Advertisement
২১ মে ২০২৪
Coronavirus

আতঙ্কের ‘সংক্রমণ’ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পুরুলিয়া 

পুরুলিয়া বা বাঁকুড়ায় এখনও করোনা আক্রান্ত কারও সন্ধান মেলেনি। তবে আতঙ্কের ‘সংক্রমণ’ হয়ে চলেছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাদাত
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০ ০৮:২৪
Share: Save:

বছর পনেরোর কিশোরীকে নিয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়া শহরের চিকিৎসকের কাছে এসেছিলেন মা। গত কয়েকদিন ধরে কিছুই খাচ্ছে না মেয়ে। কাছে গেলেই বলছে না ছুঁতে। ওই চিকিৎসক জানান, সকাল থেকে এমন ২২ জন এসেছিল তাঁর কাছে।

পুরুলিয়া বা বাঁকুড়ায় এখনও করোনা আক্রান্ত কারও সন্ধান মেলেনি। তবে আতঙ্কের ‘সংক্রমণ’ হয়ে চলেছে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক, চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা এক ধরনের ‘প্যানিক ডিসঅর্ডার’। এখন শরীরের যত্ন নেওয়া যেমন জরুরি, মানসিক ভাবেও সুস্থ থাকা তেমনই গুরুত্বপূর্ণ।’’

নয়নবাবুই জানাচ্ছেন, বয়ঃসন্ধির কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে এই অস্থিরতা বেশি দেখা যাচ্ছে। মনোরোগের চিকিৎসক অর্ণব সরকার জানান, ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সে শরীর ও মনের বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। এই সময়েই স্থায়ী ব্যক্তিত্ব গঠিত হয়। অর্ণববাবুর কথায়, ‘‘এই বয়সী ছেলেমেয়েদের আবেগ আর উদ্দীপনা বেশি থাকে। কিন্তু জীবন-জগৎ সংক্রান্ত অভিজ্ঞতাটা থাকে না।’’

মনোবিদেরা জানাচ্ছেন, বয়স্ক মানুষজন অনেক ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে যাওয়ায় প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে পারেন অনেক ঠান্ডা মাথায়। সেটা বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের পক্ষে সম্ভব নয়। এই সময়ে টিভি, খবরের কাগজ বা ‘সোশ্যাল মিডিয়া’ ছেয়ে আছে করোনার খবরে। ক্রমাগত মৃত্যু আর আক্রান্তের সংখ্যা গোনা চলছে। তারই প্রভাব পড়ছে অল্পবয়সীদের মনে।

অর্ণববাবু জানান, এই পরিস্থিতিতে অভিভাবকদের দরকার কিশোর-কিশোরীদের সময় দেওয়া। তাদের মনের ভিতরে জমতে থাকা কথা বের করে আনতে পারলে অনেক সমস্যার সুরাহা হবে বলে তাঁর মত। অর্ণববাবুর পরামর্শ, কীসের ভয় পাচ্ছে ছেলেমেয়েরা তা তাদের মুখ থেকে শোনা জরুরি। তার পরে যুক্তি দিয়ে বোঝানো, সতর্ক থাকলে এই রোগের ভয় নেই।

চিকিৎসকদের পরামর্শ, বাড়িতে থাকাটা যে রোগের সংক্রমণ রোখার জন্য সে কথা অল্প বয়সী ছেলেমেয়েদের বোঝাতে হবে অভিভাবকদেরই। তাদের বলতে হবে, বাড়িতে থাকার সময়টা তারা ‘শাপে-বর’ হিসাবে কাজে লাগাতে পারে। পড়তে পারে গল্পের বই। কোনও শখ থাকলে তার চর্চা করতে পারে। বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতে পারে ফোনে। তবে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়লে কখনও কখনও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়ার দরকার পড়তে পারে।

অর্ণববাবু বলেন, ‘‘টানা কয়েকদিন খাওয়াদাওয়া খুব কমে গেলে বা সারা রাত জেগে থাকলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Purulia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE