প্রতীকী ছবি।
পুরুলিয়ায় বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই নতুন করে করোনায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে এই জেলায়। এ দিকে, সামনেই রামনবমী। অতীতের মতো প্রচুর লোকজন নিয়ে শোভাযাত্রা হলে সংক্রমণের হার বাড়ার আশঙ্কা থাকছে। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এ বার রামনবমীতে শোভাযাত্রা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বজরঙ্গ দল, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও হিন্দু জারগণ মঞ্চ। একই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে যুব তৃণমূলের পুরুলিয়ার শহরের সভাপতি তথা পুরুলিয়া রামনবমী কমিটির সভাপতি গৌরব সিংহ।
পুরুলিয়াতে প্রতিদিনই রেকর্ড ভাঙছে করোনার সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। রামনবমীতে এই জেলার প্রতিটি থানাতেই ছোট-বড় শোভাযাত্রা হয়। বিশেষ করে পুরুলিয়া শহর, আদ্রা ও রঘুনাথপুরের মতো জায়গাগুলিতে শোভাযাত্রায় অনেক লোকজন যোগ দেন। পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার জেলার প্রায় সমস্ত থানাতেই উদ্যোক্তাদের আলোচনায় ডাকা হয়েছিল। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ মাহাতো বলেন, ‘‘রামনবমীর শোভাযাত্রা যাঁরা করেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে শোভাযাত্রা করলে করোনার সংক্রমণ কী অবস্থায় পৌঁছতে পারে, সেটা বলা হয়েছিল। প্রত্যেকেই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে এ বছর শোভাযাত্রা বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন। পুলিশ-প্রশাসন কমিটিগুলির সচেতনতাকে সাধুবাদ জানিয়েছে।”
পুলিশের বৈঠকের আগে তাঁরা নিজেরাই এ বার রামনবমীর শোভাযাত্রা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন বলে জানাচ্ছেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পুরুলিয়ার প্রাক্তন জেলা সংযোজক সূরজ শর্মা ও হিন্দু জাগরণ মঞ্চের দক্ষিণবঙ্গের প্রান্ত সমিতির সহ-প্রচার প্রমুখ অম্বুজ তিওয়াড়ি। সূরজ বলেন, ‘‘রামনবীর শোভাযাত্রার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু জেলায় করোনার সংক্রমণ যে ভাবে বাড়ছে, সেটা দেখার পরে শুক্রবারই নিজেরা আলোচনা করে দায়িত্বশীল সংগঠন হিসেবে শোভাযাত্রা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” অম্বুজবাবুর কথায়, ‘‘এ বার আমরা বলছি, সামাজিক পরিবেশের বদলে রামনবমী গৃহ পরিবেশেই সীমাবদ্ধ থাকুক।” পুরুলিয়া শহরের যুব তৃণমূল নেতা তথা শহরের রামনবমী কমিটির সভাপতি গৌরব সিংহ বলছেন, ‘‘করোনার সংক্রমণের হার ক্রমশই উর্ধ্বগামী দেখে কয়েক দিন আগেই শোভাযাত্রা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেটা জেলার প্রতি জায়গাতে জানিয়ে দিয়েছি।”
এ দিন পুলিশের সঙ্গে বৈঠকের পরে কমিটিগুলি ও উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, শোভাযাত্রা না হলেও রামনবমীতে মন্দিরে পুজো হবে। মানবাজারে বৈঠক করেছেন এসডিপিও (মানবাজার) রাহুল পাণ্ডে। ছিলেন বিডিও (মানবাজার ১) মোনাজকুমার পাহাড়ি ও বিএমওএইচ গৌতম সোরেন। বৈঠকের পরে ইন্দকুড়ি বজরঙ্গবলী মন্দিরের কর্মকর্তা বাবলু বাউড়ি বলেন, ‘‘কয়েক জনকে নিয়ে প্রতীকী শোভাযাত্রা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” রঘুনাথপুর থানায় বৈঠকে ছিলেন এসডিপিও (রঘুনাথপুর) দুর্বার বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতির কথা বিচার করে তাঁরা শোভাযাত্রা করবেন কি না, সেই সিদ্ধান্তের ভার উদ্যোক্তাদের উপরেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।”
বৈঠকের পরে বজরঙ্গ দলের রঘুনাথপুরের সংযোজক মৃণাল গড়াই ও আদ্রার মহাবীর সেবক সঙ্ঘের গোবিন্দ বাউড়ি বলছেন, ‘‘সংক্রমণ লাগামছাড়া হতে পারে বলেই শোভাযাত্রা বন্ধ করা হচ্ছে। তবে মন্দিরে পুজো হবে। পুজোয় মাস্ক পরা ও স্যানিটাইজ়ারের ব্যবহার নিশ্চিত করার চেষ্টা করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy