পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে পথ দুর্ঘটনায় এক তৃণমূলকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। অন্য দিকে, তৃণমূলকর্মীর মৃত্যু এবং আরও এক তৃণমূল নেতা গুরুতর জখম হওয়ার ঘটনায় ‘পরিকল্পনামাফিক খুন’-এর অভিযোগ তুলেছে মৃতের পরিবার।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতের নাম সঞ্জয় হাঁসদা। ২৩ বছরের ওই যুবকের বাড়ি মঙ্গলকোটের চাণক গ্রামে। শনিবার রাতে মঙ্গলকোটের গতিষ্ঠা বাসস্ট্যান্ড থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত বুধবার দুর্ঘটনার সময় সঞ্জয় ঘাতক গাড়িটিতে ছিলেন। রবিবার ধৃতকে কাটোয়া আদালতে হাজির করানোর পর ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।
যদিও পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, ঘটনার সময় গাড়িতে থাকার কথা স্বীকার করলেও ধৃত সঞ্জয়ের দাবি, তাঁকে পাওনা টাকা মেটানোর অছিলায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কারা তাঁকে সে দিন চারচাকা গাড়িটিতে করে যেতে বলেছিলেন, তাঁদের নামও পুলিশের কাছে জানিয়েছেন সঞ্জয়। সঞ্জয়ের মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:
গত বুধবার পথ দুর্ঘটনায় মঙ্গলকোটের তৃণমূলকর্মী লালু শেখের মৃত্যু হয়। একই দুর্ঘটনায় লাখুড়িয়া অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি মফিজুল শেখও জখম হন। বন্ধু লালুকে বাইকে চাপিয়ে কাটোয়া আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিতে গিয়েছিলেন মফিজুল। বিকেলে বাইকে চড়ে ফিরছিলেন দু’জনে। তখনই বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে আটঘড়ায় একটি ইটভাটার সামনে মফিজুলের বাইকের সঙ্গে একটি চারচাকা গাড়ির সংঘর্ষ হয়। তাতেই মৃত্যু হয় লালুর। দুর্ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে বৃহস্পতিবার ঘাতক গাড়িটির হদিশ পায় পুলিশ। চাণক গ্রাম থেকেই সাদা রঙের ওই চারচাকা গাড়িটি আটক করা হয়। অন্য দিকে, দুর্ঘটনার পরেই মৃত লালুর ছেলে সাহিন শেখ পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর দাবি, এটি কোনও পথ দুর্ঘটনা নয় বরং পরিকল্পনামাফিক খুন! সাহিনের অভিযোগ, দুর্ঘটনার ঠিক আগে বুধবার দুপুরে চন্দন সরকার, লাল্টু শেখ, চৌধুরী আব্বাস আহমেদ, রেজাউল মুন্সি-সহ তৃণমূলের বেশ কয়েক জন নেতাকর্মী মিলে একটি গোপন বৈঠক করেছিলেন। এর পরেই বিকেলে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। সাহিনের আরও দাবি, লালু এবং মফিজুল ছিটকে পড়ে গেলে দু’জনের উপর লাঠিসোঁটা ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চড়াও হন প্রায় ২২-২৩ জন। মারধরের ফলেই নাকি মৃত্যু হয় লালুর। যদিও এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্তেরা। অভিযুক্তদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের মঙ্গলকোটের ব্লক কমিটির সম্পাদক চন্দন সরকার বলেন, ‘‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ওই দুর্ঘটনাকে খুন বলা হচ্ছে। মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে।’’