Advertisement
E-Paper

নাতির ‘মারে’ আহত ৭৫ বছরের ঠাকুমা

কোলেপিঠে বড় করেছেন নাতিকে। সেই নাতির বিরুদ্ধেই ঠাকুমা মারধরের নালিশ করলেন পুলিশের কাছে। ডান হাতে গুরুতর চোট নিয়ে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মহিলা শল্য বিভাগে ভর্তি হয়েছেন ৭৫ বছরের ঠাকুমা কানন মণ্ডল। সোমবার বিষ্ণুপুর শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ধূলাপাড়ার ঘটনা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৮ ০১:০৮
বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বৃদ্ধা। নিজস্ব চিত্র

বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে বৃদ্ধা। নিজস্ব চিত্র

কোলেপিঠে বড় করেছেন নাতিকে। সেই নাতির বিরুদ্ধেই ঠাকুমা মারধরের নালিশ করলেন পুলিশের কাছে। ডান হাতে গুরুতর চোট নিয়ে বিষ্ণুপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের মহিলা শল্য বিভাগে ভর্তি হয়েছেন ৭৫ বছরের ঠাকুমা কানন মণ্ডল। সোমবার বিষ্ণুপুর শহরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ধূলাপাড়ার ঘটনা। কাননদেবী বেসরকারি হাসপাতালের ম্যানেজার নাতি দীপক মণ্ডলের বিরুদ্ধে বিষ্ণুপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। দীপকের শাস্তি দাবি করেছেন তাঁর মা কল্পনা মণ্ডলও। যদিও দীপকের দাবি, তিনি রেগে তাঁর ঠাকুমার দিকে তসরের লাটাই ছুড়েছিলেন। মারধরের অভিযোগ ঠিক নয়। পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত জেনারেল ডায়েরি হয়েছে।

কাননদেবী জানান, তাঁর ছেলে রঞ্জনবাবুর হাত অবশ। তিনি কাজ করতে পারেন না। তাই সংসার টানতে এই বয়সেও তিনি চরকায় সুতো কাটার কাজ করেন। তাঁর দাবি, নাতি দীপককে সুতো কেটেই তিনি মাস্টার ডিগ্রি পর্যন্ত পড়িয়েছেন। নাতি বিয়ের পরে অন্যত্র ছিলেন। তিনি নাতি-নাতবৌমাকে ডেকে এনে নিজের ঘর তাঁদের ছেড়ে দিয়েছেন। নিজে থাকেন এক ফালি বারান্দায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘নাতি সুতো গোটানোর লাটাই দিয়ে আমার হাতে মারল। খুব যন্ত্রণা হচ্ছে। কিন্তু, বুক আগলে যাকে বড় করলাম, সেই নাতির এই ব্যবহার মনে বেশি দাগা দিয়েছে।’’ তাঁর আক্ষেপ, মারধরের পরে দীপক তাঁর চরকা ভেঙে দিয়েছেন। এরপর তিনি ও তাঁর পুত্রবধূ কল্পনাদেবী কী ভাবে সুতো কাটবেন, কী করে সংসার চালাবেন ভেবে পাচ্ছেন না।

কাননদেবী দাবি করেন, ‘‘আগেও নাতি মেরেছিল। কিন্তু, তখন থানা-পুলিশ করিনি। নাতি কিন্তু শোধরায়নি। এ বার পুলিশ-প্রশাসনের কাছে চাইছি, নাতিকে উচিত শাস্তি দিক।’’ সেই একই দাবি করছেন তাঁর পুত্রবধূ কল্পনাদেবীও। তিনি দাবি করেন, ‘‘নিজে না খেয়ে নাতির মুখে অনেকদিন ভাত তুলে দিয়েছেন আমার শাশুড়ি। তাঁকেই কি না, আমার ছেলে মারধর করল! জামা কাপড় কাচার সাবান ফুরিয়ে যেতে শাশুড়ি আমার বৌমাকে দু’কথা শুনিয়েছিল। তাতেই ছেলে শাশুড়িকে মারল। বার বার মাফ করা যায় না। ঠাকুমার দয়াতে তাঁর ঘরে থেকে মেরে তাঁকেই কি না হাসপাতলে পাঠাল! ছেলের উচিত শাস্তি চাই।’’ বৃদ্ধার নাতজামাই সিদ্ধার্থ বিট, সঞ্জয় দাস বলেন, ‘‘দীপক ও তাঁর স্ত্রী উচ্চশিক্ষিত হলেও তাঁদের নির্মম আচরণ লজ্জা দিচ্ছে।’’

আরও পড়ুন: মাকে ইট দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দিল ছেলে!

অভিযুক্তের দাবি, ‘‘ঘরে অশান্তিতে রেগে গিয়ে ঠাকুমার দিকে তসর গুটানোর লাটাই ছুড়েছিলাম। তাঁক মারতে যাব কেন? মিথ্যা অভিযোগ করেছে ঠাকুমা।’’ তবে, হাসপাতালের মহিলা শল্য বিভাগের সূত্রে খবর, ভারী কোনও জিনিস দিয়ে থ্যাঁতলানো হয়েছে বৃদ্ধার ডান হাত। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হলেও মানসিক ভাবে আঘাত পেয়েছেন তিনি। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাঁকে।

আরও পড়ুন: চাকরির টোপে ভিনদেশে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হল যুবককে

বৃদ্ধার চিন্তা, ‘‘চরকাটা ভেঙে দিয়েছে। হাতটাও কবে ভাল হবে জানি না। রোজগার করতে না পারলে আমরা খাব কী?’’

Assault Bishnupur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy