Advertisement
E-Paper

ওটিপি ছাড়াই টাকা লোপাট গ্রাহকের 

বুধবার দুবরাজপুর থানা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় এমনই কার্ড জালিয়াতির অভিযোগ জানালেন হেতমপুর গ্রামের বাসিন্দা, শিক্ষাবন্ধু বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, খোওয়া গিয়েছে ৭০ হাজার টাকা। 

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ০১:৪৬
—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

যাঁর কার্ড, তিনি থাকেন দুবরাজপুরের হেতমপুরে। তাঁর এটিএম কার্ড ব্যবহার করে টাকা উঠল ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে।

বুধবার দুবরাজপুর থানা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় এমনই কার্ড জালিয়াতির অভিযোগ জানালেন হেতমপুর গ্রামের বাসিন্দা, শিক্ষাবন্ধু বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, খোওয়া গিয়েছে ৭০ হাজার টাকা।

উল্লেখ্য গত মাসে দুবরাজপুরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ওই শাখার গ্রাহক এক কলেজছাত্রীর ৩৮ হাজার টাকা একই ভাবে উধাও হয়ে গিয়েছিল। সেই ঘটনার কোনও কিনারা এখনও হয়নি।

দুবরাজপুর থানায় বিশ্বনাথবাবুর লিখিত অভিযোগ, দুবরাজপুরের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় তাঁর অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এটিএম কার্ড ওই ব্যাঙ্কেরই। তিনি কাউকে তাঁর এটিএম কার্ডের পিন জানাননি। মোবাইল ফোন বা ই-মেলে ‘ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড’ও পাননি। অথচ ওই কার্ড ব্যবহার করে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৩০ মিনিট থেকে দুপুর আড়াইটের মধ্যে পর পর ৭ বারে ৭০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। সন্ধ্যায় মোবাইলে টাকা তোলার বিষয়ে এসএমএস পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন তিনি। এটিএমে গিয়ে দেখেন টাকা তোলা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কের হেল্পলাইনে ফোন করে কার্ড ‘ব্লক’ করিয়ে দেন।

বিশ্বনাথবাবুর আক্ষেপ, ‘‘অনেক কষ্টে তিল তিল করে প্রায় পৌনে ২ লক্ষ টাকা জমিয়েছিলাম। খুব দরকার না পড়লে ওই টাকায় হাত দিই না। এখন তা নেমে এসেছে ১ লক্ষ ৬ হাজার টাকায়। এ ভাবে আমার এটিএম কার্ড ব্যবহার করে কেউ কী ভাবে এত টাকা তুলে নিতে পারে?’’

‘ত্রুটি’ না থাকা সত্বেও যেহেতু এমন ঘটনা ঘটেছে, তাই অভিযোগ নেওয়ার পাশাপাশি, ব্যাঙ্কের ক্যাস ম্যানেজমেন্ট সেলে (সিএমএস) অভিযোগ জানানো হবে বলে তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু টাকা ফেরত মিলবে কিনা, তার নিশ্চয়তা মেলেনি। ভবিষ্যতে এমন সমস্যা এড়াতে ব্যাঙ্ক, পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের সাইবার সেলেও অভিযোগ জানিয়েছেন বিশ্বনাথবাবু।

মাসখানেক আগে একই ভাবে টাকা খোওয়ানো কলেজ ছাত্রী নম্রতা চৌধুরীর মতো বিশ্বনাথবাবুরও প্রশ্ন— ‘‘ব্যাঙ্ক বারবার বলে ওটিপি, পিন নম্বর, সিভিভি কাউকে না জানাতে। সেটা না করেও যদি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়, তার দায় গ্রাহক নেবে কেন?’’

বছর দেড়েক আগে সিউড়ি জেলা স্কুলের এক ইংরেজি শিক্ষকের সঙ্গেও এমনই একটা ঘটনা ঘটেছিল। তদন্তে জানা যায়, তিনি সিউড়িতে থাকতে থাকতেই ইউরোপ ও কাতারে বসে প্রায় ৪০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পরে ব্যাঙ্ক অবশ্য টাকা ফেরত দেয়। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি ছিল, তথ্য হাতিয়ে ‘ডুপ্লিকেট’ কার্ড তৈরি করছে দুষ্কৃতীরা। যার পোশাকি নাম ‘ক্লোনিং’ বা ‘স্কিমিং’। ওই শিক্ষকের কার্ডের তথ্য চুরি করেও এ ভাবেই কার্ডের প্রতিলিপি তৈরি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছিল। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই ছাত্রী এবং বিশ্বনাথবাবুর ক্ষেত্রেও তেমন একটা কিছু ঘটেছে।

কিন্তু এক মাসের মধ্যে একই ব্যাঙ্কের দুই গ্রাহকের সঙ্গে একই ধরণের জালিয়াতি বা এটিএম কার্ড ‘ক্লোনিং’ বা ‘স্কিমিং’ হল কী করে, তা ভেবে পাচ্ছেন না দুবরাজপুরের ওই ব্যাঙ্কের শাখার ম্যানেজার নীতিশ দত্ত। তিনি বলছেন, ‘‘ওই ছাত্রী যে কার্ড ব্যবহার করেন তা গ্লোবাল কার্ড। এটাও গ্লোবাল কার্ড। সেটা ক্লোন বা স্কিমিং করা সহজ নয়। এই ধরনের জালিয়াতি রুখতেই গ্রাহকদের অনেক সুরক্ষিত ডিজিটাল চিপ বসানো গ্লোবাল কার্ড দিচ্ছে ব্যাঙ্ক। তারপরও কী ভাবে তা ঘটল বুঝতে পারছি না।’’ তিনি জানান, ব্যাঙ্কের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

জেলা লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার রীতঙ্কর কুণ্ডু বলেন, ‘‘উদ্বেগের বিষয়। প্রথমত ওই ব্যাঙ্ক নিজেদের রিজিওনাল অফিসে জানানোর পাশাপাশি আমাকেও চিঠি পাঠাক। আমি জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি তুলব।’’

জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘অভিযোগ যখন হয়েছে তখন নিশ্চয়ই আমাদের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হবে।’

Bank Fraud Financial Fraud
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy