E-Paper

ভুয়ো শিক্ষক ধরতে অভিযান মাদ্রাসায়

রাজ্যের একাধিক মাদ্রাসার বিরুদ্ধে রাজ্য সংখ্যালঘু বোর্ড ও রাজ্য সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছিল।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায় 

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৫ ০৯:২০
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

মাদ্রাসায় ভুতুড়ে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে মাড়গ্রাম হাই মাদ্রাসায় তদন্তে অভিযান চালালেন রাজ্য সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের সচিব পি বি সালিম। বুধবার দুপুরে ওই অভিযানে রাজ্য মাদ্রাসা বোর্ডের সভাপতি-সহ জেলাশাসক, জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের অন্য আধিকারিকেরা সঙ্গে ছিলেন।

মাড়গ্রাম হাই মাদ্রাসায় ১১ জন শিক্ষক এবং ৪ জন নিক্ষাকর্মী মিলিয়ে মোট ১৫ জন ভুয়ো ভাবে নিযুক্ত বলে অভিযোগ। তাঁদের স্কুলের ভিতরে প্রবেশ করতে জেলা প্রশাসন থেকে মানা করা হয়েছে। পুলিশ এ দিন অবৈধ ভাবে নিযুক্ত ৭ জনকে স্কুল থেকে বের করে দেয়।

রাজ্যের একাধিক মাদ্রাসার বিরুদ্ধে রাজ্য সংখ্যালঘু বোর্ড ও রাজ্য সংখ্যালঘু বিষয়ক ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মাড়গ্রাম হাই মাদ্রাসায় বুধবার অভিযানে আসেন পি বি সালিম-সহ অন্যরা। বুধবার স্কুলের প্রধান শিক্ষক গোলাম মহম্মদ স্কুলে আসেননি। ফোনে বেজে গেলেও ফোন ধরেননি।

স্কুলের টিচার ইন চার্জ গোপালচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘তাঁরা ভুয়ো শিক্ষক কি না আমার জানা নেই। আমার কাছে কোনও কাগজপত্র নেই। যা কিছু প্রধানশিক্ষকের হেফাজতে আছে। প্রধানশিক্ষক গতকাল রাতে স্কুলে আসবেন না বলে জানিয়েছিলেন।’’ স্কুল সূত্রে খবর, যাঁদের ভুয়ো বলা হচ্ছে তাঁরা ২০১৯ সালে স্কুলে নিযুক্ত হয়েছিল। কিছুদিন স্কুলে ক্লাসও নিয়েছিলেন। পরে বিভিন্ন মামলার জেরে আর স্কুলে আসেননি।

২ জুন আবার স্কুলে আসলেও কোনও ক্লাস নেননি ওই ‘বিতর্কিত’ শিক্ষকেরা। প্রধানশিক্ষকও তাদের কোনও ক্লাস রুটিন করে দেননি। তারপর থেকে কয়েকজন এলেও স্কুলে শুধু বসে থাকতেন। জেলাশাসাক বিধান রায় বলেন, ‘‘বাইরে থেকে কিছু লোক স্কুলের শিক্ষক বলে আসে। তাদের কাছে আজকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হয়। তারা দেখাতে পারেনি। সে কারণে তাদেরকে স্কুলে ঢুকতে মানা করা হয়েছে।’’ পি বি সালিম অভিযান শেষে স্কুল থেকে বেরিয়ে অভিভাবকদের বলেন, ‘‘এই সমস্ত ভুয়ো শিক্ষকদের স্কুলে ঢুকতে দেবেন না। স্কুল আপনাদের সম্পত্তি। তাকে রক্ষা করতে হবে আপনাদের।’’

জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সুজিত সামন্ত জানান, ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট এই সমস্ত নিয়োগ বাতিল করেছিল। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষা দফতরেও অভিযোগ জমা পড়ে। সেই মতো তদন্ত করে প্রশাসন থেকে তাদের ভুয়ো শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী হিসাবে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের বীরভূম জেলা মাদ্রাসা শিক্ষক সেলা জেলা সভাপতি মহম্মদ ফজলে মৌলা খান বলেন, ‘‘ভুয়ো নিয়োগ নিয়ে একাধিকবার স্কুল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছিল। জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর ও মাদ্রাসা বোর্ড এবং সংখ্যালঘু দফতরেও জানানো হয়েছে। আজকে প্রশাসন যে ব্যবস্থা নিয়েছে তাতে আমরা খুশি।’’

নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির রাজ্য কমিটির সদস্য সৌগত রায়ের দাবি, ‘‘শাসক দলের মদতে ২০১৫ সালে এ ভাবে অবৈধ নিয়োগ করা হয়েছে। আমরা জেলা শিক্ষা দফতর-সহ অন্য প্রশাসনিক দফতরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছি। ফলে প্রশাসন ভুয়োদের স্কুল থেকে বিতাড়িত করতে বাধ্য হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

madrasah

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy