Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মানুষের কাছে যেতে ইউটিউব হাতিয়ার বাঁকুড়া পুলিশের

এলাকায় গিয়ে শিবির করা, ফুটবল ম্যাচের আয়োজন, পদযাত্রা, স্কুল বা কলেজে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলা— অনেক ভাবে মানুষজনের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করে পুলিশ।

পুলিশের ইউটিউব চ্যানেল। নিজস্ব চিত্র

পুলিশের ইউটিউব চ্যানেল। নিজস্ব চিত্র

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৮
Share: Save:

ভার্চুয়াল দুনিয়ায় আগেই পা রেখেছিল বাঁকুড়া পুলিশ। নিজস্ব ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ ইত্যাদির পরে চালু হল জেলা পুলিশের নতুন ইউটিউব চ্যানেল। গত এক মাসে বেশ কয়েকটি ভিডিও আপলোড করা হয়েছে ‘বাঁকুড়া ডিস্ট্রিক্ট পুলিশ’ চ্যানেলে। কোনওটি দেখেছেন আড়াই হাজারেরও বেশি মানুষ, কোনওটির দর্শক সংখ্যা হাজার দেড়েক। জেলা পুলিশ জানাচ্ছে, জনসংযোগের এই হাতিয়ারটি কাজে লাগিয়ে আরও অনেক মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

হঠাৎ ইউটিউব চ্যানেল কেন? বাঁকুড়া জেলা পুলিশের ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ বা ট্যুইটারে সাধারণ মানুষ নিজেদের অভাব অভিযোগ জানাতে পারেন। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলছেন, ‘‘ইউটিউব অত্যন্ত জনপ্রিয় ওয়েবসাইট। নানা তথ্য জানতে প্রচুর মানুষ ইউটিউবের ভিডিও দেখেন। সেখানে পুলিশকে পেলে আরও সুবিধা হবে।’’ এই ভাবনা থেকেই চ্যানেলের পথ চলার শুরু। অনেক আগেই ইউটিউব-এ অ্যাকাউন্ট খুলেছিল জেলা পুলিশ। তবে সেটা ছিল পরীক্ষামূলক। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘সম্প্রতি জেলা পুলিশের লোগো দিয়ে কিছু ভিডিও ইউটিউব-এ পোস্ট করেছিলাম আমরা। তার পরেই পেজটিকে আরও কাজে লাগানোর পরিকল্পনা মাথায় আসে।’’

এলাকায় গিয়ে শিবির করা, ফুটবল ম্যাচের আয়োজন, পদযাত্রা, স্কুল বা কলেজে গিয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলা— অনেক ভাবে মানুষজনের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করে পুলিশ। হালফিলের প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সেই লক্ষ্যের দিকে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা এই ইউটিউব চ্যানেল। জেলা পুলিশের কর্তাদের মতে, ইউটিউবে প্রচারের কিছু সুবিধা রয়েছে। ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করলে সেটা থেকে যায়। যখন খুশি, যে কেউ গিয়ে দেখতে পারেন। কোনও ভিডিও তৈরি করে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে প্রোজেক্টর দিয়ে দেখালে যত ঝঞ্ঝাট করে যত মানুষের কাছে পৌঁছনো যায়, ইউটিউবে আপলোড করে দিলে অনেক কম আয়াসে অনেক বেশি মানুষের কাছে যাওয়া সম্ভব। রয়েছে এক ঢিলে অনেক পাখি মারার সুযোগও— শুধু ইউটিউব-এ ভিডিও আপলোড করলেই তার ‘লিঙ্ক’ দিয়ে সহজে ভিডিও-টি ছড়িয়ে দেওয়া যায় বিভিন্ন সোস্যাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইটে।

কী থাকছে এই ইউটিউব চ্যানেলে? জেলার নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের পাশে দাঁড়াতে বাঁকুড়া পুলিশ ‘উজ্জীবন’ প্রকল্প চালু করেছে। আপাতত ওই প্রকল্পটি নিয়ে নানা ভিডিও পুলিশের তরফে ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হয়েছে। সুখেন্দুবাবু জানাচ্ছেন, জেলা পুলিশের নানা উদ্যোগের সঙ্গে জেলার নানা বিষয়ও ভিডিও-র মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। চ্যানেলে রয়েছে সারেঙ্গা থানা সংক্রান্ত একটি ভিডিও। তাতে থানা বিষয়ক তথ্যের পাশাপাশি থানা এলাকার বিভিন্ন পর্যটনস্থলের ছবিও রয়েছে। বাঁকুড়ার এক যুবক সম্প্রতি পুলিশের ওই ভিডিওগুলি দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সারেঙ্গায় বড়দি পাহার হ্রদ রয়েছে। সেটা যে এমন সুন্দর আগে জানতামই না। ওই ভিডিও-তে দেখার পরেই সেখানে যাওয়ার তর সইছে না।’’

ওই যুবকের মতো অনেকেই নিয়মিত আপডেট পাওয়ার জন্য পুলিশের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেছেন ইতিমধ্যেই। খুব শীঘ্রই চ্যানেলটি আরও সাজিয়েগুছিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, “এই জেলার নানা প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে বহু শিল্পের পরম্পরা। জেলার ঐতিহ্যবাহী ওই শিল্প এবং শিল্পীদের সামনে আনতেও আমরা ইউটিউব চ্যানেলকে হাতিয়ার করতে চাই।”

বাঁকুড়া শহরের বুদ্ধিজীবীদের সংগঠন ‘আমরা সবাই একসাথে’-র সাধারণ সম্পাদক সমীরণ সেনগুপ্ত বলেন, “মুঠো ফোনে এখন গোটা দুনিয়া বন্দি। সেই দিক দিয়ে বাঁকুড়া পুলিশ একধাপ এগিয়ে গেল। মানুষকে সচেতন করার ব্যাপারে পুলিশের এটা বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Public Bankura District Police YouTube
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE