E-Paper

মোবাইল ফেলে দঙ্গল-মঙ্গলের আশ্রয়ে দেশরাজ, পুলিশি দাবি

সোমবার দুপুরে কৃষ্ণনগর শহরের বাড়িতে ঢুকে মাথায় তিনটি গুলি করে খুন করা হয় বছর উনিশের ঈশিতা মল্লিককে। পুলিশের অনুমান, কৃষ্ণনগর থেকে ট্রেনে দেশরাজ শিয়ালদহে পৌঁছয়। পরে হাওড়ায় গিয়ে দুন এক্সপ্রেস ধরে বরাকর যায়।

সুস্মিত হালদার, বিতান ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৫ ০৭:৫২

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ট্রেন বদলে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের দিকে যাওয়ার আগে, পশ্চিম বর্ধমানের বরাকর স্টেশনের কাছে রেললাইনের ধারে মোবাইল ফেলে দিয়েছিল কৃষ্ণনগরে তরুণী খুনে অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহ। এক কিশোর তা পায়। পুলিশ সেটি উদ্ধার করেছে।

পুলিশের ধারণা, গোরক্ষপুরের কাছে দেওরিয়ায় গা-ঢাকা দিয়ে আছে দেশরাজ। স্থানীয় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানার পুলিশ ওই এলাকায় দু’জায়গায় হানা দিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তার বাবার দুই জেঠতুতো ভাই, স্থানীয় সমাজবিরোধী দঙ্গল সিংহ ও মঙ্গল সিংহ দিন চারেক আগে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। বুধবার কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে বলেন, “দেশরাজ দঙ্গল-মঙ্গলের আশ্রয়েই রয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের বাহিনী তল্লাশি চালাচ্ছে।” নিতিনপ্রতাপ সিংহ নামে দেশরাজের এক খুড়তুতো ভাইকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

সোমবার দুপুরে কৃষ্ণনগর শহরের বাড়িতে ঢুকে মাথায় তিনটি গুলি করে খুন করা হয় বছর উনিশের ঈশিতা মল্লিককে। পুলিশের অনুমান, কৃষ্ণনগর থেকে ট্রেনে দেশরাজ শিয়ালদহে পৌঁছয়। পরে হাওড়ায় গিয়ে দুন এক্সপ্রেস ধরে বরাকর যায়। পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে সেখানে ফোন ফেলে, আসানসোল ফেরে। সেখান থেকেই গোরক্ষপুরগামী ট্রেন ধরে।

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, গত ২৪ অগস্ট নতুন সিম-কার্ড কিনে দেশরাজ মোবাইলে ভরেছিল। ঈশিতা খুন হওয়ার পরে, ওই নম্বর থেকেই দেশরাজের মা পুনম সিংহ ও নিতিনের কাছে ফোন যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বরাকরের কাছে, লছিপুর এলাকায় নতুন সিম-সহ ফোনটি উদ্ধার হয়।

উত্তর ২৪ পরগনার ধরমপুরে যে এলাকায় দেশরাজেরা ভাড়া থাকত, দেশরাজের সেখানকার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর দাবি, “দিন সাতেক আগে থেকে পিস্তলের খোঁজ করছিল ও। মাথা ঠান্ডা করতে বলায় গালিগালাজও করে।” বন্ধুটির দাবি, কাঁচরাপাড়ায় সৈনিক স্কুলে পড়ার সময় থেকেই ঈশিতার সঙ্গে সম্পর্ক ছিল দেশরাজের। সম্প্রতি ঈশিতা দূরত্ব বাড়াচ্ছিলেন। পুলিশ সূত্রের খবর, মাস দুয়েক আগে বাবাকে ভিডিয়ো-কল করে আত্মঘাতী হওয়ার ভয় দেখায় দেশরাজ। বিয়ের বিষয়ে ঈশিতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাকে নিরস্ত করা হয়।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ধরমপুরের কাছে অসংখ্য পানশালায় দুষ্কৃতীদের আনাগোনা। সেখান থেকে সে দেশি ৭ এমএম পিস্তল জোগাড় করে থাকতে পারে, অনুমান পুলিশের। তবে ঈশিতা খুনের পরে তার মায়ের সঙ্গে কী কথা বলতে দেশরাজ অপেক্ষায় ছিল, তদন্তকারীরা এখনও ধন্দে। ঈশিতার বাবা দুলাল মল্লিক শুধু বলেন, “তদন্ত কত দূর এগিয়েছে বলতে পারেন? ছেলেটাকে ধরতে পারল না পুলিশ।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Krishnagar Murder Case police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy