বালিকাকে দিনের পর দিন যৌন নির্যাতন। প্রথমে বাড়ির কেউই জানতে পারেননি। নাবালিকা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরে লোক জানাজানি হয়। ধরা হয় অভিযুক্তকে। যৌন হেনস্থা এবং ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতারির ৫ বছর পর অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল বাঁকুড়া জেলা আদালত। মঙ্গলবার শাস্তিঘোষণা হয়। ২০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয় দোষী রিকশাচালককে।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে খবর, ছাতনার বাসিন্দা বাসু কালিন্দি বাঁকুড়ার এক জনের রিকশা ভাড়া করে চালাতেন। ওটাই তাঁর রুজিরুটি। ২০২০ সালে এক দিন রিকশামালিকের নাবালিকা মেয়েকে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন তিনি। সেই শুরু। তার পর দশম শ্রেণির ছাত্রীকে ভয় দেখিয়ে বার বার ধর্ষণ করেন ওই রিকশাচালক। ভয়ে মেয়েটি কিছু বলতে পারেনি প্রথমে। তবে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার পর অভিযুক্তকে ধরে পরিবার। ২০২০ সালের ৫ ডিসেম্বর ওই ছাত্রীর পরিবার বাঁকুড়া মহিলা থানার দ্বারস্থ হয়। ঘটনায় পকসো আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। অভিযোগ দায়েরের পরের দিনই ওই রিকশাচালক বাসুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দেড় মাসের মাথায় ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ।
মামলা চলতে থাকে। গত ৫ বছরে মোট ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে আদালত। নিগৃহীতার সন্তানের ডিএনএ রিপোর্ট মিলে যায় অভিযুক্তের ডিএনএ-র সঙ্গে। আর এই সমস্ত তথ্যপ্রমাণ এবং সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বাঁকুড়া জেলা আদালতের বিচারক সোমবার বাসুকে দোষী সাব্যস্ত করেন। মঙ্গলবার তাঁকে ২০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় আদালত।
আরও পড়ুন:
বাঁকুড়া জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী রথীন দে বলেন, ‘‘অভিযুক্তর বিরুদ্ধে পকসো ধারায় মামলা রুজু করেছিল পুলিশ। আমাদের দেশের আইনে এমন অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ২০ বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ রয়েছে। বিচারক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে সেই সাজাই প্রদান করেছেন।’’ অন্য দিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবীর দাবি, ‘‘মামলার রায় ভাল ভাবে খুঁটিয়ে দেখা হবে। আসামি চাইলে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করব আমরা।’’