একজন গ্রেফতার হয়েছেন, আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগ । অন্যজন গ্রেফতার হলেন, মাদক কারবারের জড়িত থাকার অভিযোগে। আব্দুর রহমান ও উজ্জ্বল হক কাদেরি— খয়রাশোলের যুযুধান দুই নেতার গ্রেফতারির পিছনে প্রকৃত কারণ কী তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। দলের অন্দেরই অনেকেই মনে করছেন, উঁচুতলা বার্তা দিতে চেয়ে যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে আর অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। আব্দুরের সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছেন তাঁরই এক অনুগামী শেখ পলাশ ওরফে আমিনুল।
খয়রাশোলের মানুষ শাসকদলের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল গত লোকসভা নির্বাচনে। স্থানীয়দের একাংশের মতে, তৃণমূলের যুযুধান দুই গোষ্ঠীর মধ্যে নিত্য লড়াই ও অশান্তি ছিল এর অন্যতম কারণ। সংগঠন মজবুত করার চেষ্টা হলেও পরিস্থিতি যে খুব একটা বদলায়নি তা শুক্রবার বাবুইজোড় গ্রামে পঞ্চায়েত বোমা, গুলির লড়াই, ভাঙচুরের ঘটনায় ফের সামনে এনেছে।
অবৈধ ভাবে কয়লা উত্তোলন, পাচার, দু’টি খোলামুখ কয়লাখনির নিয়ন্ত্রণ— এ সবের দখল কার হাতে থাকবে, তা নিয়েই নিত্য লড়াই চলে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বালি করাবার ও পঞ্চায়েত পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যেমে সরকারি প্রকল্পের টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে এলাকা দখলের লড়াই। সে জন্য বোমাবাজি, খুন রক্তপাত লেগেই আছে। গত আট বছরে এলাকায় কমপক্ষে ১০টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। তাঁদের মধ্যে তিন ব্লক সভাপতি রয়েছেন। গত কয়েক বছরে শুধু খয়রাশোলেই ৭টি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। সেই পরিস্থিতি শোধরাতে চাইছে দল।
পুলিশের দাবি, ১২ সালে আব্দুর রহামানের দাদা আনিসুর রহমান ও উজ্জ্বল হক কাদেরির ভাই শেখ বুড়ো একদিনে খুন হওয়ার পর তাঁরা একে অপরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পুষে রেখেছেন। খুন বোমাবাজি, সশস্ত্র হামলার ইন্ধন জোগানো-সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে থাকার অভিযোগ উঠে এসেছে দু’জনের বিরুদ্ধেই। বিরোধীদের ক্ষোভ, শাসক দলের ছত্রছায়ায় থাকায় সবক্ষেত্রে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেনি পুলিশ। বাবুইজোড় পঞ্চায়েতকে এককভাবে দখল করে রাখা নিয়ে ফের উভয়ের সংঘাতে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অনেকের দাবি, শুক্রবারের ঘটনা দলের উঁচুতলা বরদাস্ত করেনি বলেই তাঁদের ধরা হয়েছে। শাসক দলের নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, পুলিশ আইন মেনে যা করার করেছে। এর সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক েনই।
ধৃত দু’জনেই অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁদের মিথ্যা ফাঁসানো হয়েছে। পেশায় শিক্ষক দুই নেতাকে শিক্ষক দিবসের দিন, শনিবারই সিউড়ি আদালতে তুলে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।