Advertisement
E-Paper

হাসপাতালেই কাউন্সিলরের ‘গ্যারাজ’, প্রশ্ন

গাড়িটি যে তাঁর, সে কথা মেনে নিয়েছেন শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর উদয় ভকত। তিনি বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্যও বটে। হাসপাতাল চত্বরে অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করে রীতিমতো নিজস্ব গ্যারাজ বানিয়ে ফেলেছেন তিনি।

শুভ্র মিত্র

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০৭:১০

হাসপাতাল চত্বরে রাখা কাউন্সিলরের গাড়ি। গাড়ির সামনে বাঁধা তৃণমূলের পতাকা। বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতাল চত্বরে, খোদ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসের পিছনে এই দৃশ্য অনেক দিন ধরে দেখা যাচ্ছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছন তাঁরা।

গাড়িটি যে তাঁর, সে কথা মেনে নিয়েছেন শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর উদয় ভকত। তিনি বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্যও বটে। হাসপাতাল চত্বরে অস্থায়ী কাঠামো তৈরি করে রীতিমতো নিজস্ব গ্যারাজ বানিয়ে ফেলেছেন তিনি। বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেন্দ্রনাথ প্রামানিক বলেন, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে জবরদখল হঠাতে গিয়ে আমরা এমনিতেই হিমশিম খাচ্ছি। হাসপাতালে ঢোকা আর বেরনোর রাস্তা চওড়া করা যাচ্ছে না। তার উপরে যদি কাউন্সিলরই এই কাজ করেন কী আর বলব বলুন?’’ তাঁর দাবি, ২০১৫ সালে দায়িত্ব পেয়ে বিষ্ণুপুরে আসার পর থেকেই অফিসের পিছনে সরকারি জায়গায় ওই গাড়িটি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখছেন তিনি। রমেন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের সুপারকে বলেছি, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে। উনি কী করেন দেখি।’’

বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতালের সুপার তথা সহকারি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পৃথ্বীশ আকুলি বলেন, ‘‘বহু বার মৌখিক ভাবে বলেছি। উনি কান দেননি। উনি তো আমাদের রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্য। জমি বেদখল হওয়ার সমস্যা ভাল ভাবেই জানেন। তার পরেও আর কতবার বলব?’’

যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের সেই কাউন্সিলর উদয় ভকত বৃহস্পতিবার নিজের কার্যালয়ে বসে বলেন, ‘‘ভুল হয়ে গিয়েছে। অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে রেখেছি। যদি কেউ এক বারও বলতেন, আমি সরিয়ে নিতাম। কেউ আমাকে কিছু বলেনি।’’ যদি না-ই বলে থাকেন, সেটা কি গাড়ির সামনে বেঁধে রাখা শাসক দলের পতাকা দেখে? উদয়বাবু বলেন, ‘‘একেবারেই না! আমি ব্লক যুব সভাপতি। বিষ্ণুপুর দ্বারিকা শিল্পাঞ্চলের কার্যকরী সভাপতিও। গ্রামে গ্রামে কর্মীদের সঙ্গে গিয়ে কথা বলতে হয়। সংগঠনের কাজে যেতে হয় বলেই পতাকাটা রাখি।’’

বিরোধীরা অবশ্য এই ব্যাপারে শাসক দলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না। বিজেপি-র বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি স্বপন ঘোষ বলেন, ‘‘সরকারি জায়গাকে তৃণমূল নেতারা নিজেদের সম্পত্তি বলেই ভাবেন।’’ সিপিএমের বিষ্ণুপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক বিশ্বজিৎ ঘোষের মন্তব্য, ‘‘ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তৃণমূলের নেতারা কোনটা দল আর কোনটা সরকারের জায়গা সেটা আলাদা করতে পারছেন না।’’ এই ব্যাপারে শহর তৃণমূল সভাপতি তথা বিষ্ণুপুরের উপপুরপ্রধান বুদ্ধদেব মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘সরকারি জায়গায় গাড়ি না রাখলেই ভাল করতেন। তবে ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন এটা ভাল ব্যাপার।’’

Garage Hospital বিষ্ণুপুর জেলা হাসপাতাল Councillor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy