Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
বর্ষায় দুর্ভোগের আশঙ্কা

ভাঙা সেতু পড়ে শালনদীতে, ক্ষোভ

সে ভেঙে পড়েছে সেই কবেই। কিন্তু প্রশাসন তার বিকল্প কোনও গতি এখনও করেনি। আসছে বর্ষায় তাই দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন এলাকার চারটি পঞ্চায়েতের মানুষ। প্রশাসনের কবে টনক নড়ে, সেই অপেক্ষাতেই তাঁরা।

বেহাল: দুই গ্রামের মাঝে সেই সেতু। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

বেহাল: দুই গ্রামের মাঝে সেই সেতু। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
ইলামবাজার শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৭ ০০:৪৯
Share: Save:

সে ভেঙে পড়েছে সেই কবেই। কিন্তু প্রশাসন তার বিকল্প কোনও গতি এখনও করেনি। আসছে বর্ষায় তাই দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন এলাকার চারটি পঞ্চায়েতের মানুষ। প্রশাসনের কবে টনক নড়ে, সেই অপেক্ষাতেই তাঁরা।

হয়রানির এই ছবি ইলামবাজারের শালনদী লাগোয়া এলাকার। যেখানে, ঠিক তিন বছর আগের এক বর্ষা ব্রাহ্মণডিহি যাওয়ার রাস্তায় গোল্টিয়া ও হাঁসড়া গ্রামের মাঝে নদীতে থাকা ভাসাপুলটি ভেঙে দিয়েছিল। তার পরেই নতুন সেতু পড়ার দাবি তুলেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেই দাবিই আজও পূরণ হয়নি। প্রশাসনের হেলদোল না থাকায় ঢের দুর্ভোগ বাকি, মত এলাকাবাসীরই।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইলামবাজারের কয়রা হয়ে পাড়ুই এবং সিউড়ি যাওয়ার প্রধান রাস্তা এটিই। ইলামবাজারের নানাশোল, ধরমপুর, মঙ্গলডিহি ও বাতিকার— এই চারটি পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামের লোকজন এই রাস্তাই ব্যবহার করেন। প্রতি দিন ইলামবাজার-সিউড়ি (ভায়া পাড়ুই) রুটের তিনটি, সিউড়ি-ইলামবাজার (ভায়া কুড়মিঠা) রুটের একটি এবং হাঁসড়া-জয়দেব রুটে একটি করে মোট পাঁচটি বাস চলাচল করে। অথচ তিন বছর আগে ভেঙে যাওয়া শাল নদীর ভাসাপুলটি নতুন করে নির্মাণ করার কোনও উদ্যোগ প্রশাসন নেয়নি। কোনও রকমে বোল্ডার মোরাম দিয়ে জোড়াতালি দেওয়া হয়েছে। ফি বছর বর্ষায় সেতু ভাঙে এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে দুর্ভোগে পড়েন এলাকাবাসী। এ বারও তার অন্যথা হবে না বলেই আশঙ্কা বাসিন্দাদের। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘শুধু সেতুর জীর্ণদশাই নয়, সেতুর পর থেকে হাঁসড়া হয়ে রাঘাইপুর পর্যন্ত রাস্তার অবস্থাও অত্যন্ত করুণ। পিচ উঠে বড় বড় গর্ত হয়ে গিয়েছিল আগেই। সেই গর্তে বোল্ডার ফেলে দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে প্রশাসন।’’ এমনকী, সম্প্রতি ওই পথে দুর্ঘটনায় পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন এক আইসিডিএস সুপারভাইজারও।

জেলার বিভিন্ন প্রান্তে এত উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। এখানে কেন হয়নি? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাজনৈতিক চাপান-উতোরেই থমকে গিয়েছে এলাকার উন্নয়ন। এলাকাবাসী মনে করিয়ে দিচ্ছেন, এটিই সেই এলাকা যেখানে মাখড়া ও চৌমণ্ডলপুর-কাণ্ড ঘটেছিল। বিজেপি ও তৃণমূলের এলাকা দখলের লড়াই ঘিরে বছরখানেক আগেও উত্তপ্ত ছিল ওই এলাকা। ঘটনার সত্যতা মানছেন এলাকার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ জাফারুল ইসলামও। তিনি বলছেন, ‘‘প্রথমত ইলামবাজার থেকে ব্রাহ্মণডিহি রাস্তাটি জেলাপরিষদের দেখভালে ছিল। যেটা জেলাপরিষদের পক্ষে রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব হচ্ছিল না। মাঝে রাস্তাটি সংস্কারের কাজে হাত পড়লেও রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য ওই অংশে ঠিকাদার লাগানো যায়নি। বর্তমানে রাস্তাটির দায়িত্বে পূর্ত দফতর। শুনেছি, দরপত্র ডাকার কাজ হয়েছে। দ্রুত কাজে হাত পড়বে।’’

কিন্তু সেতুর কী হবে?

জাফারুল জানাচ্ছেন, নতুন সেতু গড়তে বিস্তর টাকার প্রয়োজন। তাই জেলাপরিষদের তরফে রাজ্যে পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে। তবে, বর্ষায় যাতে নদীর দু’পাড়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন না হয়, তা দেখা হবে আশ্বাস জাফারুলের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Damaged bridge Agitation Shal River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE