E-Paper

পথে ‘প্যাটিস’ আন্দোলন, বাক্স খুলে আসরে কংগ্রেস

অভিনব প্রতিবাদের যোগসূত্র কয়েক দিন আগে ব্রিগেড ময়দানের ঘটনার সঙ্গে বাঁধা। ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’ নামে একটি সংগঠনের আয়োজিত গীতাপাঠের সমাবেশের দিন ব্রিগেডের মাঠে আমিষ খাবার বিক্রি করতে যাওয়ায় চিকেন প্যাটিস বিক্রেতাদের ‘হেনস্থা’ করার অভিযোগ উঠেছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:২০
ধর্মতলায় চিকেন প্যাটিস বিলি প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের।

ধর্মতলায় চিকেন প্যাটিস বিলি প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের। —নিজস্ব চিত্র।

খাওয়া এবং খাওয়ানোয় কংগ্রেস নেতাদের উদারতা সুবিদিত। সুগন্ধী বিরিয়ানি থেকে বাপুজি কেক, বাদ যায় না কিছুই। সেই তালিকায় এ বার যোগ হল চিকেন প্যাটিস। খাস ধর্মতলায় জনতার হাতে হাতে একটি করে চিকেন প্যাটি তুলে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার। কংগ্রেস নেতাদেরই একাংশ যাকে বলছেন, ‘প্যাটিস সত্যাগ্রহ’! অন্য এক দল আবার বলছেন, ডিমের পরে এল মুরগি! লালবাজার অভিযানে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের ছোড়া ডিম নেতাদের দিকে এসেছিল, এখন নেতাদের হাত থেকে চিকেন প্যাটিস জনতার দিকে গেল।

এমন অভিনব প্রতিবাদের যোগসূত্র কয়েক দিন আগে ব্রিগেড ময়দানের ঘটনার সঙ্গে বাঁধা। ‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ’ নামে একটি সংগঠনের আয়োজিত গীতাপাঠের সমাবেশের দিন ব্রিগেডের মাঠে আমিষ খাবার বিক্রি করতে যাওয়ায় চিকেন প্যাটিস বিক্রেতাদের ‘হেনস্থা’ করার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তদন্ত চলছে বলে দাবি পুলিশের। প্রদেশ কংগ্রেস নেতারাও বুধবার সকালে নিউ আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে এসেছেন। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় আক্রান্ত এক প্যাটিস বিক্রেতার সঙ্গে মেটিয়াবুরুজে দেখা করার চেষ্টাও করেছিলেন তবে তিনি ‘ধরা’ দেননি। সন্ধ্যায় কৃষ্ণা দেবনাথ, সুব্রতা দত্ত, সুমন রায়চৌধুরী, আশুতোষদের সঙ্গে নিয়েই আসরে নামেন শুভঙ্কর। মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে প্রদেশ কংগ্রেস দফতর বিধান ভবন থেকে ওয়েলিংটনে উৎকল ভবন পর্যন্ত মিছিল ছিল ওড়িশার মালকানগিরিতে বাঙালি গ্রামবাসীদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদে। তার পরে ধর্মতলায় গিয়ে প্যাটিস বিক্রেতাদের পাশে নিয়ে বাক্স খুলে চলে শুভঙ্করদের চিকেন প্যাটিস অভিযান!

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির বক্তব্য, “এক জন বিক্রেতার পরিচয় হিন্দু বা মুসলমান নয়, তাঁর পরিচয় তিনি বিক্রেতা। পহেলগামে হিন্দু দেখে দেখে গুলি করা হয়েছিল। এখানেও কি নাম-গোত্র জিজ্ঞাসা করে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় বিজেপি?” যদিও বিজেপির দাবি, ওই কর্মসূচি দলের ছিল না। তবে গীতা পাঠের ‘সাফল্য’ আড়াল করতে এই সব ‘গল্প ফাঁদা হয়েছে’। আর কংগ্রেসের এক নেতার তির্যক মন্তব্য, ‘‘প্রতিবাদ হবেই কিন্তু তার ধরন নিয়ে ভাবতে হবে না? কোনও আবগারি দোকানে হামলায় বিক্রেতারা আক্রান্ত হলে আমরা কি বোতল নিয়ে প্রতিবাদে নামব?’’

এর পাশাপাশি, বিক্রেতাদের মারধরের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে সিপিএম। দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, “সমাজমাধ্যমে দেখে আমরা হামলাকারীদের চিহ্নিত করতে পারলাম। কিন্তু পুলিশ তা পারল না! কাউকে গ্রেফতার, স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত করেনি। মন্দির-মসজিদ নিয়ে রাজনীতির সম্প্রসারণ হল আমিষ-নিরামিষ নিয়ে এই হামলা।” ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের শাস্তির দাবি তুলেছে ‘পশ্চিমবঙ্গ স্ট্রিট হকার্স ফেডারেশন’ও।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Congress BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy