Advertisement
E-Paper

হাতে মোবাইল, কমেছে গ্রিটিংসের বিক্রি

মোবাইল এসে চিঠির জায়গা কবেই কেড়ে নিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার রমরমা বাজারে কোণঠাসা গ্রিটিংস কার্ডও। বছর দু’য়েক আগেও ইংরেজি নববর্ষের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই বইখাতার দোকানগুলিতে গ্রিটিংস কার্ড বিক্রি শুরু হয়ে যেত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:০৭
গ্রিটিংস কার্ডের পসরা সাজিয়ে বোলপুরে। কিন্তু, ক্রেতা মেলা ভার। ছবি: দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

গ্রিটিংস কার্ডের পসরা সাজিয়ে বোলপুরে। কিন্তু, ক্রেতা মেলা ভার। ছবি: দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

মোবাইল এসে চিঠির জায়গা কবেই কেড়ে নিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ার রমরমা বাজারে কোণঠাসা গ্রিটিংস কার্ডও। বছর দু’য়েক আগেও ইংরেজি নববর্ষের কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই বইখাতার দোকানগুলিতে গ্রিটিংস কার্ড বিক্রি শুরু হয়ে যেত। এখন বোলপুরের গুটিকয়েক দোকানেই গ্রিটিংস কার্ড মেলে। তাও আবার নতুনত্ব প্রায় নেই বললেই চলে। কয়েক বছরে গ্রিটিংস কার্ডের চাহিদা অনেক কমেও গিয়েছে। দাম বেড়ে যাওয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার রমরমা— জোড়া কারণে এমনটা হয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

বোলপুর কলেজ রোডে দোকান ইউনেস খানের। তিনি জানালেন, ২৪ বছর ধরে গ্রিটিংস কার্ড বিক্রি করছেন। গত বছর যেটুকু বিক্রি হয়েছিল, এ বছর সেই পরিমাণ গ্রিটিংস কার্ড সোমবার পর্যন্তও বিক্রি হয়নি। এই রাস্তা দিয়েই একটি কলেজ, প্রাথমিক, উচ্চ মাধ্যমিক মিলে চারটি স্কুল রয়েছে। স্কুল, কলেজের পড়ুয়াদের নিত্য যাতায়াত এই রাস্তা দিয়ে। তাই কার্ড বিক্রি হওয়ার আশায় আগের মতোই সুন্দর করে কার্ড দিয়ে দোকান সাজিয়েছেন। কিন্তু, আগের মতো বিক্রি না হওয়ায় মন খারাপ। দু’টাকা থেকে শুরু করে ১৫০ টাকা পর্যন্ত দামের গ্রিটিংস কার্ড পাওয়া যাচ্ছে তাঁর কাছে।

কয়েক বছর আগেও পৌষমেলায় প্রচুর গ্রিটিংস কার্ড পাওয়া যেত। এক সঙ্গে অনেকগুলো কিনলে দামে ছাড়ও পাওয়া যেত। কলাভবন কিংবা বিশ্বভারতীর অন্য ভবনের পড়ুয়ারাও নিজেদের হাতে তৈরি কার্ড বিক্রি করতেন। পৌষমেলা থেকেও কার্ড বিক্রি প্রায় হারিয়ে গিয়েছে। কারণ একটাই, আগের মতো বিক্রি নেই। গ্রিটিংস কার্ডের প্রতি আকর্ষণও কমে গিয়েছে। হাতে তৈরি কার্ড খুব কম পরিমাণে বিক্রি হয়েছে এ বারের মেলায়।

বোলপুরের কয়েকটা দোকানে কার্ড সাজানো না থাকলেও, খোঁজ করলে সেখানে গ্রিটিংস কার্ড পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রি নেই তাই আলাদা করে সাজানো, দিনের শেষে আবার খুলে ঠিক করে রাখা— এত কিছু করার উৎসাহ হারিয়েছেন বিক্রেতারা। সোমবার মেয়ের জন্য কার্ড কিনতে আসা এক মাঝবয়সী মহিলা বললেন, ‘‘মেয়ে কার্ড কিনবেই। আমিও খুঁজে বেড়াচ্ছি। আমরা যখন স্কুলে পড়তাম, এই সময়টাতে গ্রিটিংস কার্ডেই স্কুলের পাশের দোকানগুলো ভর্তি হয়ে যেত। অন্য জিনিস কিনতে গেলে তাঁরা বেশ বিরক্ত হতেন। এখন তো কার্ড খুঁজতে হচ্ছে হন্যে হয়ে। সত্যিই অনেক কিছু বদলে গিয়েছে।’’

এক সময় নিজেদের হাতে কার্ড বানিয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে তৈরি কার্ড কিনতে পাওয়া, তার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘উইশ’ করার চক্করে সেই কার্ডও হারিয়ে যেতে বসেছে বাজার থেকে। কেউ কেউ মনে করেন, বিশেষ কাউকে দেওয়ার জন্য কার্ডের গুরুত্ব আছে ঠিকই।

এই সময়ে গ্রিটিংস কার্ডের সঙ্গেই আগে ডায়েরি কেনারও চল ছিল। বাজার থেকে হারিয়ে না গেলেও ডায়েরির বিক্রিও আগের তুলনায় কমেছে। বেশি দামের ডায়েরি তো বিক্রিই হয় না বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। তবে ডায়েরির মাঝে প্রকৃতি, দেবদেবী, সৌধের ছবি সহ নতুন কিছু বিষয় দেওয়ার ফলে সেগুলির চাহিদা রয়েছে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা। ইংরেজি নববর্ষের মরসুমে তাই বিভিন্ন দামের ডায়েরি মিলছে বোলপুরের দোকানগুলিতে।

Greetings Card New Year
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy