Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বধূ খুনের নালিশ, ধৃত

তাঁদের ১৪ দিনের জেল হাজত হয়েছে। পুলিশ আরও দুই অভিযুক্তের খোঁজ করছে বলে জানিয়েছে।

অর্চনা মালিক।

অর্চনা মালিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোতুলপুর শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৮ ০০:২৮
Share: Save:

দাবি মতো টাকা না দেওয়ায় শ্বশুরবাড়িতে এক বধূকে মেরে গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল কোতুলপুরের গোপীনাথপুরে। মৃতের নাম অর্চনা মালিক (২৩)। তাঁর বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তরুণীর স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার বিষ্ণুপুর আদালতে পাঠায়। তাঁদের ১৪ দিনের জেল হাজত হয়েছে। পুলিশ আরও দুই অভিযুক্তের খোঁজ করছে বলে জানিয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুরে ওই বধূর মৃত্যু হয়। সেই সন্ধ্যায় তাঁর বাবা জয়পুর থানার কারকবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মহাদেব বাগ কোতুলপুর থানায় চার জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল সম্বন্ধ করে গোপীনাথপুরের বাসিন্দা সান্টু মালিকের সঙ্গে অর্চনার বিয়ে দেন। তাঁর দাবি, লক্ষাধিক টাকা খরচ করে বিয়ে দিয়েছিলেন। পাত্রপক্ষের দাবি মতো সোনার গয়না, আসবাসপত্রও দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই নানা অজুহাতে তাঁর মেয়েকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আসতে চাপ দেওয়া হতো। দাবি মতো টাকা না দিতে পারলে মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক
নির্যাতন চলত।

মহাদেববাবুর অভিযোগ, এ বছর আলুর দাম ভাল পাওয়ায় অচর্নাকে বাপের বাড়ি থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে আসতে চাপ দিয়েছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এরই মধ্যে মঙ্গলবার সকালে গোপীনাথপুর এলাকা থেকে এক ব্যক্তি ফোন করে খবর দেন, অর্চনার শ্বশুরবাড়িতে ঝামেলা হচ্ছে। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, বাড়ি ফাঁকা। প্রতিবেশীদের কাছে তাঁরা জানতে পারেন, অর্চনাকে গোগড়া গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন মেয়ের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। মহাদেববাবুর অভিযোগ, জামাই তাঁদের জানান, অর্চনা গলায় দড়ি দিয়েছেন। কিন্তু জামাইয়ের আচরণে তাঁদের সন্দেহ হয়। থানায় কেন খবর দেওয়া হয়নি, এ সব প্রশ্ন তুলে চেপে ধরেন তাঁরা। বেগতিক দেখে তাঁর জামাই সেখান থেকে পালান।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অর্চনা ও সান্টুর একটি তিন বছরের মেয়ে আছে। মঙ্গলবার সেই মেয়েটি রান্না ঘরে গিয়ে গুঁড়োলঙ্কা নিয়ে খেলছিল দেখে অর্চনা তাকে শাসন করে। তা নিয়ে স্বামীর সঙ্গে অর্চনার ঝগড়া বাধে। তারই মধ্যে এই কাণ্ড।

অর্চনার বাবার দাবি, ‘‘মেয়ের শরীরে অনেক আঘাতের চিহ্ন থাকলেও গলায় দড়ির দাগ ছিল না। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস মেয়েকে মারধর করে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার গল্প ফাঁদা হচ্ছে। আমরা চার জনের নামে কোতুলপুর থানায় খুনের অভিযোগ করেছি। আমাদের আশা, তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তি দেবে প্রশাসন।’’

কোতুলপুর থানা জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে মৃতের স্বামী সান্টু মালিক এবং শ্বশুর ভজহরি মালিককে বুধবার গ্রেফতার করা হয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে বধূর দেহের ময়না-তদন্ত করা হয়। বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।’’ যদিও বিষ্ণুপুর আদালতে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী উজ্জ্বল চন্দ্র দাবি করেন, ‘‘আমার মক্কেলদের চক্রান্ত করে ফাঁসানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Woman Wife
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE