মারধরের অভিযোগ জানাতে শুক্রবার রাতে থানায় গিয়েছিলেন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ছয় মহিলা। অভিযোগ না নিয়ে মালদহের বৈষ্ণবনগর থানার আইসি তাঁদের এক জনের শ্লীলতাহানি করেছেন বলে শনিবার বিকেলে জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেন তাঁরা। মালদহের এসপি প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে।”
বৈষ্ণবনগরের সুকদেবপুর হাইস্কুলে মিড-ডে-মিল রান্না করেন ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ১৩ মহিলা। তাঁদের দাবি, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনন্দমোহন সরকারের বিরুদ্ধে বৈষ্ণবনগর থানা ও ব্লক অফিসে মিড-ডে-মিলের চাল আত্মসাতের অভিযোগ করেছিলেন তাঁরা। তার পর থেকে স্কুলে মিড ডে মিল বন্ধ ছিল। সম্প্রতি তাঁরা জানতে পারেন, প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ফের স্কুলে মিড-ডে-মিল শুরু হচ্ছে। তার পরই শুক্রবার স্কুলের রান্নাঘর ও উনুন মেরামতের জন্য গিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেখানে আনন্দবাবুর ঘনিষ্ঠ এক শিক্ষক ভূষণ মণ্ডল গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে তাঁদের মারধর ও শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ। ওই রাতেই ছ’জন মহিলা বৈষ্ণবনগর থানায় অভিযোগ জানাতে যান।
এসপি-র কাছে লিখিত অভিযোগে ওই ৬ মহিলা জানান, থানায় গেলে আইসি তাঁদের উদ্দেশে গালিগালাজ করেন। এর পরেও তাঁরা অভিযোগ করার কথা বললে অভিযোগ না নিয়ে, তাঁদের ধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের করে দেওয়া হয়। এক মহিলার শাড়িও ছিঁড়ে দেন আইসি। পাশাপাশি, স্কুলের পার্শ্বশিক্ষক-সহ আরও চার জনের নামে মারধর ও শ্লীলতাহানির অভিযোগও পুলিশ সুপারের কাছে জানান তাঁরা। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর এক মহিলার বক্তব্য, আইসিকে অপসারণ করতে হবে। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির জেলা সম্পাদক জিষ্ণু রায়চৌধুরী বলেন, “এমন ঘটনা কাম্য নয়। এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে চিঠি পাঠাব। আমরা অভিযুক্ত আইসির অপসারণ চাইব।”
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “ওঁরা অনেকে মিলে থানায় এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মারধর, শ্লীলতাহানির অভিযোগ করতে এসেছিলেন। সেখানে থানার আরও অনেক অফিসার ও লোকজন ছিলেন। থানায় সিসিটিভি রয়েছে। ঠিক কী ঘটেছে, ভিডিও ফুটেজ থেকেই পাওয়া যাবে।” তাঁর আরও দাবি, “জানতে পেরেছি, ওই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। ওঁদের অভিযোগ নিয়ে তখনই মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবুও অভিযোগ যখন হয়েছে, তখন তদন্ত করা হবে।” থানার আইসি প্রফুল্ল দেবরায় দাবি করেছেন, ভিত্তিহীন অভিযোগ। ওই দলের এক জন মহিলা অবশ্য জানিয়েছেন, ওই রাতে আইসি অভিযোগ নিয়েছিলেন।
ওই মহিলাদের আইনজীবী সুদীপ্ত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “মহিলারা আমাকে যেমন জানিয়েছেন, সেই মতো ওদের অভিযোগ দায়ের করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ থাকলে, তা নিশ্চয়ই আদালতে পেশ করা হবে। সেই মতো তদন্ত হবে।” আনন্দমোহনবাবুকে বহু বার ফোন করার পরে, এক জন তাঁর ফোন ধরে জানান, তিনি বাড়ি নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy