Advertisement
E-Paper

রাজ্যের বাজেট ‘দিশাহীন’! মত শুভেন্দু, নওশাদদের, বিধানসভার বাইরে থেকে একই সুর বাম-কংগ্রেসেও

রাজ্য সরকারের বাজেটকে দিশাহীন বলে মনে করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। নওশাদও মনে করছেন, এটি একটি ‘ভোটমুখী’ বাজেট। একই সুরে সমালোচনা করেছে বিধানসভায় ‘শূন্য’ হয়ে যাওয়া বাম এবং কংগ্রেসও।

বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।

বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৪৯
Share
Save

রাজ্য বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘভাতা ৪ শতাংশ বৃদ্ধির ঘোষণা করা হয়েছে। গ্রামোন্নয়নের জন্যও প্রচুর বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃতীয় দফার সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে কোনও দিশা দেখতে পাচ্ছেন না বিরোধী নেতারা। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, এটি একটি ‘দিশাহীন বাজেট’। আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকিও এটিকে ‘ভোটমুখী বাজেট’ হিসাবেই ব্যাখ্যা করছেন।

বুধবার রাজ্যের পেশ করা বাজেটে নারী সুরক্ষার বিষয়ে কিছুই উল্লেখ নেই বলে জানান শুভেন্দু। পাশাপাশি এও মনে করিয়ে দেন, মহিলাদের জন্য সামাজিক প্রকল্প লক্ষ্মীর ভান্ডারের জন্যও বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হয়নি বাজেটে। তুলনায় টানতে ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানার মতো বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলির কথা তুলে আনেন তিনি। এমনকি দিল্লিতেও বিজেপি মহিলাদের জন্য মাসে ২৫০০ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা-ও স্মরণ করিয়ে দেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দুর দাবি, ২০২৬ সালে রাজ্যের পূর্ণাঙ্গ বাজেট বিজেপি সরকারই পেশ করবে।

রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৪ শতাংশ মহার্ঘভাতা বৃদ্ধির ঘোষণাকেও ‘বড় করে’ দেখতে চাইছেন না শুভেন্দু। বিজেপি নেতার বক্তব্য, “কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ডিএ-র বড় ব্যবধান। রাজ্য মাত্র ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করছে। কেন্দ্র জানুয়ারি মাসেই ৪ শতাংশ ডিএ বৃদ্ধি করেছিল।” পাশাপাশি রাজ্যের বাজেটে নতুন বেতন কমিশনের কোনও প্রস্তাব না-থাকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা। তাঁর কথায়, “সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্মূল্যের বাজারে কার্যত প্রতারণা এবং বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। রাজ্যের ২ কোটি ১৫ লক্ষ বেকার শিক্ষিত যুবক-যুবতীর সঙ্গে বিশ্বাঘাতকতা করা হয়েছে বাজেটে। এই বাজেটের ছত্র ছত্র প্রমাণ মিলেছে মুখ্যমন্ত্রী বা তাঁর সরকার অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু হয়ে গিয়েছে।”

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

বিজেপি বিধায়ক তথা অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়িও এই বাজেটকে একটি ‘ঘোষণার বাজেট’ বলে ব্যাখ্যা করছেন। তাঁর কথায়, “এই বাজেট মাকাল ফলও না। মাকাল ফল দেখতে ভাল হয়, ভিতরে ভাল হয় না। এই বাজেট দেখতেও ভাল না, ভিতরেও ভাল না। এই বাজেট আবার বুঝিয়ে দিল, তৃণমূল ঘোষণার সরকার।” তাঁর ব্যাখ্যায়, রাজ্য সরকার অনুদানের জন্য টাকা খরচ করছে। এর ফলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে না।

বিধানসভায় তৃণমূল এবং বিজেপি ছাড়া তৃতীয় দলের এক মাত্র বিধায়ক আইএসএফের নওশাদ সিদ্দিকিও। তিনিও সন্তুষ্ট নন রাজ্য বাজেটে। নওশাদের মতে, বাজেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চমক দেওয়ার চেষ্টা হলেও নতুনত্ব কিছু নেই। আইএসএফ বিধায়কের অভিযোগ, রাজ্য সরকার বিভিন্ন খাতে বড় অঙ্কের বরাদ্দ দেখালেও বছর শেষে তার স্বল্প পরিমাণই খরচ হয়। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “সংখ্যালঘু উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। আগের বছর ছিল ৫ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তার আগে ছিল প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে দেখা যাচ্ছে খরচ হচ্ছে ১৫-১৬ শতাংশ করে। এতে লাভ কী!” নওশাদের প্রস্তাব, ‘ভোটমুখী বাজেট’ করার বদলে রাজ্যের মানুষ কী ভাবে ভাল থাকবেন, সেটি সরকারের ভাবা দরকার। তাঁর কথায়, “আজকের দিনে ৬ লক্ষ হাজার কোটি টাকা ঋণ রয়েছে রাজ্যের। এই ঋণ বাংলার মানুষের বোঝা হয়ে যাচ্ছে।”

বিধানসভায় বর্তমানে বাম এবং কংগ্রেসের কোনও আসন নেই। বিধানসভায় ‘শূন্য’ হয়ে যাওয়া দুই দলও রাজ্য বাজেটের সমালোচনায় সরব হয়েছে বিধানসভার বাইরে থেকেই। সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন বাম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর মতে, এটি প্রতিশ্রুতির বাজেট। তাঁর বক্তব্য, “শিক্ষা, স্বাস্থ্য অথবা কর্মসংস্থানের কোনও কথা এই বাজেটে নেই। কী করা হবে বলা হচ্ছে, কিন্তু টাকা কোথা থেকে আসবে সেই সংস্থান করা নেই।” প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্যআইচ রায়ের কথায়, এই বাজেটে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ঋণের বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদী কোনও পরিকল্পনা নেই। মহিলা এবং বেকারদের বিষয়েও বিশেষ কিছু বাজেটে নেই বলেই মনে করছেন তিনি। কংগ্রেস মুখপাত্র বলেন, “মেধারও পলায়ন হচ্ছে, পুঁজিরও পলায়ন হচ্ছে!”

west bengal budget Suvendu Adhikari West bengal Assembly Nawsad Siddique Opposition Party

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}