রেল এই সিদ্ধান্ত বদল না করলে দীর্ঘ আন্দোলন চলবে বলেও হুশিয়ারি দেন যাত্রীরা। ছবি: সংগৃহীত
সিমলাগড় স্টেশনের বেসরকারিকরণ করা হয়েছে- এই অভিযোগে বিক্ষোভ প্রকাশ করতে জমায়েত হন নিত্যযাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ। ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে সিমলাগড় স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে চলে এই অবস্থান বিক্ষোভ। অবস্থানকারীদের দাবি, সিমলাগড়কে হল্ট স্টেশনে পরিণত করার ফলে সমস্যায় পড়বেন যাত্রীরা। এর পর আর এই স্টেশনে কোনও মেল এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড়াবে না। সিমলাগড় স্টেশন থেকে দূরের কোনও স্টেশনের টিকিট পাওয়া সম্ভব হবে না বলে জানান নিত্যযাত্রীরা।
ইতিমধ্যেই তাঁরা নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তারই প্রতিবাদে এই আন্দোলন বলে দাবি করেন তাঁরা। অবস্থান বিক্ষোভের পাশাপাশি চলতে থাকে সই সংগ্রহ অভিযান। এই গণস্বাক্ষর ডিআরএম-সহ রেলের উচ্চপদস্থ কর্তাদের কাছে পাঠানো হবে।
চলতি মাসের পয়লা তারিখ থেকেই হাওড়া বর্ধমান মেন লাইনের সিমলাগড় স্টেশনের বেসরকারিকরণ করার নির্দেশিকা জারি হয়। সিমলাগড় এখন থেকে আর সাধারণ স্টেশন নয়, বরং হল্ট স্টেশন হিসাবেই মান্যতা পাবে। ফলে আশঙ্কা, এত দিন যে সব ট্রেন স্টেশনে দাঁড়াত, সেগুলি আর সিমলাগড়ে দাঁড়াবে না। যাত্রীদের ট্রেন ধরতে পান্ডুয়া বা অন্য কোনো বড় স্টেশনে যেতে হবে। ফলে দুর্দশার শিকার হচ্ছেন তাঁরা। টিকিট কাউন্টার সহ স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম সব কিছুই বেসরকারি ঠিকাদারের হাতে চলে গেছে বলে জানা যায়।
বিক্ষোভকারীদের মতে, রেল কর্তৃপক্ষ যে গতিতে বিভিন্ন স্টেশনের বেসরকারিকরণ শুরু করেছে, তাতে রেল একটি লাভজনক জাতীয় সম্পত্তিতে পরিণত হচ্ছে। বেসরকারি সংগঠনের কাছে বিক্রি করে দেওয়া কেন্দ্র সরকারের চক্রান্ত বলে অভিযোগ করেন পান্ডুয়া ব্লকের তৃণমূল সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায়। রেল এই সিদ্ধান্ত বদল না করলে দীর্ঘ আন্দোলন চলবে বলেও হুশিয়ারি দেন যাত্রীরা। তিনি আরও বলেন, রেল দফতরের আলাদা করে বাজেট তৈরি হয়। তবুও এক এক করে সব বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।
সিমলাগড়ের নিত্যযাত্রী কার্তিক দত্ত বলেন, আগে অনলাইন মাধ্যমে সিমলাগড় থেকে অন্যান্য স্টেশনের টিকিট কাটা যেত, কিন্তু এখন সেই সুবিধা আর পাওয়া যাচ্ছে না। ব্রেক জার্নি করে দূরের স্টেশনে যেতে হচ্ছে। এতে সময় লাগছে বেশি। টিকিটের খরচও বেশি হচ্ছে।
কেউ হাওড়া যেতে চাইলে তাঁকে ব্যান্ডেল অবধি টিকিট কাটতে হচ্ছে। ব্যান্ডেল স্টেশনে নেমে আবার হাওড়া যাওয়ার ট্রেন ধরতে হচ্ছে।
আরেক জন যাত্রী সফিউল্লা বলেন, সাদা কাগজে বা অন্য স্টেশন থেকে পুরনো টিকিট এনে স্ট্যাম্প মেরে বেআইনি ভাবে বিক্রি করা হচ্ছে, পরিষেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হতে শুরু করেছে।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, বেসরকারিকরণ হয়নি। স্টেশনের টিকিট বিক্রি কমে যাওয়ায় রেল কর্তৃপক্ষের নিয়ম অনুযায়ী, সিমলাগড়কে হল্ট স্টেশন করা হয়েছে। সারা রাজ্যে এরকম অনেক হল্ট স্টেশন আছে যেগুলি এজেন্সি মারফত চলে। কমিশনের ভিত্তিতে এজেন্সি গুলো কাজ করে। এতে পরিষেবায় কোনো অসুবিধা হবে না। স্টেশনের রক্ষণাবেক্ষণের কর্তৃপক্ষের হাতেই থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy