বাড়ি ফাঁকার সুযোগ নিয়ে এক বধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল বাঁকুড়ার ইন্দাস থানা এলাকায়। অভিযোগের তির স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ এখানেই শেষ নয়। ‘নির্যাতিতা’র দাবি, তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে, তাঁকে বাধা দেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। পরে বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বকে সঙ্গে নিয়ে ‘নির্যাতিতা’ বাঁকুড়ার পুলিশ সুপারের দফতরে লিখিত অভিযোগ জানান বলে খবর। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।
‘নির্যাতিতা’র পরিবার সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতে একাই ছিলেন ওই বধূ। সেই সময় আচমকা তাঁর বাড়ির দরজায় কেউ ধাক্কা দেন। দরজা খুলতে তিনি দেখেন বাইরে দাঁড়িয়ে প্রতিবেশী এক যুবক। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই ওই বধূকে জাপটে ধরেন তিনি, অভিযোগ এমনই। পরে বধূর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এলে ঘটনাস্থল ছেড়ে পালান অভিযুক্ত। অভিযোগ, তার পর থেকেই ওই বধূকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হয়।
‘নির্যাতিতা’র দাবি, ‘‘বিষয়টি থানায় জানালে আমার স্বামীকে খুন করার হুমকি দেয় ওই যুবক। অভিযুক্ত তৃণমূল করেন। তাই আমি বিষয়টি তৃণমূলের ব্লক নেতৃত্বকে জানাই। কিন্তু স্থানীয় তৃণমূল নেতারা আমাকে বিষয়টি থানায় জানাতে বারণ করেন। আমি অভিযুক্তের কঠোরতম শাস্তি চাই।’’ তাঁর আরও দাবি, মঙ্গলবার বিষয়টি তিনি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বকে জানান। তাঁরা এসে তাঁকে বাঁকুড়ায় পুলিশ সুপারের দফতরে নিয়ে যান। পরে ‘নির্যাতিতা’কে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসাও করানো হয়।
আরও পড়ুন:
-
দুর্গাপুরকাণ্ড: নির্যাতিতার সহপাঠীও গ্রেফতার! ধর্ষক এক জনই, প্রাথমিক তদন্তে মনে করছে পুলিশ
-
দুর্গাপুরকাণ্ড: ‘নির্যাতিতা’র সঙ্গে ফোনে কথা, ‘দোষীদের কঠোর শাস্তির জন্য সর্বস্তর থেকে চাপ দেব!’ বার্তা ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর
-
আনন্দবাজার ডট কম-এর লোগো ব্যবহার করে আবার ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে! এ বার বিষয়: দুর্গাপুর ‘গণধর্ষণ’
বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত অগস্তি বলেন, ‘‘অভিযুক্ত যুবক তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী। তাই নির্যাতিতাকে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমি নিজে ইন্দাস থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে ফোন করেছিলাম। তিনি বলেছেন ঘটনার কথা কিছুই জানেন না। আসলে ইন্দাস থানা সমস্ত কিছু জানার পরও কোনও পদক্ষেপ করেনি।’’
অভিযুক্ত যুবক তৃণমূল কর্মী হিসাবে দাবি করলেও, তা মানতে নারাজ তৃণমূলের ইন্দাস ব্লকের সভাপতি শেখ হামিদ। তাঁর দাবি, ‘‘পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়েরের ক্ষেত্রে আমাদের বাধা দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। খোঁজ নিয়ে জানলাম, ওই মহিলার সঙ্গে অভিযুক্তের পরিবারের কোনও পারিবারিক বিবাদ হয়েছে।’’ হামিদের আরও দাবি, ‘‘মহিলার এক আত্মীয় বিজেপির বুথ সভাপতি। এখন নির্বাচন আসায় বিজেপি নিজেদের ঘরের মহিলাদের নিয়েও নোংরা রাজনীতি করতে শুরু করেছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’’
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারির কথায়, ‘‘এই ঘটনার কথা ইন্দাস থানা জানত না। আমার দফতরে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে বলে শুনেছি। অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’