Advertisement
E-Paper

জমাট চৈত্রের বাজারে চিন্তা বাড়াচ্ছে সংক্রমণ

শপিং মল থেকে ছোট-মাঝারি দোকান, সর্বত্রই ভিড়। ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটলেও করোনার বাড়বাড়ন্তে কত দিন তা স্থায়ী হবে, থাকছে সে চিন্তাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২১ ০৫:৪১
বেপরোয়া: মাস্ক নেই অধিকাংশ লোকজনের মুখে। বাঁকুড়ার সুভাষরোডের একটি দোকানে। নিজস্ব চিত্র।

বেপরোয়া: মাস্ক নেই অধিকাংশ লোকজনের মুখে। বাঁকুড়ার সুভাষরোডের একটি দোকানে। নিজস্ব চিত্র।

কেউ দামে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছেন, তো কোথাও আবার ‘অফার’— একটা কিনলে আরও একটা ‘ফ্রি’। কোথায় কত ছাড় দিচ্ছে, তা নিয়েও জোর আলোচনা চায়ের দোকান থেকে বাড়ির বৈঠকখানায়। দেশ তথা রাজ্যে করোনা সংক্রমণ দিনদিন বাড়লেও, চৈত্রের মরসুমে ‘সেল’-এ জিনিস কিনতে বাঁকুড়া শহরের বাজারে ভিড় জমছে প্রতিদিনই। তা দেখে ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটলেও করোনার বাড়বাড়ন্তে কত দিন তা স্থায়ী হবে, থাকছে সে চিন্তাও।

বিধানসভা নির্বাচনের জন্য চৈত্রের মাঝামাঝি পর্যন্ত এ বারে তেমন ভিড় ছিল না বাজারে। তবে ভোট মিটতেই জমে উঠেছে বাজার। গত কয়েক বছরে বাঁকুড়া শহরে গড়ে ওঠা দু’-একটি শপিং মল থেকে ছোট-মাঝারি দোকান, সর্বত্রই ভিড়। শহরের সুভাষ রোড এলাকার রেডিমেড পোশাকের ব্যবসায়ী পার্থ গঁরাইয়ের কথায়, “ভোটের জন্য জেলায় যানবাহন চলাচলে কিছু বিধি-নিষেধ ছিল। তাই বাইরের ক্রেতাদের বড় অংশই আসতে পারেননি। ভোটের জন্য ‘সেল’-এর বাজার মার খায় কি না, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছিলাম। তবে গত সাত দিনে ছবিটা একেবারেই বদলে গিয়েছে।”

গত বছরে লকডাউনে চৈত্রের ব্যবসা হয়নি। তবে এ বার দেরিতে হলেও বাজার জমায় খুশি ব্যবসায়ী মহল। বাঁকুড়া শহরের গোপীনাথপুরের পাইকারি পোশাক বিক্রেতা তরুণকুমার দাস জানান, সিমলাপাল, তালড্যাংরা, বেলিয়াতোড়, ছাতনা, ওন্দার মতো জেলার নানা ব্লক থেকে ব্যবসায়ীরা এসে মাল কিনছেন। তাঁর কথায়, “সেলের বাজার জেলার অন্যত্রও জমে উঠেছে। গ্রামাঞ্চলের ব্যবসায়ীরা দফায় দফায় এসে জিনিস কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। গত বছরে লকডাউনে ক্ষতির মুখে পড়লেও এ বারে বাজার ভালই।’’

তবে শুধু জামাকাপড় নয়, ছাড় মিলছে জুতো থেকে শহরের বিভিন্ন বাসনপত্রের দোকানেও। বাঁকুড়ার সুভাষ রোডের ব্যবসায়ী বিশ্বরূপ সেন বলেন, “নতুন থেকে পুরনো, সব ধরনের মালেই সেলের ছাড় দিচ্ছি।” ওই এলাকারই আর এক ব্যবসায়ী রুমেলা চক্রবর্তী বলেন, “পুজোয় অবিক্রিত মালের বড় অংশই বিক্রি হয়ে গিয়েছে। চৈত্রের শেষের ক’টা দিন বাজার আরও জমবে বলেই আশা করছি।” এর পরে বৈশাখ মাসে একাধিক বিয়ের দিন রয়েছে। ‘সেল’-এর বাজারে তাই বিয়েবাড়ির জন্যও অনেকে কেনাকাটা সেরে রাখছেন বলে ব্যবসায়ীরা জানান। বাঁকুড়ার এক বধূ সুদেষ্ণা গঁরাই বলেন, “চৈত্র সেলের বাজারে কেনাকাটা না করলে হয় না কি! গোটা পরিবারের জন্য কিছু না কিছু কিনেছি।”

এ দিকে, জেলায় ক্রমে বাড়ছে করোনা সংক্রমণও। এ পরিস্থিতিতেও বাজারের ভিড়ে অনেককেই বিনা মাস্কে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব-বিধিও মানা যাচ্ছে না ভিড়ের কারণে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শ্যামল সরেন বলেন, “করোনা নিয়ে অসতর্কতা বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। জেলায় সংক্রমণের হারও বাড়ছে। আমরা বিভিন্ন ভাবে মানুষকে সামাজিক দূরত্ব-বিধি মেনে চলা ও মাস্ক পরা নিয়ে সচেতন করছি।”

শহরের ব্যবসায়ীদের বড় অংশের দাবি, মাস্ক পরা নিয়ে ক্রেতাদের জোরাজোরি না করা হলেও দোকানের কর্মীরা যাতে নিয়ম মেনে চলেন, তা দেখা হচ্ছে। তবে বহু দোকানেই কর্মীকে মাস্ক পরতে দেখা যাচ্ছে না। শহরের এক বাসনপত্রের দোকানের কর্মী বলেন, “তীব্র গরম, তার উপরে ভিড়ের চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছি। সব সময়ে মাস্ক মুখে রাখা সম্ভব
হচ্ছে না।”

‘বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন দরিপা বলেন, “করোনা-বিধি মেনে চলা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। সংক্রমণ বাড়লে আখেরে ব্যবসারই ক্ষতি। বিষয়টির উপরে আমরা নজর রাখছি।’’

Corona Chaitra Sale Coronavirus in West Bengal coronavirus
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy