Advertisement
২১ মে ২০২৪
Birbhum

বাবুইজোড়-কাণ্ডে গ্রেফতার ৬

অন্যদিকে অস্ত্র আইন ও মাদক কারবার দুটি পৃথক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে খয়রাশোল ব্লকের তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতা আব্দুর রহমান ও উজ্জ্বল হক কাদেরি

ধৃত: সিউড়ি আদালত চত্বরে আব্দুর (বাঁ দিকে) ও উজ্জ্বল। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

ধৃত: সিউড়ি আদালত চত্বরে আব্দুর (বাঁ দিকে) ও উজ্জ্বল। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:০১
Share: Save:

কাঁকরতলায় শুক্রবারের সংঘর্ষের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার ধৃতদের দুবরাজপুর আদালতে তোলা হলে, আদালতের নির্দেশে ধৃতদেরকে ৮দিনের জন্য পুলিশ নিজেদের হেফাজতে পেয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার সরকারি আইনজীবী রাজেন্দ্রপ্রসাদ দে।
অন্যদিকে অস্ত্র আইন ও মাদক কারবার দুটি পৃথক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে খয়রাশোল ব্লকের তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতা আব্দুর রহমান ও উজ্জ্বল হক কাদেরি। ঘটনাচক্রে কাঁকরতলা কাণ্ডের জন্য ওই দুই নেতাই একে অপরকে দায়ী করেছেন। তবে ওই দুই নেতার গ্রেফতারির পিছনে শাসক দলের উঁচু তলার নির্দেশ থাকতে পারে বলে অনুমান করছেন অনেকে।
সরকারি কৌঁসুলি মলয় মুখোপাধ্যায় জানান, প্রথম জন অস্ত্র-সহ গ্রেফতার হয়েছেন রাজনগর থানা এলাকা থেকে। দ্বিতীয় জন সিউড়ি হাটজনবাজার এলাকা থেকে মাদক-সহ। শনিবার সিউড়ি আদালতে তুলে উভয়কেই নিজেদের হেফাজতে পেয়েছে পুলিশ। উভয়েই অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁরা নির্দোষ, মিথ্যে মামলায় তাঁদের ফাঁসানো হয়েছে।
পঞ্চায়েতের রাশ কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে শুক্রবার দুপুরে তৃণমূলের যুযুধান দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাবুইজোড় গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয় চত্বর। পঞ্চায়েতে ঢুকে হামলা, ভাঙচুর, বোমা-গুলি লড়াই অভিযোগ ছিলই। গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটেছিল। পঞ্চায়েতে হামলার ঘটনায় বাবুইজোড় গ্রাম প্রঞ্চায়েত প্রধান নবদ্বীপ মণ্ডল মোট ২৩ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্ত সাপেক্ষে যে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে তাঁদের মধ্যে দু’জনের নাম এফআইআরে রয়েছে। তৃণমূল নেতা তথা খয়রাশোলের পর্যবেক্ষক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত করে যা ভাল বুঝেছে সেটাই করেছে।’’
এলাকা সূত্রে খবর, বাবুইজোড় পঞ্চায়েতের রাশ কার হতে থাকবে এই নিয়ে বহুদিনের লড়াই এলাকার তৃণমূল নেতা মৃণালকান্তি ঘোষ (কেদার) এবং আব্দুর রহমানের মধ্যে। জেলা নেতৃত্ব বহুবার দু’জনকে নিজেদের মধ্যে বিরোধ মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিলেও তা কার্যকর হয়নি। অভিযোগ, ১১ আসন বিশিষ্ট পঞ্চায়েতের মধ্যে ৮ সদস্য তাঁর অনুগামী হওয়ায় ওই পঞ্চায়েতের একক নিয়ন্ত্রণ ছিল আব্দুরের হাতেই। দল সূত্রে খবর, ঝামেলার নেপথ্য কারণ সেটাই।
শুক্রবার পঞ্চায়েতের হরিএকতলা গ্রামের রাস্তা সংস্কারের দাবিতে কেদার গোষ্ঠীর লোকজন প্রধানের কাছে এসেছিলেন। অভিযোগ, তাঁদের পথ আটকায় আব্দুরের অনুগামীরা। দু’পক্ষ হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ, হঠাৎ পঞ্চায়েতের ছাদ থেকে কেদারের লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। কেদার-গোষ্ঠী পিছু হটলেও পরে দল ভারী করে ফিরে এসে পঞ্চায়েতে ঢুকে ভাঙচুর চলায় ও বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। তবে মৃণালকান্তির থেকেও বহিরাগতদের এনে হামলায় জন্য উজ্জ্বল হক কাদেরিকে দায়ী করেন আব্দুর রহমান। উজ্জ্বল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন। প্রধান যে লিখিত অভিযোগ করেছেন সেখানেও এক নম্বর উজ্জ্বল হক কাদেরির নাম। কেদার বা মৃণালকান্তি ঘোষের নাম দেননি। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘নাম থাকুক আর নাই থাকুক প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Birbhum TMC TMC Conflict
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE