গ্রাম ছেড়ে এখন শহরে থাকেন ভুবন বাদ্যকর। নিজস্ব চিত্র।
এক সময় তাঁর ঠিকানা ছিল বীরভূমের দুবরাজপুরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কুড়ালজুড়ি গ্রাম। কিন্তু সেই গ্রামে এখন আর থাকেন না ‘কাঁচা বাদাম’ খ্যাত ভুবন বাদ্যকর। গ্রামে সদ্য তৈরি করা তাঁর সাধের বাড়ি পড়ে রয়েছে তালাবন্ধ অবস্থায়। এখন ভুবনের ঠিকানা দুবরাজপুর শহর।
কেন ঠিকানা বদল? প্রশ্ন করতেই আনন্দবাজার অনলাইনকে একরাশ ক্ষোভের কথা শোনালেন ভুবন। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ ভাবেন যে, ‘কাঁচা বাদাম’ গান ভাইরাল হওয়ার পর আমার অনেক টাকাপয়সা হয়েছে। কিন্তু আমার টাকাপয়সা বেশি নেই। যেটুকু পেয়েছি বাড়ি করে ফেলেছি। তবু অনেকে ভাবেন যে আমার অনেক টাকা হয়েছে।’’
নিজের গ্রামেই ‘খারাপ’ অভিজ্ঞতা হয়েছিল ভুবনের। শোনালেন সেই কথা। তাঁর দাবি, ‘‘অনেকে ভাবেন আমার অনেক পয়সা। কিন্তু ভুবনের তেমন পয়সা হয়নি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘দাবি মতো’ টাকাপয়সা না দিতে পারায় বাড়ি থেকে তাঁর আই ফোন নিয়ে চলে গিয়েছিল কয়েক জন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার ফোন নিয়ে চলে গিয়েছিল, তাই এখানে পালিয়ে এসেছি। ওরা আমার কাছে পয়সা চেয়েছিল। দিতে পারিনি। তার পর আমি যখন শুয়েছিলাম তখন আমার আই ফোন নিয়ে পালিয়েছিল।’’ ভুবন জানিয়েছেন, এখন দুবরাজপুর শহরে একটি চাকরি করে তাঁর ছেলে। তাঁর সংযোজন, ‘‘ছেলে এখানে ডিউটি করছে। তাই এখানে রয়েছি।’’
ভুবনের এমন অভিজ্ঞতার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা আখিরুল হোসেন খান। তাঁর কথায়, ‘‘ভুবনদা মানে সকলের ‘বাদাম কাকু’ এই গ্রামের ছেলে। আমরা চাই, গ্রামে ফিরে আসুন। উনি এক জন সত্যিকারের শিল্পী। আমরা চাই ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসুন। উনি যখন টাকা আয় করছিলেন, তখন ওঁর থেকে অনেকে সাহায্য নিয়েছিলেন। এর পর ওঁর মোবাইলও কেউ নিয়ে নিয়েছিল, সেটা শুনেছি। পরে উনি তা ফেরত পেয়েছেন।’’
কুড়ালজুড়ি গ্রামে থাকাকালীন ভুবনের সর্ব ক্ষণের সঙ্গী ছিলেন দিলফরাজ কাজি। তাঁর অবশ্য বক্তব্য, ‘‘ওঁর জন্য গোটা গ্রাম গর্বিত। ওঁর জন্য গোটা গ্রামকে চিনেছে সকলে। গ্রাম থেকে জোরজবরদস্তি কেউ চাঁদা চায়নি ওঁর কাছে। উনি এখানে নেই, আমার খুব খারাপ লাগে। উনি ফিরে এলে ওঁকে স্বাগত জানাব।’’
তাঁকে নিয়ে গ্রামবাসীদের আর্তির কথা শুনে ভুবন বলছেন, ‘‘গ্রামের মানুষ তো চাইবেনই যে আমি ফিরে যাই। কারণ, গ্রামের মানুষ আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন। তাঁরা আমাকে ভালবাসেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy