Advertisement
E-Paper

একের টাকা অন্যকে, গাফিলতির অভিযোগ

ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে গাফিলতির অভিযোগ উঠল কাশীপুরে। কাশীপুরের গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতের ইন্দ্রবিল গ্রামের ঘটনা। অভিযোগ, এক জনের বিপিএল নম্বরের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ অন্য জনকে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩৯

ইন্দিরা আবাস প্রকল্পে গাফিলতির অভিযোগ উঠল কাশীপুরে। কাশীপুরের গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতের ইন্দ্রবিল গ্রামের ঘটনা। অভিযোগ, এক জনের বিপিএল নম্বরের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ অন্য জনকে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের কাছে বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে স্থানীয় সিপিএম। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও (কাশীপুর)।

ইন্দ্রবিল গ্রামের বাসিন্দা, পেশায় দিনমজুর টিঙ্কু অগ্রবালের অভিযোগ, তাঁর বিপিএল নম্বরের ভিত্তিতে গ্রামেরই অন্য এক মহিলাকে কয়েক দফায় ইন্দিরা আবাসের মোট পঁচাত্তর হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। টিঙ্কু বলেন, ‘‘আদ্রায় দিনমজুরি করে কোনমতে সংসার চালাই। আমার নামে ইন্দিরা আবাসের টাকা বরাদ্দ হয়েছে শুনে ব্যাঙ্কে খোঁজ নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু জানতে পারি, টাকা আসেনি। আমার নম্বরের টাকা অর্চনা অগ্রবাল নামে এক জন পেয়েছেন।’’ তাঁর দাবি, ব্লক প্রশাসনের কাছে বিষয়টি নিয়ে কয়েক মাস আগেই অভিযোগ জানিয়েছেন।

সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতে ইন্দিরা আবাসের টাকা পেয়েছেন ইন্দ্রবিল গ্রামের অর্চনা অগ্রবাল। ইন্দিরা আবাস প্রকল্পের (২০১৫-২০১৬) পঞ্চায়েত এলাকা ভিত্তিক উপভোক্তা তালিকাতে দেখা যাচ্ছে, অর্চনাদেবীর নামের পাশে স্বামী বা পিতার পরিচয়ের জায়গায় টিঙ্কু অগ্রবালের নাম রয়েছে। বিপিএল নম্বরটিও টিঙ্কুর। কিন্তু, অর্চনাদেবীর স্বামীর নাম বাবলু অগ্রবাল। তাঁদের বিপিএল নম্বরও আলাদা।

কী ভাবে এই গাফিলতি হল তা নিয়ে সরব হয়েছে স্থানীয় সিপিএম। দলের গৌরাঙ্গডি লোকাল কমিটির সদস্য সোমনাথ দুবে বলেন, ‘‘অর্চনা অগ্রবাল ইন্দিরা আবাসের টাকা পেতেই পারেন। তা নিয়ে আমাদের কোনও দাবি নেই। কিন্তু এক্ষেত্রে অন্য এক জনের বিপিএল নম্বরের ভিত্তিতে তিনি টাকাটা পাওয়ায় আর এক জন উপভোক্তা বঞ্চিত হচ্ছেন।’’ এই গাফলতির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন তাঁরা।

কিন্তু ভুলটা কী ভাবে হল তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পঞ্চায়েত এবং ব্লক প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবার ভিত্তিক সমীক্ষা করে ইন্দিরা আবাসের প্রাপক তালিকা তৈরি করা হয়। এ ক্ষেত্রে আয় এবং সঙ্গতির ভিত্তিতে প্রাপকদের একটি করে নম্বর দেওয়া হয়। স্কোর কম হলে বোঝা যায় পরিবারটি বেশি দুঃস্থ। যাঁদের স্কোর কম, তাঁরাই সুবিধার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পান। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ ক্ষেত্রে টিঙ্কুর স্কোর ২৬। অর্চনাদেবীর স্বামী বাবলু অগ্রবালের স্কোর ৩৫। ফলে প্রথা মাফিক টিঙ্কুর আগে সুবিধা পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু উল্টে টিঙ্কুর ইন্দিরা আবাসের টাকা পাওয়ার সম্ভাবনাটাই এখন প্রশ্নের মুখে পড়ে গিয়েছে।

তবে বিষয়টি সামনে আসার পরে দায়িত্ব এড়াতে শুরু করেছে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসন। কাশীপুর পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সারথি বাউরি বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত সদস্যরাই ইন্দিরা আবাস প্রকল্পের উপভোক্তা তালিকা তৈরি করে পঞ্চায়েতে জমা দেন। প্রধান হিসেবে আমার দায়িত্ব তাতে সই করে ব্লকে পাঠানো। সদস্যরা ঠিক ভাবে তালিকা তৈরি করেছেন কি না সেটা দেখা প্রধানের পক্ষে কখনও সম্ভব নয়।”

বিডিও (কাশীপুর) মানসী ভদ্র চক্রবর্তী জানান, পঞ্চায়েত থেকে প্রাপকদের নামের তালিকা তৈরি হয়ে আসার পরে, প্রাপকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করে দেওয়া হয়। তাঁর দাবি, এ ক্ষেত্রে ভুলটা পঞ্চায়েতের তরফেই হয়েছে। বিডিও বলেন, ‘‘ঘটনাটি সামনে আসার পরেই ব্লকের এক আধিকারিককে গ্রামে তদন্তে পাঠানো হয়েছে। তিনি রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরে এই ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে।’’

সিপিএমের নেতা সোমনাথবাবুর বলেন, ‘‘কী ভাবে এই ভুল হল বোঝা যাচ্ছে না। তবে ব্লক প্রশাসন বা পঞ্চায়েত কেউই এর দায় এড়াতে পারে না।’’ অর্চনা অগ্রবাল বা তাঁর স্বামী বাবলু অগ্রবালের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।

Indira Awaas Yojana complaint negligence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy