Advertisement
E-Paper

তৃণমূল-বিজেপি মেরুকরণে পথ খুঁজতে বসছে কংগ্রেস

পুজোর আগে ৬ জন অভিজ্ঞ নেতা-নেত্রীকে ডেকে পেয়েছিলেন মাত্র দু’জনকে! রাজনৈতিক লাইন ঠিক করতে পুজোর পরে গোটা দলকেই বৈঠকে ডাকলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তৃণমূল এবং বিজেপি-র দৌলতে এ রাজ্যে মেরুকরণের রাজনীতি মাথা চাড়া দেওয়ায় কংগ্রেসের এখন আশু করণীয় কী, সেই প্রশ্নেই দলে মতামত যাচাই করতে চান প্রদেশ নেতৃত্ব।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৩১

পুজোর আগে ৬ জন অভিজ্ঞ নেতা-নেত্রীকে ডেকে পেয়েছিলেন মাত্র দু’জনকে! রাজনৈতিক লাইন ঠিক করতে পুজোর পরে গোটা দলকেই বৈঠকে ডাকলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তৃণমূল এবং বিজেপি-র দৌলতে এ রাজ্যে মেরুকরণের রাজনীতি মাথা চাড়া দেওয়ায় কংগ্রেসের এখন আশু করণীয় কী, সেই প্রশ্নেই দলে মতামত যাচাই করতে চান প্রদেশ নেতৃত্ব।

সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের ফাঁস চেপে বসার মধ্যেই বর্ধমানে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে আরও চাপে তৃণমূল। শাসক দলের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ এনে আসরে নেমেছে বিরোধীরা। শাসক দলের মদতেই রাজ্যে সন্ত্রাসবাদ-মৌলবাদের বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে, এই প্রচারই চালাচ্ছে বিরোধীরা। এই প্রচারকে হাতিয়ার করেই রাজ্যে বিজেপি-র পাশাপাশি সঙ্ঘ পরিবারও সক্রিয়তা বাড়াচ্ছে। যে কারণে সিপিএম বলছে, সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়িয়ে তৃণমূল এবং হিন্দুত্ববাদী কর্মসূচি নিয়ে বিজেপি রাজ্যে নিজেদের স্বার্থেই মেরুকরণের রাজনীতি করছে। এই প্রশ্নে এখন বামেদের মতোই উদ্বিগ্ন কংগ্রেসও। কারণ, যত সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি হবে, বাম বা কংগ্রেসের মতো দলের ততই প্রান্তিক শক্তি হওয়ার আশঙ্কা।

এই পরিস্থিতি বিচার করেই ভবিষ্যতের কর্মসূচি স্থির করার আগে আলোচনায় বসছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিধান ভবনে আগামী শনিবার ডাকা হয়েছে দলের কার্যনির্বাহী কমিটির বর্ধিত বৈঠক। যেখানে দলের সব বর্ষীয়ান নেতা-সহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য-সহ ডাকা হয়েছে জেলা সভাপতিদেরও। আমন্ত্রিত সাংসদ ও বিধায়কেরাও। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “তৃণমূল যা করছে, তাতে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ উঠছে। বিজেপি-ও সর্বনাশ ডেকে আনছে। ধর্মনিরপেক্ষ মানুষকে নিজেদের ছাতার তলায় আনতে কংগ্রেসকে সক্রিয় হতে হবে এখন। বৈঠক থেকে সেই চেষ্টাই হবে।”

বিজেপি যেমন ২০১৬-কে পাখির চোখ ধরে ঝাঁপিয়েছে, কংগ্রেসকেও তেমন ভাবনায় রাখছে আগামী বিধানসভা নির্বাচন। একক শক্তিতে লড়াই করে আগামী বিধানসভা ভোটে মালদহ-মুর্শিদাবাদের বাইরে বিশেষ কিছু করা যাবে না, এমন মনে করছেন দলের অনেকেই। ভবিষ্যতের সম্ভাব্য পথ হিসাবে বাম না তৃণমূল, কার সঙ্গে সমঝোতা করা উচিত এই প্রশ্নেও প্রদেশ স্তরে দলে দ্বিমত রয়েছে। কংগ্রেসের এক বিধায়কের কথায়, “তৃণমূলের প্রতি সুর নরম করতে গেলে দেশদ্রোহীদের সাহায্য করার অভিযোগ উঠবে! বামেদের দিকে হাত বাড়াতে গেলে নিচু তলার কর্মী-সমর্থকেরা বেঁকে বসতে পারেন। সিদ্ধান্ত তাই কঠিন!”

বিজেপি বা বামেদের চেয়ে নিচু পর্দায় হলেও বর্ধমান নিয়ে প্রতিবাদে নেমেছে কংগ্রেস। দলের একগুচ্ছ বিধায়ক-সহ বর্ষীয়ান নেতারা আজ, বুধবার যাচ্ছেন বর্ধমানে সভা করতে। প্রদেশ নেতৃত্ব চাইছেন, বর্ধমানে নজর কাড়ার মতো প্রতিবাদ কর্মসূচি করে তার রেশ থাকতেই বিধান ভবনে চিন্তন বৈঠকে বসতে। একই সঙ্গে সারদা-অস্ত্রও হাতছাড়া করতে চাইছেন না। অধীর মঙ্গলবার শাসক দলকে বিঁধে ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, ‘কেঁচো খুঁড়তে এখন কেউটে বেরোচ্ছে!’ আবার শাসক দলকে চাপে রাখতেই দলত্যাগী (যাঁরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন) বিধায়কদের উপরে হুইপ জারি করে কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব তাঁদের অনাস্থা প্রস্তাবে অংশ নিতে বলেছেন। ভোটাভুটির দিন অনুপস্থিত থাকলেও প্রতিক্রিয়া সামাল দিতে হবে বলে নোটিসে জানানো হয়েছে। মেরুকরণের রাজনীতি মোকাবিলায় দলের সক্রিয়তা টের পাওয়ানো ছাড়া যে রাস্তা নেই, বুঝতে রারছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব।

adhir chowdhury sandipan chakrabarty pradesh congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy