Advertisement
E-Paper

নতুন কমিটি গড়ে জেলা তৃণমূলে রাশ বিপ্লবেরই

দলে বিদ্রোহীদের ডানা ছেঁটে জেলা কমিটি থেকে ব্লক কমিটি পুরো নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্র। তৃণমূল সূত্রের খবর, অন্য জেলার মতো দক্ষিণ দিনাজপুরেও এতকাল দলের যাবতীয় বিষয়ে মুকুল রায়ই শেষ কথা বলতেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:২৯

দলে বিদ্রোহীদের ডানা ছেঁটে জেলা কমিটি থেকে ব্লক কমিটি পুরো নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখলেন দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্র।

তৃণমূল সূত্রের খবর, অন্য জেলার মতো দক্ষিণ দিনাজপুরেও এতকাল দলের যাবতীয় বিষয়ে মুকুল রায়ই শেষ কথা বলতেন। জেলা সভাপতি বিপ্লববাবু ছিলেন তাঁর অনুগামী। সারদা কান্ডে সিবিআইয়ের কাছে মুখ খোলার পরে মুকুল-পর্বে ইতি টানতে ও জেলাস্তরে মূল সাংগঠনিক নেতৃত্বকে কাছে টেনে নেওয়ার জন্য দলনেত্রীর এটা কৌশল বলেও মনে করছেন তৃণমূলের একাংশ। তাঁদের দাবি, মুকুল রায়ের অনুগামীদের আরও বেশি করে বেঁধে রাখতে এই কৌশল নিয়েছেন দলনেত্রী। পূর্ণ দায়িত্ব পেয়ে বিপ্লববাবু তার মতো করে জেলায় সংগঠন তৈরি করতে দেরি করেননি।

মঙ্গলবার বালুরঘাটে বিপ্লববাবু নতুন জেলা কমিটি, ৮টি মফস্বল ব্লক কমিটি এবং বালুরঘাট টাউন কমিটি ঘোষণা করেন। তাতে বালুরঘাট শহর এবং বালুরঘাট ব্লক কমিটির আমূল বদল ঘটেছে। দলীয় সূত্রের দাবি, বালুরঘাট টাউন তৃণমূল কমিটির সভাপতি তথা মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ অসিত রায়কে সরিয়ে সভাপতি করা হয়েছে সমীর ভট্টাচার্যকে। বালুরঘাট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রবীর রায়কে বালুরঘাট মফস্বল ব্লক কমিটির সভাপতি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই পদে আনা হয়েছে বিভাস চট্টোপাধ্যায়কে।

বালুরঘাট বিধানসভার অধীনে বালুরঘাট ব্লক এবং শহরের সঙ্গে হিলি এলাকাও রয়েছে। সেখানেও এলাকার দলীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর অনুগামীদের কারও কমিটিতে জায়গা হয়নি বলে অভিযোগ। ৩৮ জনের জেলা কমিটি গঠিত হলেও জায়গা পাননি আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি মজিরুদ্দিন মণ্ডল। স্কুল কমিটি নির্বাচন নিয়ে জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার অভিযোগে মজিরুদ্দিন মণ্ডলকে ছেঁটে দেওয়া হয়েছে বলে দল সূত্রের খবর।

একবার দল থেকে বহিষ্কার এবং পরে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হলেও কোনও স্তরের কমিটিতেই জায়গা হয়নি বালুরঘাটের তৃণমূল নেতা তথা ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লগিন দাসের। দল সূত্রেই জানা গিয়েছে, মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে জেলা এবং বালুরঘাটের কোনও কমিটিতেই জায়গা পাননি পুরসভার চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহা।

ফলে নয়া কমিটি গঠনের ঘোষণার পরেই দলের অন্দরে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি অবশ্য বিপ্লব মিত্র এবং কার্যকরী সভাপতি বিপ্লব খাঁ রয়ে গিয়েছেন নবগঠিত জেলা কমিটির ১৫ জনের সম্পাদক মণ্ডলীতে। নতুন মুখ সাংসদ অর্পিতা ঘোষ। জেলা থেকে পাঠানো ব্লক এবং টাউন কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক থেকে কমিটির সদস্যদের নামের তালিকা ১০ দিন আগে প্রদেশ সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য তথা তৃণমূলের সহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পাঠানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বিপ্লববাবু। তিনি দু’দিন আগে তা অনুমোদন করে জেলা সভাপতি বিপ্লববাবুর কাছে পাঠান।

দক্ষিণ দিনাজপুরের সাংগঠনিক কাজকর্মের দায়িত্ব এত দিন মুকুল রায়ের উপর ন্যস্ত ছিল। এ বার সেই দায়িত্ব এ পালন করেন দলের মহাসচিব পার্থবাবু। এ দিন তৃৃণমূল সভাপতি বিপ্লব মিত্র দাবি করেন, “আগেও মুকুলবাবু এইসব ব্যাপারে আমার উপরই ছেড়ে দিতেন। এবারেও তাই হয়েছে। দলে ভাঙনের আশঙ্কা বানানো।” মন্ত্রী ছাড়া দলের বাকি তিন বিধায়ককে জেলা কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীতে নেওয়া হয়নি। পদাধিকার বলে ওই তিন -- তপনের বাচ্চু হাঁসদা, গঙ্গারামপুরের সত্যেন রায় এবং কুমারগঞ্জের মাহমুদা বেগম জেলা কমিটির সদস্য হিসাবে রয়েছেন।

এ দিন নয়া কমিটি ঘোষণার বিষয়ে তপনের বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা অভিযোগ করেন, “আমরা এ সবের কিছুই জানি না। উনি কমিটির বিষয়ে আমাদেরকে কিছু জানাননি। তৃণমূলে এখন এটাই দস্তুর।”

এদিকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত না মেনে নিজেকে তৃণমূলের সৈনিক বলে দাবি করা শুভাশিস ওরফে সোনা পাল বলেন, “বিপ্লব মিত্র নিজের খেয়াল খুশি মত কমিটি তৈরি করেছেন। দলে তার প্রভাব পড়বে।” তবে বিপ্লববাবু বলেন, “পুরনো এবং নতুন সকলকে নিয়ে জেলা থেকে ব্লক কমিটি গঠন করা হয়েছে। বালুরঘাটের সংগঠনকে চাঙ্গা করতে কমিটিতে বদল হয়েছে। আর দলনেত্রীর নির্দেশেই সোনা পালকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন আমি চাইলেও তাকে তৃণমূলে নিতে পারব না।”

tmc balurghat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy