ফালাকাটায় থানা ঘেরাও। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
পুলিশের বিরুদ্ধে তোলাবাজি থেকে শুরু করে থানায় বসে মদ খাওয়ার অভিযোগ তুললেন শাসক দলের নেতা-কর্মীরা। শুধু অভিযোগ তোলা নয় নয়, এলাকায় মিছিল করে টানা দেড় ঘণ্টা থানা ঘেরাও করে রাখে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার বিকেলে এমনই ঘটেছে ফালাকাটা থানায়। পুলিশের বিরুদ্ধে শাসক দলের মিছিলে স্লোগান শুনে বিস্মিত হয়েছেন বাসিন্দারাও। তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন, ফালাকাটা থানার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দলের রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই থানার একাংশ পুলিশ কর্মী বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছেন, তদন্তের কাজও দায়সারা ভাবে করা হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে, সম্প্রতি এথেলবাড়িতে এক মহিলাকে নির্যাতনের ঘটনায় পুলিশ সক্রিয় ভূমিকা নেয়নি বলে এ দিন তৃণমূল নেতারা অভিযোগ করেছেন।
আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া অবশ্য এথেলবাড়ির ঘটনা নিয়ে অভিযোগ শুনেছেন বলে জানিয়েছেন। বাকি অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এথেলবাড়ির ঘটনার তদন্ত নিয়ে অভিযোগের কথা জানি। ফালাকাটায় পুলিশের বিরুদ্ধে বাকি যে অভিযোগ উঠেছে সেগুলিও খতিয়ে দেখব।”
এ দিন, বিকেলে তৃণমূল নেতারা স্মারকলিপি দিতে গেলে ফালাকাটা থানার আইসি ধ্রুব প্রধানের সঙ্গে তর্কাতর্কি বেধে যায় বলে জানা গিয়েছে। তদন্তে গাফিলতি বা তোলাবাজির অভিযোগ আইসি মানতে না চাওয়ায়, থানাতেই প্রতিরাতে মদের আসর বসার অভিযোগ তোলেন তৃণমূল নেতারা। সেই আসরে ‘দুষ্কৃতীরা’ও উপস্থিত থাকে বলে অভিযোগ করা হয়।
তদন্তে গাফিলতির ঘটনা প্রসঙ্গে সম্প্রতি এথেলবাড়ির একটি অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তৃণমূল নেতারা। অভিযোগ, সম্প্রতি এথেলবাড়ি এলাকায় এক মহিলার বাড়িতে ঢুকে দুষ্কৃতীরা মারধর সহ ঘরের আসবাব ভাঙচুর চালায়। ওই মহিলা লিখিত অভিযোগ থানায় জমা দিলেও পুলিশ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। শুধু এ ক্ষেত্রে নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও অভিযোগ জমা পড়লেও দায়সারা গোছের তদন্ত করে দায় এড়াতে মামলা আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
থানা থেকে বেরিয়ে এসে তৃণমূলের ফালাকাটা ব্লক কমিটির কার্যকরী সভাপতি সন্তোষ বর্মন অভিযোগ করে বলেন, “একাংশ পুলিশ কর্মীরা তোলাবাজি করছে। থানার ভিতরে মদের আসর বসছে, পুলিশ থানায় মদও খাচ্ছে, ডিউটিও করছে। আসল মামলাগুলি তদন্ত না করে আদালতে পাঠিয়ে দিচ্ছে, আর প্রকৃত অভিযোগ ধামাচাপা দিচ্ছে।”
ফালাকাটা থানার আইসি ধ্রুব প্রধান অবশ্য দাবি করেছেন, প্রতি ক্ষেত্রেই নিয়ম মেনেই তদন্ত করে আদালতে পাঠানো হয়। তোলাবাজির অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি। মদের আসর প্রসঙ্গে আইসির দাবি, “ডিউটি শেষ করে ভাত খাওয়ার সময় পাইনা। মদের আসরে যোগ দেওয়ার সময় কোথায়। সব ভিত্তিহীন অভিযোগ।”
বিরোধী দলগুলির অবশ্য অভিযোগ, পুলিশের বিরুদ্ধে চাপ তৈরি করতেই তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা মিছিল-ঘেরাও করছেন। এ দিনের আন্দোলনের পরে চাপে পড়েই তৃণমূলের নানা মিথ্যে অভিযোগেও পুলিশকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে বলে বিরোধীরা দাবি করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy