Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Electrocution

বারবার প্রাণহানি কেন, নিশানায় বিদ্যুৎ দফতর

বিদ্যুৎ বিভাগের বীরভূমের আঞ্চলিক অধিকর্তা কৃষ্ণকুমার মিশ্র অবশ্য তার ঝুলে থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এলাকায় জমায়েত ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের। রবিবার সদাইপুরের রেঙ্গুনি গ্রামে। নিজস্ব িচত্র

এলাকায় জমায়েত ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের। রবিবার সদাইপুরের রেঙ্গুনি গ্রামে। নিজস্ব িচত্র

দয়াল সেনগুপ্ত 
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ ০৯:২১
Share: Save:

রাস্তার উপরে ঝুলে থাকা ১১ হাজার ভোল্ট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎবাহী তারের সংস্পর্শে এসে রবিবার সদাইপুরের রেঙ্গুনি গ্রামে মৃত্যু হয়েছে উত্তরপ্রদেশেদের দুই যুবকের। ওই ঘটনার জন্য বিদ্যুৎ দফতরকে সম্পূর্ণ দায়ী করে স্থানীয়দের দাবি, বিপদের আশঙ্কা করেই বহুবার বিদ্যুৎবাহী তার উঁচুতে তোলার জন্য আবেদন করা হয়েছে দফতরের কাছে। কিন্তু সে কথা দফতর কানে তোলে নি বলে ক্ষোভ স্থানীয়দের। তাঁদের অভিযোগ, বিদ্যুৎ কর্মীদের গাফিলতিরই বলি হল দু’টি প্রাণ। প্রশ্ন উঠেছে, এত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎবাহী তার রাস্তার উপরে ঝুলে পড়েছিল কেন?

বিদ্যুৎ বিভাগের বীরভূমের আঞ্চলিক অধিকর্তা কৃষ্ণকুমার মিশ্র অবশ্য তার ঝুলে থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলছেন, ‘‘তার ঝুলে ছিল না। তবে রাস্তা উঁচু হওয়ায় সমস্যা হয়েছে কি না সেটা তদন্ত করে দেখতে হবে। পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়ার আগে সেটা বলা সম্ভব নয়।’’ গ্রামবাসীদের পাল্টা দাবি, একটি লরির উপরে থাকা ধান কাটার যন্ত্র বিদ্যুতের তার ছুঁয়ে যাচ্ছে এমন উচ্চতায় কি এত উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতবাহী তার থাকে? তাঁদের ক্ষোভ, বিষয়টিকে লঘু করে দায় এড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বিদ্যুৎ দফতরের তরফে।

জেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু এবং তার জেরে বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠা নতুন নয়। গত বছর পুজোর ঠিক আগে সিউড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ট্রান্সফর্মারে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় নেপাল বেশরা নামে দফতরের এক ঠিকা শ্রমিকের। বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ করে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার সময় হঠাৎ শর্টসার্কিট হয়ে যায়। কিন্তু সেটা কীভাবে ঘটল তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। দুর্ঘটনার পরেই দফতরের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল। সরব হয়েছিল ঠিকা বিদ্যুৎকর্মী সংগঠনও। তৃণমূলের ওই শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের বক্তব্য ছিল ট্রান্সফর্মার ‘শাট ডাউন’ করার পর কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটে? একটি ত্রিপাক্ষিক কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন তাঁরা।

আঞ্চলিক অধিকর্তা কৃষ্ণকুমার মিশ্র তখন জানিয়েছিলেন, শাট ডাউন নেওয়া হয়েছিল। দু’ঘন্টা ধরে কাজও হচ্ছিল। সেই সময় কোনও দোকানে হয়তো জেনারেটর চালানো হয়েছিল। তা থেকেই হয়তো বিপত্তি হয়েছে। তবে প্রশ্ন তাতে থামেনি। সংগঠনের দাবি ছিল, সময়ের সঙ্গে গ্রাহক সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু ঠিকা শ্রমিকদের সংখ্যা বাড়েনি। সঙ্গে রয়েছে দ্রুত কাজ শেষ করার চাপ। এ ছাড়া ঠিকা শ্রমিকদের কাজের ক্ষেত্রে নজরদারি চালানো, নিয়মিত প্রশিক্ষণ না দেওয়া, নিরাপত্তার খেয়াল না রাখার অভিযোগও ছিল। রেঙ্গুনির ক্ষেত্রে তেমন কিছু রয়েছে কি না তা জানার দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Electrocution dubrajpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE