Advertisement
E-Paper

ওসিকে সরানোর দাবি পক্ষপাতের অভিযোগে জমায়েত

ওন্দার রামসাগরে দিন দশেক আগের ওই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে এই পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার বাঁকুড়া পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
পথে: পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বাঁকুড়া পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে কর্মীদের সঙ্গে বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার। নিজস্ব চিত্র।

পথে: পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বাঁকুড়া পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে কর্মীদের সঙ্গে বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার। নিজস্ব চিত্র।

এক তৃণমূল কর্মীর মাথা ফাটানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছিলেন ১৩ জন বিজেপি নেতা-কর্মী। অথচ বিজেপি-র দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর, কর্মীদের বাড়িতে ঢুকে হামলার অভিযোগে পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। ওন্দার রামসাগরে দিন দশেক আগের ওই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে এই পক্ষপাতের অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার বাঁকুড়া পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাল বিজেপি।

এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার, রাজ্য সম্পাদক শ্যামাপদ মণ্ডল, দলের রাঢ়বঙ্গ জোনের আহ্বায়ক নির্মল কর্মকার, বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র, বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ প্রমুখ।

রাজ্য বিজেপি নেতা সুভাষবাবুর অভিযোগ, “কেবল ওন্দা নয়, গোটা জেলা জুড়েই বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের দমিয়ে দিতে পুলিশ মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দিচ্ছে। আমাদের কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তা নেওয়া হচ্ছেই না, উল্টে তৃণমূলের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসিয়ে জেলে ভরে দেওয়া হচ্ছে।” বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এক কর্তা, “বিজেপির দাবি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গত ২০ জানুয়ারি রামসাগরে তৃণমূলের জনসভা চলাকালীন বিজেপি-র দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে শাসকদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। সে দিনই জয়পুরেও বিজেপি-র একটি অফিসে ভাঙচুর তলে বলে অভিযোগ। ওই গোলমালের মধ্যে রামসাগরে তাঁদের এক দলীয় কর্মীর মাথা বিজেপি কর্মীরা ফাটিয়ে দেন বলে পাল্টা অভিযোগ তোলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

তৃণমূলের সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই রাতেই ওন্দা মণ্ডলের দুই নেতা-সহ ১৩ জন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বিজেপির অভিযোগ, সেই রাতে তৃণমূল কর্মীদের বাধায় তাঁরা থানায় অভিযোগ জানাতে ঢুকতে পারেননি। কিন্তু পরের দিন বাঁকুড়া জেলা পুলিশের ওয়েবসাইটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান বলে দাবি করেন বিজেপি-র বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। তাহলে কেন পুলিশ তৃণমূলের বিরুদ্ধে এত দিনেও ব্যবস্থা নিতে পারল না, প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।

বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, কয়েক বছর আগেই বাঁকুড়া জেলা পুলিশের ওয়েবসাইটটি নতুন ভাবে চালু করা হয়। পুলিশ কর্তারা জানিয়েছিলেন, ওয়েবসাইটে অভিযোগ জানালে তা গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। তাহলে তাঁদের করা অভিযোগের অবহেলা কেন হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। প্রতিবাদে ওন্দা থানার ওসি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে বরখাস্ত করা-সহ বেশ কিছু দাবি নিয়ে তাঁরা এ দিন জেলা পুলিশ-কর্তাদের কাছে স্মারকলিপি দেন। স্বপনবাবুর অভিযোগ, “ওন্দা থানার ওসি শাসকদলের হয়ে কাজ করছেন। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমাদের দলের নির্দোষ ছেলেদের নানা কেসে জড়িয়ে দিচ্ছেন। আমাদের অভিযোগ নিতেই চান না তিনি।” যদিও ওন্দা থানা অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এ দিন সকালে বাঁকুড়া স্টেশন এলাকা ও লালবাজার থেকে দু’টি পৃথক মিছিল করে কয়েক হাজার বিজেপি কর্মী চাঁদমারিডাঙায় পুলিশ সুপারের অফিসের সামনে জমায়েত করেন। বিবেকানন্দবাবুর দাবি, ‘‘এ দিন অন্তত ১৫ হাজার দলীয় কর্মী ঘেরাও কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।’’ যদিও পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোতায়েন পুলিশ কর্মীদের একাংশের দাবি, সভায় হাজার তিনেক বিজেপি কর্মী এসেছিলেন।

আগে জেলায় বিজেপি-র এই ধরনের কর্মসূচিতে কর্মীদের জোর করে সরকারি অফিসে ঢোকার চেষ্টাকে ঘিরে গণ্ডগোল বেধেছে। তাই ঝুঁকি না নিয়ে এ দিন কাঁদানে গ্যাস, জল কামান নিয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী পুলিশ সুপারের অফিস ঘিরে রেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত অবশ্য শান্তিপূর্ণ ভাবেই কর্মসূচি মেটে। পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে দেওয়া হয় বিজেপি নেতা-কর্মীদের।

এ দিন দুপুর প্রায় ১২টা থেকে তিনটে পর্যন্ত পুলিশ সুপারের দফতরে যাওয়ার মূল দরজার বাইরে ঘেরাও করে সভা করে বিজেপি। শেষে সুভাষবাবু-সহ বিজেপির প্রতিনিধিরা পুলিশ সুপারের দফতরে স্মারকলিপি জমা দিয়ে আসার পরে ঘেরাও ওঠে।

বিজেপি-র প্রাক্তন পুরুলিয়া জেলা সভাপতি বিকাশ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন পুলিশকে হুঁশিয়ারী দেন সভায়। তিনি বলেন, ‘‘দরকার পড়লে পুলিশের পা ভেঙে দেব আমরা।’’ তা নিয়ে শাসকদলের অনেকেই সমালোচনা করেন। এই রকম উস্কানিমূলক বক্তব্যে শান্তি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

আর জেলা সভাধিপতি তৃণমূলের অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা করলে আমরা কি ওদের ফুল দেব? ওরা চুপ করে গেলে, মারও খাবে না।’’

Gherao BJP Police Super
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy