Advertisement
E-Paper

হামলায় ধৃত বিজেপির ১৭, মিলল জামিন

আমোদপুরে তৃণমূলের ব্লক কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় ১৭ জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে তাঁদের সিউড়ি সিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে সকলেরই শতার্ধীন জামিন মঞ্জুর হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৭
ধৃত: আমোদপুরে তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের তোলা হয় সিউড়ি আদালতে। নিজস্ব চিত্র

ধৃত: আমোদপুরে তৃণমূলের কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্তদের তোলা হয় সিউড়ি আদালতে। নিজস্ব চিত্র

আমোদপুরে তৃণমূলের ব্লক কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় ১৭ জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে তাঁদের সিউড়ি সিজেএম আদালতে হাজির করানো হলে সকলেরই শতার্ধীন জামিন মঞ্জুর হয়।

সরকারি আইনজীবী কুন্তল চট্টোপাধ্যায় জানান, ধৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইন, বেআইনি জমায়েত, খুনের চেষ্টা, বোমাবাজি-সহ ১০টি ধারায় মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। সওয়াল-জবাবের পরে ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট অলিভিয়া রায় শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করেন।

দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় অস্ত্র আইন-সহ খুনের চেষ্টার মামলা কেন? — মঙ্গলবার ভরা আদালতেই এ প্রশ্ন তোলেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। তিনি বিচারকের কাছে জানান, সোমবার সকাল সা়ড়ে দশটায় ওই ঘটনাটি ঘটে। বিকেল তিনটে পাঁচে অভিযোগ দায়ের হয়। তাতে ৭১ জন বিজেপি কর্মীকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। তারপরেই সক্রিয় হয়ে জেলার নানা প্রান্ত থেকে পুলিশ ১৭ জনকে গ্রেফতার করে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েকটা ইটের টুকরো, লাঠি, চেয়ার-টেবিলের ভাঙা অংশ উদ্ধার করেছিল। পরে তারাই গিয়ে বোমের স্‌প্লিনটার, আগ্নেয়াস্ত্র খুঁজে পায়।

সোমনাথবাবুর কথায়, ‘‘আদালতে যুক্তি দিয়ে বলেছি এটা পুলিশের সাজানো মামলা। শুধু তাই নয়, ঢিল ছোড়া দূরত্বে ফাঁড়ি হলেও ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পুলিশের প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগল কেন?’’ অস্ত্র নিয়ে হামলা হলে কেউ আহত হলেন না কেন, সেই প্রশ্নও তোলেন তিনি। সরকারি আইনজীবী তার সদুত্তর দিতে পারেননি বলে সোমনাথবাবুর দাবি। এরপরেই বিচারক অভিযুক্তদের জামিনদার হিসেবে এক জন করে ল-ক্লার্ক এবং এক জন করে স্থানীয় মানুষের উপস্থিতিতে তিন হাজার টাকার বন্ডে জামিন দেন।

অস্ত্র আইন-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হওয়ার পরেও কী করে এত দ্রুত জামিন পেলেন অভিযুক্তেরা? এ নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার নীলকান্ত সুধীর কুমারকে ফোন, এসএমএস করা হলেও জবাব মেলেনি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগ তো আর পুলিশ করেনি। পুলিশ শুধু এফআইআর মতো ব্যবস্থা নিয়েছে মাত্র।’’

সোমবার সিউড়ির মহামিছিলে যোগ দিতে আসার পথে লাভপুর, নানুর, সাঁইথিয়া ছাড়াও আমোদপুরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের বাস আটকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। আমোদপুরে তৃণমূলের ব্লক কার্যালয়ে ভাঙচুরের পাল্টা অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি’র বিরুদ্ধেও। তারপরেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়ের হয়। জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের হুঙ্কার ছিল, ‘‘আমোদপুরে ব্লক কার্যালয়ে ভাঙচুরের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বিজেপিকে। আমরা কিন্তু কাউকে ছাড়ব না।’’

কর্মীদের জামিনে মুক্তির পরে তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়েনি বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় বলছেন, ‘‘আমরাও তো লাভপুর থানায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে মারধর, মিছিলে মাধার অভিযোগ করেছি। কই পুলিশ তো কিছুই করল না। এই ঘটনা থেকেই প্রমাণ হয় যে পুলিশ আসলে শাসকদলের কথায় চলছে।’’ ঘটনা হল, আগের দিন সোমবার সিউড়িতে সংবাদমাধ্যমের কাছে বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় অভিযোগ করেছিলেন, ‘‘এ রাজ্যের পুলিশ, প্রশাসনেও রাজনীতিকরণ হচ্ছে।’’

তবে বিজেপি-র নিচুতলার কর্মীরা গোটা ঘটনাপ্রবাহে খুশি। এঁদেরই এক জন বলছেন, ‘‘পুলিশকে দিয়ে তৃণমূল যে মিথ্যে মামলায় ফাঁসাতে চাইছে আদালত তা বুঝতে পেরেই জামিন মঞ্জুর করেছে। গোটা পর্বে দলীয় নেতৃত্বও পাশে ছিলেন।’’

BJP TMC Bail Arrest
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy