Advertisement
E-Paper

‘আপ্যায়ন’ করবেন মহিলারাই: অনুব্রত

সোমবার সাঁইথিয়ায় মহিলা কর্মীদের জনসভা থেকে মনোনয়ন জমা দিতে আসা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হাতে জল-বাতাসা ধরানোর ‘টোটকা’ শুনিয়েছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:০২
আহ্বান: জনসভায় অনুব্রত মণ্ডল। খয়রাশোলে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।

আহ্বান: জনসভায় অনুব্রত মণ্ডল। খয়রাশোলে। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত।

গুড়-জলের পরে জল-বাতাসা। জল, বাতাসা দিয়েই মনোনয়ন-পর্বে বিরোধীদের ‘আপ্যায়ন’ করবেন দলের মহিলা কর্মীরা। পঞ্চায়ের ভোটের মুখে ‘নতুন দাওয়াই’ শোনা গেল অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডলের মুখে।

সোমবার সাঁইথিয়ায় মহিলা কর্মীদের জনসভা থেকে মনোনয়ন জমা দিতে আসা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হাতে জল-বাতাসা ধরানোর ‘টোটকা’ শুনিয়েছিলেন। মঙ্গলবার খয়রাশোলে সে প্রসঙ্গ না তুললেও বিরোধীদের ঠেকাতে প্রচুর সংখ্যক মহিলার উপস্থিতি মনোনয়ন-পর্বের অন্যতম কৌশল— হেঁয়ালিতে ফের তা জানিয়ে দেন অনুব্রত মণ্ডল।

মহিলাদের উন্নতির জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী কী প্রকল্প এনেছেন, সেটা জানানোর পাশাপাশি কী ভাবে মহিলারা নির্বাচনে গুরুত্বপূ্র্ণ ভূমিকায় আসতে পারেন, নিয়ম করে সেটাই ফি সভায় বোঝাচ্ছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত। সোমবার সাঁইথিয়ার সভায় তাঁদের ভূমিকা বোঝাতে গিয়েই জল–বাতাসা প্রসঙ্গ টানেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘ভয় পাবেন না। বরং রুখে দাঁড়াবেন। সাত দিন ধরে মনোনয়ন দাখিল হবে। সাবের আলির নেতৃত্বে আড়াই-তিন হাজার মহিলা সামনের সারিতে থাকবেন। বাকিটা আমরা দেখে নেব। আপনাদের হাতে জল, বাতাসা থাকবে। সেটাই শেষ কথা। তাতেই ভোট হয়ে যাবে। আপনারা মা মহামায়া। আপনারা থাকলে সব জয় করে নেব।’’

বিরোধীরা তো বটেই। বিপক্ষকে মনোনয়ন দাখিলের সুযোগ না দিতেই এমন ইঙ্গিত জেলা সভাপতির, আড়ালে মানছেন তৃণমূলের অন্য নেতারা। মঙ্গলবার খয়রাশোলেও প্রায় একই সুর ছিল অনুব্রতর গলায়। এ দিন বিকেলে খয়রাশোলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাকক্ষের সামনের মাঠের সভা থেকে উপস্থিত কয়েক হাজার মহিলার উদ্দেশে অনুব্রতর বার্তা, ‘‘সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ৫০ শতাংশ মহিলা। আপনারা সামনের সারিতে থাকবেন। সাত দিন যদি মনোনয়ন হয়, ৩ থেকে ৪ হাজার মহিলা সমবেত হয়ে আপনারাই শেষ কথা বলবেন। আপনারাই সমানের সারিতে থেকে মনোনয়ন দাখিল করাবেন। পেছনে থাকবে অন্য লোক।’’

অনুব্রতর ইঙ্গিত বুঝে নিয়ে প্রতিরোধের হুঁশিয়ারি মিলেছে বিরোধী শিবির থেকে। বিজেপির জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের কথায়, ‘‘আসলে তো উনি বলতে চাইছেন আমাদের মনোনয়ন জমা করতে না দিয়ে জল, বাতাসা খাইয়ে বাড়ি পাঠাবেন। তা বুঝে আমরাও অন্য কৌশল নেব।’’ কী সেটা, তা ভাঙতে চাননি তিনি। একই মত বাম শিবিরেও। পঞ্চায়েত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ধরে রাখতে বুথস্তরের কর্মী সম্মেলন হয়েছে। হয়েছে ব্রাহ্মণ সম্মেলন, মৌলবী সম্মলেন, আদিবাসী সম্মলেনও। বাকি ছিল প্রতিটি ব্লকে আলাদা করে দলের মহিলা সেলকে চাঙ্গা করা। সেই কর্মসূচি চলছে। চলতি মাসের ৫ তারিখ দুবরাজপুরে তৃণমূলের প্রথম মহিলা জনসভা থেকেও সেটাই স্পষ্ট করেছিলেন দলের জেলা সভাপতি অনুব্রত। অন্য সভার মতো খয়রাশোলের সভা থেকেও আবাস যোজনায় বাড়ি প্রাপকদের কাছ থেকে টাকা চাইলে কোনও পঞ্চায়েত সদস্য বা কর্মীকে রেয়াত করা হবে না তা মনে করিয়ে দেন অনুব্রত। অনুব্রতর কথায়, ‘‘মেম্বাররা আবাস যোজনার বাড়ির জন্য পয়সা চাইবেন না। আমি কিন্তু ছেড়ে কথা বলব না। থানায় ভরে দেব। সে যত বড়ই কর্মী হোক। ছেড়ে দেব না। আমাকে বলবেন। আপনাদের পাওনা জিনিসে হাত দিলে আমি বসে থাকব না।’’ জনসভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, বিধায়ক নরেশ বাউড়ি, গদাধর হাজরা, পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে, জেলা সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়, জেলা মহিলা সভানেত্রী সাহারা মণ্ডল, ব্লক সভাপতি সুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ব্লক কার্যকরী সভাপতি দীপক ঘোষ, পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী অসীমা ধীবর, ব্লক মহিলা সভানেত্রী প্রান্তিকা চট্টোপাধ্যায়।

Anubrata Mandal Panchayet election অনুব্রত মণ্ডল তৃণমূল TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy