Advertisement
E-Paper

বাড়ির ফাটলে বাড়ছে আতঙ্ক

বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়লা তোলার ফলে খনির আশপাশে প্রচুর বাড়িতে ফাটল ধরছে বলে অভিযোগ পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার কিছু এলাকার বাসিন্দাদের। সমস্যার খোঁজ নিল আনন্দবাজার।সম্প্রতি গ্রামগুলিতে ঘুরে বেশ কিছু বাড়িতে ফাটল চোখে পড়েছে। কোথাও দেখা গিয়েছে, খসে পড়েছে কার্নিস।

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ০৩:১৬
নিতুড়িয়ার নোয়াদা গ্রামে বাড়ির কার্নিস ভেঙে পড়েছে। নিজস্ব চিত্র।

নিতুড়িয়ার নোয়াদা গ্রামে বাড়ির কার্নিস ভেঙে পড়েছে। নিজস্ব চিত্র।

কারও দেওয়ালে ফাটল, কারও ছাদে। পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া ব্লকে ইসিএলের দুবেশ্বরী কয়লাখনি লাগোয়া গ্রামগুলিতে এমন সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

রঘুনাথপুরের তৃণমূল বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ির অভিযোগ, সড়বড়ি, কুঠিবাড়ি, নোয়াদা, কুলবনা, দুবেশ্বরী, বারুইপাড়া, আমডাঙা, বেনিপুরের মতো আট-দশটি গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। পূর্ণচন্দ্রবাবুর নিজের বাড়ি সড়বড়ি গ্রামে। ইসিএল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে কোনও কাজ হয়নি বলেও অভিযোগ তাঁর। সমস্যা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন ইসিএলের সোদপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার যোগেন্দ্রনাথ বিশওয়াল।

সম্প্রতি গ্রামগুলিতে ঘুরে বেশ কিছু বাড়িতে ফাটল চোখে পড়েছে। কোথাও দেখা গিয়েছে, খসে পড়েছে কার্নিস। নোয়াদা গ্রামে বড়সড় ফাটল রয়েছে প্রায় ছ’-সাতটি বাড়িতে। সেখানকার বাসিন্দা নেপাল বাউড়ি বলেন, ‘‘পুরনো বাড়িতে ফাটল ধরতে শুরু করায় আতঙ্কে নতুন বাড়ি তৈরি করে সপরিবার চলে এসেছি। কিন্তু এই বাড়িতেও ফাটল ধরছে।”

আনন্দগোপাল দে নামে নোয়াদার আরও এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ফাটল ধরায় অনেক টাকা খরচ করে আমূল সংস্কার করিয়েছি। কিন্তু আবার ফাটল ধরতে শুরু করেছে।’’ আবাস যোজনায় সরকারি বাড়ি পেয়েছেন ওই গ্রামের পঁচাত্তর বছরের বৃদ্ধা নিশি বাউড়ি। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ি তৈরির পরেই ফাটল ধরেছে। ভেঙে পড়লে কি আর বাড়ি করার টাকা পাব?”

কয়লাখনি এলাকায় ধস বা বাড়িতে ফাটলের সমস্যা বেশ পুরনো। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে এ ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে। সেই তালিকায় এ বার জুড়েছে লাগোয়া নিতুড়িয়ার নামও। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত কয়েকবছর আগেই বাড়িতে ফাটল ধরা শুরু হয়েছিল। ক্রমশ তা আরও বেড়েছে। গ্রামগুলির প্রান্তে চাষ জমিতে বেশ কিছু ধস হয়েছে বলেও অভিযোগ তুলছেন বিধায়ক।

ওই গ্রামগুলির বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, খনি থেকে কয়লা তোলার জন্য বিস্ফোরণ ঘটনোয় ফাটল ধরা শুরু হয়েছে। পূর্ণচন্দ্রবাবুর দাবি, ‘‘উত্তোলনের পরে ভিতরে প্রায় সত্তর-আশি ফুটের কয়লার থামগুলিও কেটে ফেলা হয়েছে। এর পরেই খনির ভিতরে বালি দিয়ে ভরাট করে দেওয়াটা নিয়ম। কিন্তু সে কাজ হয়নি।’’

নোয়াদার বাসিন্দা বিবেকানন্দ বাউড়ি বলেন, ‘‘ইসিএল কর্তৃপক্ষকে কয়েকবার সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। মাঝে এক বার তাঁরা গ্রামগুলিতে এসে দেখে গিয়েছিলেন। কিন্তু লাভ কিছুই হয়নি।’’ বিধায়ক বলেন, ‘‘ইসিএল নিজের দায়িত্ব এড়াচ্ছে। এই অবস্থায় আমরা জেলা প্রশাসনকে হস্তক্ষেপ করতে বলব।”

অভিযোগ নিয়ে সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে চাননি ইসিএল কর্তৃপক্ষ। সংস্থার সোদপুর এরিয়ার জেনারেল ম্যানেজার যোগেন্দ্রনাথ বিশওয়াল বলেন, ‘‘দুবেশ্বরী কয়লখনিতে বালি ভরাটের কাজের জন্য বরাত দেওয়া হয়েছে। কাজ চলছেও।” বিধায়কের অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

ECL Nituraia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy