Advertisement
E-Paper

হাইকোর্টের নির্দেশে পদেই থাকলেন সোনা

জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে হরিরামপুরের বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা সোনা পালকে সরানোর সিদ্ধান্তের উপরে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার জেলা পরিষদে নতুন করে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনের সভা ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০৬
সোনা পাল। —নিজস্ব চিত্র।

সোনা পাল। —নিজস্ব চিত্র।

জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে হরিরামপুরের বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা সোনা পালকে সরানোর সিদ্ধান্তের উপরে স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। শুক্রবার জেলা পরিষদে নতুন করে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচনের সভা ছিল। কিন্তু সোনা পাল বালুরঘাটে গিয়ে উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশের নথি জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করলে ওই সভা বাতিল করা হয়। তৃণমূল পরিচালিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি ললিতা টিগ্গা বলেন, “এই সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের নির্দেশের জেরে এদিন পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন হয়নি।” জেলা পঞ্চায়েত আধিকারিক সৌরভ সেনগুপ্ত বলেন, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি সুদীপ অহলুওয়ালিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ যে অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছেন তাতে, গত ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভাশিস পালের যা অবস্থান ছিল, সেই অবস্থান থাকবেই। পরের আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই নির্দেশ বহাল রাখতে হবে।

জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখ সোনা পালকে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারিত করা হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হলে গত বুধবার অর্থাৎ ২৮ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি প্রণব চট্টোপাধ্যায় এবং বিচারপতি সুদীপ অহলুওয়ালিয়ার ডিভিশন বেঞ্চ ওই স্থগিতাদেশ দেন বলে সোনা পালের আইনজীবী রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন। টেলিফোনে রামকৃষ্ণবাবু বলেন, “গত ৩ জানুয়ারি সোনা পালকে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। তার আগে গত ২২ ডিসেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব সম্পর্কিত নোটিশ দিয়েছিলেন ডিভিশনাল কমিশনার ।”

ওই নোটিশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে চলতি মাসের ২২ জানুয়ারি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন সোনাবাবু। রামকৃষ্ণবাবুর ব্যাখ্যা, “ডিভিশনাল কমিশনারের তরফে পাঠানো নো কনফিডেন্স মোশানের ওই নোটিশ নিয়ম মেনে হয়নি। অর্থাৎ কী কারণে সোনাবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা, নোটিশে তার কোনও উল্লেখ না থাকায় ওই নোটিশটি সঠিক নয় বলে বিচারপতিরা জানিয়েছেন। ওই নোটিশ নিয়ম মেনে না হওয়ায়, তার উপর ভিত্তি করে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের তরফে নেওয়া পরবর্তী পদক্ষেপ অর্থাৎ তাঁকে অপসারণের সিদ্ধান্তও কার্যকর হবে না বলে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে। গত ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে পরিস্থিতি ছিল, তাই বজায় থাকল বলেও সোনাবাবুর আইনজীবী বিচারকের নির্দেশ উল্লেখ করে দাবি করেন। সোনাবাবু সে সময় জেলাপরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। সরকার পক্ষের আইনজীবী কমলেশ ভট্টাচার্য বিষয়টির বিরোধিতা করলেও ডিভিশন বেঞ্চ পুরো অনাস্থা প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ দেন বলে জানা গিয়েছে।

তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র বলেন, আদালতের নির্দেশের কপি দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিপ্লববাবুর দাবি, সোনা পালকে কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারণের প্রক্রিয়া আইন মেনেই হয়েছে। এদিন সোনাবাবু বলেন, “ক্ষমতার বলে বিপ্লব মিত্র আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছেন। কিন্তু পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে অনৈতিকভাবে আমাকে সরানো হয়েছিল। আদালতে তা প্রমাণ হয়ে গেল।’’ আগামী সোমবার সোনা পাল জেলাপরিষদে তাঁর ঘরে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছেন।

গত ৩ ডিসেম্বর দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের দলনেতা ও পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোনা পালকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করেন দলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। পরে জেলা পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ১৩ জন তৃণমূল সদস্যের মধ্যে ১২ জনই বিভাগীয় কমিশনারের কাছে সোনা পালের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করেন। তলবি সভায় ভোটাভুটিতে সোনাবাবুকে অপসারণের প্রস্তাব পাস হয়।

sona pal high court tmc balurghat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy