Advertisement
E-Paper

ঘড়ি-স্তম্ভের পাশে গাছে কোপ, বিতর্ক

 গ্রিন সিটি প্রকল্পে শহর সাজাতে তৈরি হয়েছে ঘড়ি-স্তম্ভ। কিন্তু সেই ঘড়ি-স্তম্ভ উদ্বোধনের আগে কাছাকাছি থাকা দু’টি বড় গাছের অনেকখানি কেটে ফেলায় বিতর্ক শুরু হয়েছে পুরুলিয়ায়। বন দফতরের অনুমতি ছাড়া গাছগুলি কাটা আদৌ বৈধ কি না, তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪১
কাটা: পুরুলিয়ায় ঘড়ি-স্তম্ভের পাশেই কাটা পড়ল গাছ। নিজস্ব চিত্র

কাটা: পুরুলিয়ায় ঘড়ি-স্তম্ভের পাশেই কাটা পড়ল গাছ। নিজস্ব চিত্র

গ্রিন সিটি প্রকল্পে শহর সাজাতে তৈরি হয়েছে ঘড়ি-স্তম্ভ। কিন্তু সেই ঘড়ি-স্তম্ভ উদ্বোধনের আগে কাছাকাছি থাকা দু’টি বড় গাছের অনেকখানি কেটে ফেলায় বিতর্ক শুরু হয়েছে পুরুলিয়ায়। বন দফতরের অনুমতি ছাড়া গাছগুলি কাটা আদৌ বৈধ কি না, তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।

পুরুলিয়া পুরসভা শহরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে একটি ঘড়ি-স্তম্ভ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তা জানতে পেরে, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এগিয়ে এসে নিজেরাই খরচ করে ওই স্তম্ভ তৈরি করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পথচারীদের চোখে পড়ে, ঘড়ি স্তম্ভ লাগোয়া অশ্বত্থ ও ছাতিম গাছ দু’টি কেটে ফেলা হচ্ছে। তারপর থেকেই বিভিন্ন মহলে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। গাছের সিংহভাগ কাটা পড়ার খবর পৌঁছেছে জেলাশাসকের কানেও। জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘গাছ দু’টি পুরোপুরি কাটা না পড়লেও, অনেকটাই কাটা হয়েছে। এমনটা না হলেই ভাল হতো।’’

এলাকার এক ব্যবসায়ী তুহিনকুমার বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমি তিরিশ বছর এখানে দোকান করছি। প্রথম দিন থেকেই গাছ দু’টি দেখছি। স্তম্ভের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও কেন গাছ দু’টি কাটতে হল, তা বুঝতে পারছি না।’’ এলাকার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা অরুণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই এলাকায় এক সময়ে তেঁতুল, নিম, অশ্বত্থ-সহ নানা রকমের গাছ ছিল। ধীরে ধীরে সবই কেটে ফেলা হচ্ছে। মন থেকে মানতে পারছি না।’’

শুক্রবারও দেখা যায় গাছ কাটা চলছে। পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা পুরুলিয়ার কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘গ্রিন সিটি প্রকল্পে শহরে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে গাছ লাগানো হচ্ছে। আর সৌন্দর্যের নামে দু’টি পুরনো গাছ কেটে ফেলা হল? এই গাছ দু’টির সঙ্গে শহরবাসীর আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। পুরসভার কাছে জানতে চাইব, যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই কাজ করছে, তাদের গাছ কাটার অনুমতি কে দিয়েছে?’’

পুরসভার সৌন্দর্যায়ন বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল বিভাসরঞ্জন দাসও বলেন, ‘‘কে এই সংস্থাকে গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে পুরপ্রধানের কাছে জানতে চাইব।’’

বন দফতরের পুরুলিয়া-পাড়া রেঞ্জ অফিসার কাদল পান্ডে বলেন, ‘‘শহরের প্রাণ কেন্দ্রে গাছ খবর শোনার পরে আমি নিজে ঘটনাস্থলে যাই। গাছ কাটার জন্য আমাদের কাছে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা বিষয়টি পুরসভার কাছে জানতে চাইব।’’

যদিও গাছ কাটা নিয়ে ওই সংস্থা ও পুরসভা পরস্পরের দিকে বল ছুড়েছে। প্রকল্প রূপায়ণকারী সংস্থার পক্ষে রাজেশ সারাওগি বলেন, ‘‘শহরের সৌন্দর্যের জন্য এই ঘড়ি-স্তম্ভ বসানো হচ্ছে। তাই ঘড়ির পাশে থাকা গাছ দু’টির কিছুটা কাটতে হয়েছে। তবে অন্যত্র আমরা অনেক গাছ লাগাব।’’ কার অনুমতি নিয়ে এই কাজ তাঁরা করেছেন? তাঁর দাবি, ‘‘পুরসভার সহায়তায় আমরা কাজ করছি। গোটা বিষয়টি পুরসভাই দেখছে।’’ যদিও পুরপ্রধান সামিমদাদ খান বলেন, ‘‘ওরা গাছ কাটার ব্যাপারে কিছুই জানায়নি। কেন ওই সংস্থা পুরসভাকে না জানিয়ে গাছ দু’টির সিংহভাগ কেটে ফেলল, তা তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হবে।’’

Controversy Tree Cutting Watch
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy