Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

নিয়োগ-জটে ৪৪ চাকরিপ্রার্থী

কাউন্সেলিং শেষে অপেক্ষা ছিল কেবল নিয়োগপত্রের। সেখানেই বাধা পড়ল। বীরভূমে ১৫২০ জনের মধ্যে ১৪৭৬ জনের নিয়োগ-পর্ব তেমন কোনও গোলমাল ছাড়া মিটলেও মঙ্গলবার টেট-উত্তীর্ণ ৪৪ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র না দিয়েই ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

কাউন্সেলিং শেষে অপেক্ষা ছিল কেবল নিয়োগপত্রের। সেখানেই বাধা পড়ল।

বীরভূমে ১৫২০ জনের মধ্যে ১৪৭৬ জনের নিয়োগ-পর্ব তেমন কোনও গোলমাল ছাড়া মিটলেও মঙ্গলবার টেট-উত্তীর্ণ ৪৪ জন প্রার্থীকে নিয়োগপত্র না দিয়েই ফিরিয়ে দেওয়া হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁদের নিয়োগ চূড়ান্ত হয়েছিল প্যারাটিচার ও শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসাবে। নিয়োগপত্র দিতে গিয়ে দেখা যায়, তাঁরা সেই শ্রেণিতে পড়েন না। নথি ফের না দেখে নিয়োগপত্র দিতে চাননি কর্তারা। টেট-উত্তীর্ণ এই পরীক্ষার্থীদের দাবি, তাঁরা নিয়ম মেনেই ফর্ম পূরণ করেছিলেন। দু’দফায় নথিপত্র যাচাই করাও হয়েছিল। এক পরীক্ষার্থীর কথায়, ‘‘এখন এমন প্রশ্ন উঠছে কেন?’’

চূড়ান্ত-পর্বে পৌঁছেও প্রাথমিক শিক্ষকপদে নিয়োগপত্র না পেয়ে চরম উৎকণ্ঠা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন প্রার্থীরা। কিন্তু, ত্রুটি কোথায়, সেটি ধরিয়ে দিয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের এক কর্তা। তাঁর ব্যাখ্যা: সাধারণ প্রার্থীদের কেউ কেউ নিজের শ্রেণিতে টিক দেওয়ার পাশাপাশি ‘প্যারাটিচার্স ও আদার্স’ শ্রেণিতেও টিক দিয়েছেন। গোল বেঁধেছে সেখানেই। এ বার কী করণীয় সেটা জানতে এই পরীক্ষার্থীদের অনেকেই বুধবারই কলকাতায় রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে যান।

একই রকম সমস্যা দেখা দিয়েছে পাশের জেলা বর্ধমানেও। ২০১২ সালে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পরীক্ষার ফর্মে প্যারাটিচার কিনা জানতে চেয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সেখানে চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রাথমিক না উচ্চ প্রাথমিকের প্যারাটিচার সে ব্যাপারে ফর্মে জানতে চাওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ওই চাকরিপ্রার্থীরা ২০১২ সালের অ্যাডমিট কার্ডের ভিত্তিতে এ বছর পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কাউন্সেলিংয়ে স্কুল বাছাই হওয়ার পরে ওই চাকরি প্রার্থীদের প্রাথমিক স্কুলে প্যারাটিচার সংক্রান্ত নথি নেই বলে নিয়োগপত্র দেয়নি। আরও অভিযোগ, ওই বছরের পরীক্ষার্থীদের একাংশ প্যারাটিচার সংক্রান্ত ঘরে কোনও চিহ্ন দেননি। সেই মতো অ্যাডমিট আসে। পরীক্ষাও দেন। ইন্টারভিউতেও যোগ্যতা অর্জন করেন। কিন্তু কাউন্সেলিং গিয়ে ওই সব পরীক্ষার্থীরা জানতে পারেন, তাঁরা নাকি প্যারাটিচার! সে জন্য তাঁদের নিয়োগপত্র দেওয়া হবে না।

জোড়া অভিযোগ নিয়ে প্রায় ২২০ জন চাকরিপ্রার্থী বুধবার দুপুর থেকে বর্ধমান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন। একটাই আওয়াজ, “ইন্টারভিউতে আমরা পাশ করেছি। আমাদের এসএমএস ও ই-মেল করে কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হয়েছে। স্কুল নির্বাচনও হয়ে গিয়েছে। এখন নিয়োগপত্র দিতে হবে।” জেলাশাসকের দফতর থেকে কবরখানা যাওয়ার রাস্তার উপরে ওই সব চাকরিপ্রার্থীরা বসে থাকায় সন্ধ্যা পর্যন্ত সংসদ দফতরের কর্মীরা বাইরে বেরোতে পারেননি। চাকরি প্রার্থীরা সংসদের ভিতরে থাকা পুলিশকর্মীদের বাইরে যাওয়ার পথ করে দিলেও শিক্ষা সংসদের কর্মীদের ভিতরেই আটকে রাখেন।

বিক্ষোভকারী কালনার পান্নালাল মুখোপাধ্যায়, মেমারির নূরজাহান খাতুনদের অভিযোগ, “গত সোমবার কাউন্সেলিং হওয়ার পর রাতে জানানো হয়, নিয়োগপত্র দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ আমরা প্রাথমিকে প্যারাটিচার সংক্রান্ত কোনও নথি জমা পড়েনি। কিন্তু, আমরা প্রাথমিকের প্যারাটিচার, এমন দাবি তো কোথাও করিনি। তা হলে এই প্রশ্ন আসছে কেন?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Recruitment Tangle TET Candidates
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE