো বা অটো চালকরা ডাকলেও তাঁরা উঠছেন না সহজে। দেখে নিচ্ছেন পুরুষ কোনও যাত্রী উঠছেন কিনা বা পরিচিত কেউ আছেন কি না। কিন্তু কেন?
মহিলারাই জানালেন, রাতের বেলা টোটো, অটো বা গাড়ি কোনওটাই একা মহিলার কাছে নিরাপদ নয়। তিন বছর আগে এই রথবাড়ি মোড় সংলগ্ন একটি শপিং মলের কাছ থেকে এক মহিলাকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে পুরাতন মালদহের একটি গ্রামের নির্জন এলাকায় গণধর্ষণ করা হয়েছিল। সম্প্রতি হায়দরাবাদে এক মহিলা পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ করে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। ধানতলাতে প্রায় একই ভাবে এক মহিলাকে খুন করা হয়েছে।
পুরাতন মালদহ শহরের ফুটানি মোড়ের বাসিন্দা রুম্পা দাস নামে এক শপিংমল কর্মী বলেন, ‘‘একা টোটোয় চেপে বাড়ি ফিরতে ভয় হয়। বিশেষ করে হায়দরাবাদের পর আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে। তাই সাবধানে, বুঝে টোটোয় উঠি। রথবাড়ি মোড়ে ট্র্যাফিক পুলিশের সদর দফতর থাকলেও এই দিকটায় রাতের দিকে পুলিশের দেখা পাওয়া যায় না। মাঝে মধ্যে দু’-এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার এসে ঘুরে যায়।’’