ছিলেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, তথা পুরসভার উপপুরপ্রধান। অথচ ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই রামপুরহাটের সেই বিজেপি নেতা শুভাশিস চৌধুরীর। ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) আবহে এই ঘটনা সামনে আসার পরে তৎকালীন শাসক বাম ও বর্তমান শাসক তৃণমূলকে নিশানা করেছেন তিনি। তাঁকে পাল্টা কটাক্ষ করেছে সিপিএম ও তৃণমূল।
রামপুরহাট পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শুভাশিস ১৯৯৫ সালে প্রথম বার পুরসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হিসাবে ভোটে দাঁড়ান। তবে জয়ী হতে পারেননি। ২০০০ সালেও তিনি প্রার্থী হন এবং জয়ী হন। সে বার সিপিএম বিরোধী জোটের বোর্ডে উপ-পুরপ্রধানও হন শুভাশিস। ২০০৫ সালেও ফের বিজেপির হয়ে জয়ী হন। ২০১০ সালে তাঁর স্ত্রী সুপর্ণা চৌধুরী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে আবার শুভাশিস জয়ী হন। ২০১১ ও ২০২১ সালে দু’টি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হলেও রামপুরহাট কেন্দ্রে তৃণমূলের আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে হারতে হয় তাঁকে।
এ হেন পরিচিত বিজেপি নেতা শুভাশিস চৌধুরীর নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম নেই দেখে অবাক তিনি নিজেও। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের ওয়ার্ডের বিএলও ভোটার তালিকা দেখে আমার নাম নেই জানিয়েছিলেন। তার পরে আমিও দেখি। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৬৭ পার্টে আমার বাবার নাম, আমার স্ত্রীর নাম ও ভাইয়ের নাম আছে। আশ্চর্য জনক ভাবে আমার নাম নেই।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমার স্ত্রীর নামের পাশে স্বামী হিসাবে আমার নাম থাকলেও ভোটার তালিকায় আমার নাম নেই।’’
শুভাশিস এখন বিজেপির ময়ূরেশ্বর বিধানসভার সাংগঠনিক দায়িত্বে রয়েছেন। ২০০২-এর তালিকায় তাঁর নাম না থাকা নিয়ে তৃণমূল ও সিপিএমকে একযোগে নিশানা করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আগেকার বাম আমলে এই ভাবে ভোটার তালিকায় বৈধ ভোটার বাদ দেওয়া হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তার থেকেও বেশি বৈধ ভোটারদের বাদ দিয়েছে।’’
পাল্টা রামপুরহাটের তৃণমূল বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি এসআইআর সমর্থন করছে, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক জন বৈধ ভোটারের নামও যাতে বাদ না যায়, সে জন্য পথে নেমে লড়াই করছেন। কী কারণে নাম নেই সেটা উনিই বলতে পারবেন।’’ সিপিএমের রামপুরহাট ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক, পুরপ্রতিনিধি সঞ্জীব মল্লিক বলেন, ‘‘তালিকায় নাম ছিল বলেই তো উনি ভোটে লড়তে পেরেছিলেন। পরে কেন নাম বাদ গেল তার জবাব তো তাঁকে নরেন্দ্র মোদীর কাছে চাইতে হবে। কারণ ভোটার তালিকা তৈরি করে নির্বাচন কমিশন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)