Advertisement
১১ মে ২০২৪

মাটি ধসে কিশোরের মৃত্যু, ক্ষোভ মুরারইয়ে

এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ, নদীবাঁধ লাগোয়া এলাকা থেকে বালি তোলার জেরে দু’বছরে অন্তত তিনটি দুর্ঘটনা ঘটেছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মুরারই শেষ আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৫০
Share: Save:

বাঁধ-ঘেঁষা এলাকা থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলার ফলে নদীর পারে ধস নেমে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে, এই অভিযোগে তাতল মুরারইয়ের নন্দীগ্রাম। রবিবার নন্দীগ্রাম অঞ্চলের জগন্নাথপুর লাগোয়া বাঁশলৈ নদীর পাড় থেকে মাটি চাপা দেহ উদ্ধার হয় ঋক রাজবংশীর (১১)। বাড়ি জগন্নাথপুর গ্রামেই। বালি কারবারের জেরে নদীর পার ধসেই ওই মৃত্যু, এমনই অভিযোগ পরিবারেরও। যদিও কোথাও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।

এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ, নদীবাঁধ লাগোয়া এলাকা থেকে বালি তোলার জেরে দু’বছরে অন্তত তিনটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। আগের দুটি ঘটনায় ট্রাক্টর উল্টে দু’জন জখম হলেও এ বার সরাসরি কারও প্রাণ গেল। পুলিশ, প্রশাসন বালি কারবারিদের বিরুদ্ধে আইন মেনে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন এলাকাবাসী। তাঁদের অভিযোগ, বাঁশলৈ নদী থেকে বালি তোলা বেড়েই চলেছে। বছর দশেক আগেও এত হারে বালি তোলা হত না।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, বালি কারবারের দৌরাত্ম্যে বাঁশলৈ নদী পাড়ের জগন্নাথপুর, পাঁচগেছিয়া ও পলশা— এই তিনটি গ্রামের শ্মশানের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়েছে অনেক আগেই। সম্প্রতি বালি মাফিয়ারা নদীপাড়ের নীচের অংশ থেকে বালি তোলার ফলে বাঁধের নীচের অংশ ঝুলন্ত অবস্থায় থাকছে। তাঁরা আরও জানাচ্ছেন, জগন্নাথপুর এলাকা থেকে অবৈধ ভাবে বালি কারবারের সঙ্গে মুরারই থানার আবদুল্লাপুর, মাকুয়া— এই দুটি গ্রামের ট্রাক্টর ব্যবসায়ী অধিকাংশ জড়িত। বছর দু’য়েক আগে একটি ট্রাক্টর নদী বাঁধে উল্টে গেলে দু’জন গুরুতর জখম হন। তারপর গেল প্রাণও। পরিবার সূত্রের খবর, ঋক স্থানীয় আবদুল্লাপুর জুনিয়র হাইস্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। পেশায় জেলে বাণেশ্বর রাজবংশীর চার ছেলেমেয়ের সবথেকে ছোট সে। ঋকের জেঠা সত্যনারায়ণ রাজবংশী জানান, জলখাবার খেয়ে সকালে বাড়ি থেকে দু’কিলোমিটার দূরের মাঠে গরু চড়াতে গিয়েছিল ভাইপো। বিকেল চারটে নাগাদ বাড়িতে গরু ফিরে এলেও ফেরেনি দেখে বাড়ির লোকজন খোঁজখবর শুরু করেন। নদীর চরে ফের একটি ধস নেমেছে দেখে খুঁজতে বের হওয়া লোকজনের সন্দেহ হয়। প্রায় ১০ মিটার চওড়া ও ১১ ফুট উচ্চতার সেই ধসের মাটি কোদাল দিয়ে সরাতেই ঋকের মাথা দেখতে পাওয়া যায়। দেহ উদ্ধার হতেই তৈরি হয় ক্ষোভ। পুলিশ এসে দেহ থানায় নিয়ে যায়। মুরারই ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জাবির আলি বিষয়টি খোঁজ নেবেন বলে জানিয়েছেন।

এ ভাবে আর কত দিন? সেচ দফতরের নলহাটি মহকুমা সহকারী বাস্তুকার সুকান্ত দাস বলেন, ‘‘বালির বিষয়টা আমাদের এক্তিয়ারের বাইরে। তবে নদীবাঁধের ক্ষতির বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Teenager
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE