কাজের সুবিধার্থে এই দফতরগুলি যাতে কাছাকাছি থাকে, সে জন্য ঝালদার কিসান মান্ডির কাছে প্রায় ১০ একর জমি প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানেই মহকুমা আদালত-সহ সমস্ত প্রশাসনিক ভবন গড়ে তোলার ভাবনা রয়েছে। জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বলেন, ‘‘ওই জমি ঘেরার জন্য পূর্ত দফতর ইতিমধ্যেই ১ কোটি ২৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। পূর্ত দফতরকে আদালত-সহ বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ের নির্মাণ সংক্রান্ত নকশা তৈরি করতে বলা হয়েছে। পূর্ত দফতর তা জমা দিলেই আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেব।’’ অর্থের জোগানের কোনও সমস্যা হবে না বলেই মত জেলাশাসকের।
মহকুমাশাসক (ঝালদা) সন্দীপ টুডু বলেন, ‘‘মহকুমায় যে দফতরগুলি থাকবে, সেই দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে শীঘ্রই বৈঠক করে তাঁদের কত জায়গার প্রয়োজন, কত কর্মী কাজ করবেন, সে সব জানতে চাওয়া হবে। তাতে একটা আন্দাজ পাওয়ার পরেই পূর্ত দফতরের সঙ্গে বসে এখানে একটি বহুতলে কতগুলি অফিস করা যেতে পারে, তা ঠিক করা হবে।’’ তিনি জানান, এ ছাড়া নির্বাচন দফতরের কাজকর্মের গুদাম, ত্রাণ সামগ্রী মজুতের গুদাম, সরকারি প্রেক্ষাগৃহও গড়ে উঠবে ঝালদায়।
সন্দীপবাবু জানিয়েছেন, তাঁরা ঝালদা শহরের মধ্যে জমি পেলে সেখানেই প্রেক্ষাগৃহ গড়তে চান। জমি না পাওয়া গেলে তখন প্রশাসনিক দফতরগুলির কাছেই প্রেক্ষাগৃহ গড়ে তোলা যেতে পারে। প্রেক্ষাগৃহের বাইরে মুক্তমঞ্চ ও ফাঁকা জমিও রাখতে চাইছেন তাঁরা। প্রয়োজনে ওই জমিতে মেলা ও প্রদর্শনী করা যেতে পারে।
সরকারি কর্মীদের আবাসনের জন্য মহকুমাশাসকের প্রস্তাবিত অফিস কিংবা ঝালদা রেল স্টেশনের কাছে থাকা একটি খাস জমির কথা ভাবা হচ্ছে। তবে এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
ঝালদা পূর্ণাঙ্গ মহকুমা শহর হিসেবে গড়ে উঠলে পানীয় জলের সমস্যাও বৃদ্ধি পাবে বলে মানছেন প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ। বর্তমানে মুরগুমা জলাধারের জল এনে এই পুরশহরকে পান করানো হয়। কিন্তু শুধু মুরগুমার ভরসায় ভবিষ্যতের ঝালদার তৃষ্ণা মিটবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কারণ ওই প্রকল্প মাঝে মধ্যেই অচল হয়ে নির্জলা হয়ে পড়ে গোটা শহর। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘তুলিনের পাশ দিয়ে হয়ে যাওয়া সুবর্ণরেখা নদী থেকে ঝালদায় জল নিয়ে আসার পথ খোলা রয়েছে। এটা ভাবা যেতে পারে।’’
পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘‘এই এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দ্রুত ঝালদাকে পূর্ণাঙ্গ মহকুমা শহর হিসেবে গড়ে তোলা প্রয়োজন। আমরা সেই চেষ্টা করছি। আগামী দেড় থেকে দু’বছরের মধ্যে পরিকাঠামো অনেকটাই গড়ে উঠবে।’’