বহির্বিভাগ চালু হওয়ার কথা সকাল ৯টায়। কিন্তু শনিবার সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সাঁতুড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের ফিরে যেতে হয়েছে কাউকে না পেয়ে। রোগীদের একাংশের অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সমস্ত কর্মীরা এক সঙ্গে পিকনিক করতে চলে যাওয়ায় এই কাণ্ড। সাঁতুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিধুভূষণ শান্তিকারি বলেন, ‘‘ঘটনাটি কোনও ভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। শোনার পরেই বিএমওএইচ-কে জানিয়েছি।’’ তবে সাঁতুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আশিস বিশ্বকর্মা বলেন, ‘‘খবর পেয়ে কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তাঁরা জানিয়েছেন, শীতের সময় সকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্র খুলতে দেরি হয়েছে।’’
সাঁতুড়ি গ্রামের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি অনেক দিন ধরেই বিস্তর অভিযোগ উঠে এসেছে। ইন্ডোর পরিষেবা খাতায় কলমে থাকলেও চিকিৎসকের অভাবে তা বন্ধ। রবিবারের ছুটি বাদ দিয়ে, সপ্তাহে ছ’দিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বহির্বিভাগ খোলা থাকে। তার মধ্যে তিন দিন চিকিৎসক থাকেন। অন্য তিন দিন ফার্মাসিস্ট ও নার্সেরা সামাল দেন। হাসপাতালে রয়েছেন পাঁচ জন নার্স, এক জন ফার্মাসিস্ট ও তিন জন স্বাস্থ্যকর্মী। তাঁরা সবাই মিলেই এ দিন পিকনিকে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসনও তালা বন্ধ ছিল বলে দাবি করেছেন চিকিৎসার জন্য আসা মানুষজন।
এ দিন হমেয়ের জ্বর হওয়ায় তাকে নিয়ে ১০টা নাগাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন শিবানী মান্ডি। তিনি বলেন, ‘‘এক ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরেও কেউ এল না। তাই ফিরে যাচ্ছি।’’ সাঁতুড়ির জগন্নাথ মণ্ডল, অবিনাশ হাঁসদা, সুনীল বাস্কেরা বলেন, ‘‘অন্য দিন সকাল ৯টায় দরজা খোলে। এ দিন ১১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে অনেকেই বাধ্য হয়ে ফিরে গিয়েছেন। কেউ কেউ কুড়ি কিলোমিটার উজিয়ে মুরাডিতে ব্লক হাসপাতালে গিয়েছেন।’’
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের দাবি, হাসপাতাল বন্ধ থাকার খবর পেয়ে ব্লক স্বাস্থ্য দফতর নড়েচড়ে বসে। নির্দেশ পেয়ে ত়ড়িঘড়ি এক জন নার্স ও এক জন স্বাস্থ্যকর্মী গিয়ে সাড়ে ১১টা নাগাদ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দরজা খোলেন। কিন্তু ততক্ষণে প্রায় সমস্ত রোগীই ফিরে গিয়েছিলেন।