Advertisement
E-Paper

‘৭৭ সাল থেকে দল করছি, অনেক রাখাল-বাগাল আছে, রাজনীতি কারও বাপের নয়’, নাম না-করে নিশানা কেষ্টর?

বুধবার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, মাদ্রাসায় কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল বীরভূমের শিক্ষাসেল। সেখানে অনুব্রত ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, চন্দ্রনাথ সিংহ প্রমুখ।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২৫ ২২:০৬
photo of Anubrata Mondal

বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে অনুূব্রত মণ্ডল। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।

১৯৭৭ সাল থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত তিনি। একমাত্র লক্ষ্য ছিল সিপিএমকে রাজ্যের কুর্সি থেকে সরানো। সেই কাজ করে দেখিয়েছেন। বুধবার এমনটাই দাবি করলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। সেই সঙ্গে জানালেন, রাজনীতিতে এখন অনেক ‘রাখাল-বাগাল’ এসেছেন। তাঁরা অনেক কথা বলছেন। কিন্তু রাজনীতিতে সকলেরই সমান অধিকার রয়েছে। তাই কারও কথায় কিছু যায় আসে না। অনুব্রত কারও নাম করেননি। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, তাঁর নিশানায় ছিলেন দলের কোর কমিটির অন্যতম সদস্য কাজল শেখ (অনুব্রত বিরোধী হিসাবেই বীরভূমে পরিচিত, যদিও কাজল নিজে সে কথা অস্বীকার করেন)।

বুধবার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, মাদ্রাসায় কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল বীরভূমের শিক্ষাসেল। সেখানে অনুব্রত ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, কৃষি-বিপণনমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ প্রমুখ। গত তিন দিন ধরে বীরভূমের তিন মহকুমায় মহামিছিল করছে তৃণমূল। অনুব্রত এই মিছিলের ডাক দিলেও পরে কোর কমিটি জানায়, দলগত ভাবে এই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং অনুব্রতের সিদ্ধান্তে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। অনুব্রত এ প্রসঙ্গে বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহ থেকে বলেন, ‘‘আমার তো বলার কিছু নেই। দলের কর্মীরা চাঙ্গা হয়েছে। বাসি হয়ে গিয়েছিল। আবার নতুন উদ্যমে কাজ শুরু হয়েছে।’’

রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্কের প্রসঙ্গ উঠলে অনুব্রত বলেন, ‘‘আমি ’৭৭ সাল থেকে দল করছি। গাইবাছুরে অনেক ভোট করিয়েছি। ’৭৭ সাল থেকে গাইবাছুরে ভোট মানে বুঝে নিন। আমার প্রতিজ্ঞা ছিল সিপিএমকে তাড়াব। তাড়িয়েছি। তখন আমার সঙ্গে কেউ ছিল না।’’ নাম না করে এর পর অনুব্রত বলেন, ‘‘বীরভূমের মানুষ জানে, আমি কী করেছি। অনেক রাখাল-বাগাল আছে। কে কী বলছে, তাতে কিছু হয় না। কেউ কিছু বলতেই পারে, রাজনীতি তো কারও বাপের নয়। এটা সকলের।’’

বীরভূমে অনুব্রতের সঙ্গে কাজলের ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। ২০২২ সালে গরুপাচার মামলায় কেষ্ট (অনুব্রতের ডাক নাম) গ্রেফতার হওয়ার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বীরভূমে কোর কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন। তাতে রাখা হয়েছিল কাজলকে। অনুব্রতহীন বীরভূমে তৃণমূলের সংগঠনকে ধরে রেখেছিল এই কোর কমিটিই। তাদের তদারকিতেই লোকসভা নির্বাচনেও বীরভূমে ভাল ফল করে তৃণমূল। অন্য দিকে, গ্রেফতারির পরেও অবশ্য দলের জেলা সভাপতি পদে ছিলেন অনুব্রত। অভিযোগ, ফেরার পরে তিনি কোর কমিটিকে এড়িয়ে কাজ করছিলেন। যার ফলে দলের অন্দরে একাংশের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। দীর্ঘ দিন কোর কমিটির বৈঠকও হয়নি বীরভূমে। এই নিয়ে বিতর্কের মাঝেই ‘পদ’ কেড়ে নেওয়া হয় অনুব্রতের। তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব জানিয়ে দেয়, বীরভূমে জেলা সভাপতির পদ তুলে দেওয়া হচ্ছে। থাকছে শুধু কোর কমিটি, কাজলের মতোই অনুব্রত যার অন্যতম সদস্য মাত্র। এর পর কোর কমিটির যে বৈঠক ডাকা হয়েছিল, অনুব্রত সেখানে ছিলেন। সূত্রের খবর, বৈঠক চলাকালীন দলনেত্রীর সঙ্গে তাঁর ফোনেও কথা হয়। বীরভূম তৃণমূলের পক্ষ থেকে বার বার দাবি করা হচ্ছে, দলের অন্দরে আর কোনও বিভাজন নেই। কোর কমিটির নেতৃত্বে কাজ এগোচ্ছে সুষ্ঠু ভাবে। কিন্তু বুধবার বিতর্ক আবার উস্কে দিল অনুব্রতের মন্তব্য।

Anubrata Mondal Birbhum TMC Core Committee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy