এক বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় নির্যাতনের দায়ে স্বামীকে দু’বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল বোলপুর আদালত।
শনিবার এই সাজা শুনিয়েছেন সহকারী দায়রা বিচারক অরুণকুমার রাই। সরকারি আইনজীবী তপনকুমার দাস বলেন, “ওই মামলায় বৃহস্পতিবারই বিচারক অভিযুক্তকে দোষী সব্যস্ত করেছিলেন। এ দিন ওই সাজার পাশাপাশি দোষী ব্যক্তির ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছ’মাস সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশও দিয়েছেন।’’ উপযুক্ত সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে বাকি দুই অভিযুক্ত, মৃত বধূর শ্বশুর ও শাশুড়িকে বেকসুর খালাস করেছে আদালত।
সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, ২০১৩ সালের নভেম্বরে নানুর থানার বালিশ্বর গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জন দাসের মেয়ে লক্ষ্মীর সঙ্গে লাভপুর থানার গোপালপুরের বাসিন্দা লাড্ডু দাসের ছেলে বাচ্চু দাসের বিয়ে হয়েছিল। অভিযোগ, বিয়ের কিছু দিন পর থেকেই পণের দাবিতে শ্বশুরবাড়িতে লক্ষ্মীর উপরে অত্যাচার শুরু হয়। এমনকী, স্বামী তাঁকে মারধরও করত বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ জুলাই শ্বশুরবাড়িতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় লক্ষ্মীর। লাভপুর থানায় মেয়ের স্বামী বাচ্চু দাস, শ্বশুর লাড্ডু দাস ও শাশুড়ি মিনা দাসের বিরুদ্ধে খুন ও বধূ নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর বাবা রঞ্জন দাস। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৬ (আত্মহত্যায় প্ররোচনা) ও ৪৯৮ক ধারা (বধূ নির্যাতন) প্রয়োগ করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় বাচ্চুকে। আদালতে আগাম জামিন নেন মৃতের শ্বশুর ও শাশুড়ি। বেশ কিছু দিন জেল হাজতে থাকার পরে জামিন পান বাচ্চুও। গত ১৫ অক্টোবর তিন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। গত ৪ এপ্রিল তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জ গঠিত হয়। ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত চলে সাক্ষ্যগ্রহণ। ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসক তাপসকুমার ঘোষ, নিহতের পরিজন-সহ মোট ৯ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত। তপনবাবু বলেন, ‘‘বাচ্চুর বিরুদ্ধে সন্দেহাতীত ভাবে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তবে, আত্মহত্যায় প্ররোচণা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণ করা যায়নি।’’ নিম্ন আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁর মক্কেল উচ্চ আদালতে আর্জি জানাবেন বলে জানিয়েছেন বাচ্চুর আইনজীবী মহম্মদ শামসুজ্জোহা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy