Advertisement
E-Paper

আংশিক ভোটে এগিয়ে ‘বিজয় মিছিল’

২০১৩-র পঞ্চায়েত ভোটে জেলার মধ্যে এক মাত্র ওন্দার রামসাগর পঞ্চায়েত দখল করতে পেরেছিল বিজেপি। এ বারে সেখানে এই অবস্থা।

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৮ ০০:৩২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ভোট হয়েছে পঞ্চায়েতের দু’টি আসনে। আর দু’টিতেই জয়ী হয়েছে বিজেপি। কিন্তু হাসি নেই দলের নেতাদের মুখে। কারণ, ওই পঞ্চায়েতের বাকি ১৮টি আসনে তাঁদের কোনও প্রার্থীই নেই। ২০১৩-র পঞ্চায়েত ভোটে জেলার মধ্যে এক মাত্র ওন্দার রামসাগর পঞ্চায়েত দখল করতে পেরেছিল বিজেপি। এ বারে সেখানে এই অবস্থা।

কেন? বিজেপির অভিযোগ, রামসাগরে বিজেপির জয় নিশ্চিত ছিল বুঝেই ব্লক অফিসের সামনে দুষ্কৃতীদের দাঁড় করিয়ে মনোনয়ন দিতে দেয়নি শাসকদল। তা অবশ্য মানছে না তৃণমূল। শাসকদলের নেতাদের দাবি, সাংগঠনিক দুর্বলতার জন্যই পঞ্চায়েতের ১৮টি আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি।

তবে দু’টি আসনে প্রার্থী দিয়ে দু’টিতেই জয় পাওয়াটা খাটো করে দেখতে চান না বিজেপির নেতারা। দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক অমরনাথ শাখা বলেন, “দু’টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দু’টিতেই জিতেছি। এটাই প্রমাণ করছে, সব আসনে প্রার্থী দেওয়ায় যদি বাধা না আসত, তাহলে তৃণমূল-শূন্য পঞ্চায়েত গড়তাম। নৈতিক জয় আমাদেরই হয়েছে।’’ রামসাগরে বিজয় মিছিল করার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলে তিনি জানান।

জেলার আরও কয়েকটি পঞ্চায়েতেও দেখা গিয়েছে এমনটা; সব আসনে ভোট হয়নি, কিন্তু যে ক’টিতে হয়েছে তার মধ্যে শাসকদলের থেকে বিরোধী প্রার্থীরা এগিয়ে। যেমন ওন্দা ব্লকেরই শানতোড়। ওই পঞ্চায়েতে আসন ১৬টি। ৫টিতে বিরোধী প্রার্থী ছিল না। ভোট হয়েছে ১১টিতে। তার মধ্যে বিজেপি জিতেছে ৬টি আসনে। ওন্দার নিকুঞ্জপুর গ্রামপঞ্চায়েতের ১৪টি আসন। ভোট হয়েছিল ৩টি আসনে। তৃণমূল, বিজেপি ও নির্দল প্রার্থী একটি করে আসন পেয়েছেন।

গঙ্গাজলঘাটি ব্লকেও উদাহরণ মিলছে। বানাশুড়িয়া, ভক্তবাঁধ ও পিড়রাবনি পঞ্চায়েত। বানাশুড়িয়ায় ১৪টি আসনের মধ্যে লড়াই হয়েছে ৩টিতে। দু’টিতে জিতেছে বিজেপি, একটিতে তৃণমূল। ভক্তবাঁধে ১২টি আসনের মধ্যে ৪টিতে ভোট হয়েছে। ৩টি গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে, একটি পেয়েছে তৃণমূল। পিড়রাবনির ১৩টি আসনের মধ্যে ৫টিতে লড়াই হয়েছে। সেখানেও বিজেপি ৩টি ও তৃণমূল একটি আসনে জয়ী হয়েছে। জেলার এমন কয়েক’টি পঞ্চায়েতও রয়েছে, যেখানে আংশিক আসনে ভোট হয়েছে আর তার মধ্যে তৃণমূল ও বিরোধীরা সমান সমান আসন পেয়েছেন।

এমন ফলাফল কেন?

বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকার বলেন, “দিনের আলোয় প্রকাশ্য রাজপথে হাতে অস্ত্র নিয়ে ভোটের নামে গুন্ডামি চালিয়েছে তৃণমূল। মানুষ ওই দলের প্রকৃত রূপটা জেনে ফেলেছেন। তাই যেখানে ভোট হয়েছে, ওঁদের বিপক্ষে রায় দিয়েছেন।’’ বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, “জেলার সব আসনে ভোট হলে আরও অনেক পঞ্চায়েতেই যে উল্টো ফল হতো, এই সমস্ত দেখেই সেটা
বোঝা যাচ্ছে।’’

জেলা তৃণমূল সভাপতি অরূপ খান অবশ্য বিজেপির এই সমস্ত দাবি মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “সমস্ত বিরোধীরা একজোট হয়ে রামধনু জোট গড়েছিল। তাই কিছু জায়গায় দু’-একটা আসন পেয়েছে। তবে আমরা এ নিয়ে মোটেই চিন্তিত নই। আমাদের লক্ষ্য আগামী নির্বাচনগুলিতে আরও ভাল ফল করা।”

আংশিক আসনে ভোট হওয়া কয়েকটি পঞ্চায়েতে কেন দলের প্রার্থীরা পিছিয়ে পড়লেন, তা নিয়ে দলীয় স্তরে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন অরূপ। তিনি জানান, রবিবার জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব এই ব্যাপারে বৈঠকেও বসতে চলেছেন। অরূপ বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটে জেলার সামগ্রিক ফলাফলের রিপোর্ট রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছি। জেলা জুড়ে অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছি আমরা। তা সত্ত্বেও কিছু জায়গায় পরাজয়ের কারণ নিশ্চয় খতিয়ে দেখব। সব ভোটের পরেই আমরা এটা নিয়মমাফিক করে থাকি।”

West Bengal Panchayat Elections 2018 Panchayat Poll BJP TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy