ক্ষোভ: তদন্তের দাবিতে পথে বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র।
দশ দিন ধরে নিখোঁজ থাকা যুবকের দেহ মিলল পুকুর পাড়ের ঝোপে। বুধবার রাতে ঝালদা পুরশহর লাগোয়া হালদার বাঁধ থেকে শ্রীশ হালদারের (২৪) দেহ উদ্ধারের পর থেকেই তেতে ওঠে তাঁর বাড়ি নামোপাড়া এলাকা। নিহতের পরিজনদের দাবি, ওই যুবকের সঙ্গে শহরের এক তরুণীর প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। তরুণীর পরিবার তা মানতে না পেরে শ্রীশকে খুন করেছে। বৃহস্পতিবার পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে যুবকের দেহ ঝালদায় নিয়ে এসে ঝালদা-রাঁচি রাস্তার উপর ডাকঘর মোড়ে অবরোধ শুরু করে তদন্তের দাবি করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আড়াই ঘণ্টা পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। যদিও এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি নিহতের পরিবার।
জেলা পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে ছেলেটির সঙ্গে এলাকার একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্কের কথা উঠে এসেছে। তদন্ত হচ্ছে।’’ প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানাচ্ছে, দেহে বাইরে থেকে কোনও আঘাতে চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে দেহে কিছুটা পচন ধরেছিল। পুলিশ কর্মীদের ধারনা, বেশি দিন আগে যুবকের মৃত্যু হয়নি।
নিহতের কাকা ব্রজশ্রী হালদার জানিয়েছেন, শ্রীশ এলাকায় একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষকের কাজ করতেন। ২১ মে সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে তিনি আর ফেরেননি। রাত পর্যন্ত খোঁজ করে হদিশ না পেয়ে তাঁরা পুলিশের কাছে যান। পরের দিন পুলিশের কাছে তাঁর নিখোঁজের ডায়েরি করেন। শ্রীশের দাদা শ্রীজীব হালদারের অভিযোগ, ‘‘ভাইয়ের সঙ্গে তার মোবাইল ছিল। সেই নম্বর আমরা পুলিশকে দিয়ে তদন্ত করতে বলেছিলাম। কিন্তু আমাদের কথায় কোনও গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।’’
এর মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় এলাকায় চাউর হয়, হালদার বাঁধের ঝোপে একটি দেহ পড়ে রয়েছে। ব্রজশ্রীবাবু বলেন, ‘‘দেহটি তোলার পরে দেখা যায়, সেটি আমার ভাইপোরই দেহ। কিন্তু ও নিখোঁজ হওয়ার পরে আমরা তন্নতন্ন করে এলাকা খুঁজেছি। এলাকার সবাই খবরটা জানেন। তার পরেও সবার যাতায়াত থাকা ওই পুকুরে এতদিন পরে কী ভাবে দেহটি এল বুঝতে পাচ্ছি না।’’
তাঁর ধারনা, শ্রীশের কোমরে দাগ দেখে মনে হচ্ছে কোনও কিছু দিয়ে ওকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘শুনলাম ওর সঙ্গে ঝালদারই একটি মেয়ের নাকি প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সেই মেয়ের পরিবারের কেউ ওকে হুমকি দিয়েছিল বলে খবর পেয়েছি। দেহ তোলার সময় পুলিশ-কুকুর দিয়ে তদন্ত করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ সেই অনুরোধে কোনও গুরুত্ব দেয়নি। ওকে অন্য কোথাও খুন করে এখানে এনে ফেলে দেওয়া হয়েছে কি না সেই সমস্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে আমরা অন্ধকারে।’’
এলাকার বিধায়ক নেপাল মাহাতো বলেন, ‘‘পুলিশকে কোনও ভাবেই বিষয়টি লঘু করে দেখা চলবে না।’’ এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর পঙ্কজ মণ্ডলও বলেন, ‘‘কী ভাবে ছেলেটি মারা গেল, তার তদন্ত করতে হবে পুলিশকে।’’ জেলা পুলিশ সুপার অবশ্য পুলিশের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ মানতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy